শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র
আর কয়েক দিন বাদেই উপ-নির্বাচন খড়্গপুর সদরে। খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের খাসতালুক রেলশহর। লোকসভা ভোটে ৪৫ হাজার ভোটে এগিয়ে থাকা বিজেপি-র এই কেন্দ্রে তৃণমূলের সামনে কঠিন লড়াই। এই পরিস্থিতিতেও দলের সকলে ভোটের কাজে সমান মনোযোগী নয় বলে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
খড়্গপুরে এখনও দলের একাংশ কর্মী কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন বলে ক্ষুব্ধ শুভেন্দু। দলের অন্দরে তাঁর স্পষ্ট বার্তা, সব ওয়ার্ডে ‘লিড’ চাই। আগামী শনিবার ফের খড়্গপুরে আসবেন শুভেন্দু। ওই দিন দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করার কথা রয়েছে তাঁর।
দলের এক সূত্রে খবর, তাঁর নজর যে সব দিকে রয়েছে, একাংশ কর্মী যে এখনও কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন, দলীয় প্রার্থীর মনোনয়নপর্ব শেষের পরে দলের অন্দরে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন শুভেন্দু। কেমন? খড়্গপুর ‘পুনর্দখলে’ ওয়ার্ড ভিত্তিক দলীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছেন শুভেন্দু। তাঁর নির্দেশে পর্যবেক্ষকদের নিয়ে হোয়াটসঅ্যাপে একটি গ্রুপও খোলা হয়েছে। দলের এক সূত্রে খবর, মনোনয়নপর্ব শেষের পরে দলীয় পর্যবেক্ষকেরা ওই গ্রুপে তাঁদের মতামত জানিয়েছেন। মনোনয়নের মিছিলে ওয়ার্ড থেকে কে কত কর্মী- সমর্থক এনেছেন, তাও জানিয়েছেন। সব দেখে ওই গ্রুপে পরে শুভেন্দু জানিয়েছেন, কয়েকজন কাজে ফাঁকি দিয়েছেন। শুভেন্দু লিখেছেন, ‘কয়েকজন একটু ফাঁকি দিয়েছেন।’ সোমবার সার্বিক ভাবে মনোনয়নের মিছিল ‘ভাল’ হওয়ার জন্য অবশ্য দলের কর্মীদের ধন্যবাদও দিয়েছেন শুভেন্দু। গ্রুপে তিনি লিখেছেন, ‘থ্যাঙ্কস টু অল’।
পরে তাঁর বার্তা, ‘সব ওয়ার্ডে লিড চাই।' প্রস্তুতি হিসেবে ভোটার তালিকায় চোখ বুলিয়ে রাখারও নির্দেশ দিয়েছেন শুভেন্দু। দলের এক সূত্রে খবর, প্রচারে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশ দেবেন শুভেন্দু। সেই জন্যই কর্মীদের ভোটার তালিকায় চোখ বুলিয়ে রাখতে বলেছেন তিনি। গ্রুপে শুভেন্দু এও জানিয়েছেন, 'আমার পরের কর্মসূচি ৯ তারিখে। ওই দিন বসব।’ বস্তুত, লোকসভা নির্বাচনে ‘বিপর্যয়ে’র পরে খড়্গপুর ‘পুনর্দখলে’ দলের সংগঠন ঢেলে সাজার কাজ শুরু করেন শুভেন্দু। ওয়ার্ড ভিত্তিক দলীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেন তিনি। দলের অন্দরে তাঁর বার্তা ছিল, ‘‘সাংগঠনিক ত্রুটি ছিল। তাই লোকসভায় খড়্গপুরে প্রত্যাশিত ফল হয়নি। সংগঠন শক্তিশালী হলে নিশ্চিত ভাবে ভাল ফল হবে।’’
শুভেন্দুর নির্দেশে দলীয় পর্যবেক্ষকেরা এই সময়ের মধ্যে বারবার ওয়ার্ডে গিয়েছেন। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন। কিছু সমস্যার সমাধানও করেছেন। শুরুর দিকে ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে কার্যত ‘নীরবই’ ছিলেন শুভেন্দু। সব দেখতেন (সিন করতেন)। তবে নিজে কোনও মন্তব্য করতেন না। পরে পরে অবশ্য গ্রুপে খানিক ‘সরব’ হয়েছেন তিনি। এক ওয়ার্ড পর্যবেক্ষকের দাবি, ‘‘শুভেন্দুদা সব দেখেন। তবে সব ক্ষেত্রে মন্তব্য করেন না। যে ক্ষেত্রে মন্তব্য করার শুধু সেই ক্ষেত্রেই করেন।’’ তিনি জানাচ্ছেন, দলের প্রার্থী ঘোষণার আগে এক ওয়ার্ড পর্যবেক্ষক গ্রুপে জানতে চেয়েছিলেন, প্রার্থী কে হবে জানা গিয়েছে? জবাবে অন্য এক ওয়ার্ড পর্যবেক্ষকের মন্তব্য ছিল, ‘‘প্রার্থী একজনই। ২৯৪টি কেন্দ্রে আমাদের প্রার্থী একজনই। বাংলার অগ্নিকন্যা, বাংলার মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’’ সে দিন শুভেন্দু অবশ্য এ নিয়ে গ্রুপে কোনও মন্তব্য করেননি।
লোকসভায় বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা খড়্গপুরে কি এ বার তৃণমূলের জেতা সম্ভব?
সাংসদ মানস ভুঁইয়া বলেন, ‘‘দীর্ঘ চার মাস ধরে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে আমাদের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। সিপিএম, কংগ্রেসের অশুভ আঁতাত হয়েছে খড়্গপুরে। তেল আর জল একসঙ্গে মেশে? আমার স্থির বিশ্বাস, প্রদীপ সরকার জিতবেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘লোকসভায় সিপিএম তাদের ভোট বিজেপিকে বিক্রি করে দিয়েছিল!' তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও বলেন, ‘‘শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কর্মীরা খড়্গপুরে কাজ করছেন। খড়্গপুরে এ বার আমরা জিতবই।’’ বিজেপির জেলা সভাপতি শমিত দাশের দাবি, ‘‘খড়্গপুরে বিজেপির জয় শুধুই সময়ের অপেক্ষা। খড়্গপুরের মানুষ বিজেপির সঙ্গেই আছেন, থাকবেনও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy