ধৃত ফটিক পাহাড়িকে (ডান দিকে) নিয়ে যাওয়া হচ্ছে আদালতে। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ওরফে ঝাড়েশ্বর সাঁতরার খুনের ঘটনায় সদ্যবহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা ফটিক পাহাড়িকে গ্রেফতার করল রাজ্য পুলিশের সিআইডি। ফটিক ছাড়াও আরও এক জন এই খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন।
২০১৭ সালে খুন হন মৃত্যুঞ্জয়। কেশিয়াড়ির ডাডরা গ্রামের ওই বাসিন্দা দলীয় বৈঠকে যোগ দিতে নছিপুরে গিয়েছিলেন। রাতে মোটরবাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন। ভসরাঘাটে ঢোকার ঠিক আগে তাঁর উপর চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। প্রথমে মৃত্যুঞ্জয়ের দিকে তির ছোড়া হয়। পায়ে তির লাগায় বাইক থেকে পড়ে যান তৃণমূল নেতা। এর পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে কোপানো হয়। উপড়ে নেওয়া হয় চোখ। ওই খুনের পর রাস্তার এক ধারে দেহ ফেলে রেখে চলে যায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। ওই সময় বিজেপির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনে তৃণমূল। পুলিশের হাত থেকে পরে ওই মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। তার পরেই উঠে আসে ফটিকের নাম।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কিছু ধরেই মোবাইল বন্ধ রেখে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন ফটিক। শুক্রবার গভীর রাতে দিঘা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। শনিবার দুপুর ১টা নাগাদ ধৃতদের মেদিনীপুরে নিয়ে আসে সিআইডি। আগেই ফটিকের জামিনের আবেদন করছেন তাঁর আইনজীবী। তবে সূত্রের খবর, বহিষ্কৃত ওই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) ধারা-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবিদার ছিলেন এই ফটিক। গত ১০ অগস্ট কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সভাপতি, সহ-সভাপতি নির্বাচন হয়নি। পরে ওই পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন নিয়ে মামলাও হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টে। মামলাকারীরা ওই পঞ্চায়েত সমিতিরই ১৫ জন তৃণমূল সদস্য। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির ২৭ জন সদস্যের মধ্যে তৃণমূলেরই ২৩ জন। এঁদের মধ্যে বিভাজন দেখা দেয় ওই ফটিককে নিয়েই। তৃণমূলের একটি সূত্রে খবর, দলের এক পক্ষ চেয়েছিলেন, সমিতির সভাপতি হোন ফটিক। অন্য পক্ষ চান সভাপতি করা হোক উত্তম শীটকে। জেলা নেতৃত্বের ‘হুইপ’ অবশ্য ছিল উত্তমকে সভাপতি করার পক্ষে। কিন্তু দলেরই একাংশ সেই ‘হুইপ’ মানেননি। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বোর্ড গঠন স্থগিত হয়ে যায়। ঘটনাচক্রে, এর পরই ফটিককে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পর চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন তৃণমূলের ১৫ জয়ী প্রার্থী। এঁদের মধ্যে রয়েছেন ফটিক নিজেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy