শুভেন্দু অধিকারী। ফাইল চিত্র।
দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে হামেশাই তোপ দাগতে শোনা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীকে। তবে সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন কর্মসূচি থেকে তৃণমূলের একাধিক জেলা নেতার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগের অস্ত্র শানাচ্ছেন তিনি। ‘অভিযুক্ত’ ওই সব নেতা শুভেন্দু তৃণমূলের থাকাকালীন তাঁর ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, চাপে রাখতেই এঁদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা।
বিজেপির ‘নবান্ন অভিযানে’র দিন তমলুকের সোনাপেত্যা টোলপ্লাজার কাছে রঘুনাথপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তারক জানাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল। ঘটনায় ১০ বিজেপি কর্মীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে দিন তিনেক আগে শুভেন্দু মিছিল এবং পথসভা করেন। ওই দিনই জেলা পরিষদের মৎস্য-প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরার নাম করে শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘এক বড় নেতা সোমনাথ, কত কোটি যে তুলেছেন, তা হিসাবের বাইরে।’’ এক দিন আগে নন্দকুমারের কড়ক গ্রামে বিজেপি আয়োজিত রক্তদান শিবিরে এসে শুভেন্দু নাম না করে নিশানা করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে। কলকাতায় এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ১৭ কোটি টাকা উদ্ধার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, একশো দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা চুরি করে নন্দকুমারের কল্যাণপুর এলাকায় তৃণমূলের অফিস তৈরি করা হয়েছে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখানেই দেখবেন রাস্তার পাশে ১০ লক্ষ টাকা দিয়ে তৃণমূল কার্যালয় বানিয়েছে। ও তো একশো দিনের কাজ প্রকল্পের মারা টাকা।’’ উল্লেখ্য, ওই এলাকার বিধায়ক সুকুমার দে-কে। শুভেন্দুর অভিযোগের পাল্টা হিসাবে সুকুমার সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, প্রমাণ করতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। শুধু সোমনাথ, সুকুমার নন, আক্রান্ত তৃণমূল নেতা তারক এবং তৃণমূলের তমলুক শহর সভাপতি চঞ্চল খাঁড়ার বিরুদ্ধেও শুভেন্দুকে দুর্নীতির অভিযোগ করতে দেখা গিয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে তমলুক পুরসভার ভোটের প্রচারে শুভেন্দু দাবি করেন, চঞ্চল হাসপাতাল মোড়ে স্টল তৈরিতে দুর্নীতি করেছেন।
রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, সম্প্রতি শুভেন্দু যে সব তৃণমূল নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছেন, তাঁরা এক সময় শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন। বছর খানেক আগে শুভেন্দু তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যান। তবে শুভেন্দুর এই সব ঘনিষ্ঠরা দলবদল করেননি। বরং ওই নেতাদের তৃণমূলে শুভেন্দুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতা হিসাবে পরিচিত বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র ঘেঁষা হতে দেখা গিয়েছে। রাজনৈতিক মহলের আরও ব্যাখ্যা, এক সময়ের ‘পরিচিত’ নেতারা যাতে এখন তাঁর বিরুদ্ধে সরব হতে না পারেন, সে জন্য চাপে রাখতেই ওই তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছেন শুভেন্দু।
পাল্টা তোপ দেগেছেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন। তিনি বলেন, ‘‘সোমনাথ যদি টাকা নিয়ে থাকেন, তাহলে উনি আইনি পদ্ধতিতে অভিযোগ করুন। শুভেন্দুর কথায় কেউ বিশ্বাস করবে না। উনি তো আমার বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেছিলেন যে, আমি নাকি এ বছর ২১ জুলাইয়ের সভার আগের দিনে দু’কোটি টাকা তুলে কলাকাতায় পাঠিয়েছি। প্রমাণ ছাড়া এ ধরনের অভিযোগ করে চলছেন। প্রমাণ সামনে আনুন উনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy