নয়াচর জুড়ে ভেড়ি। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্য সরকারের ‘পাখির চোখ’ এখন নয়াচর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিল্পনা মতোই এই মীন-দ্বীপে ফিশিং হাব ও ইকো টুরিজ়ম তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আগামী ২৪ নভেম্বর মৎস্য দফতরের ডিরেক্টর-সহ অন্য আধিকারিকরা নয়াচরে যাবেন বলে জানিয়েন মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি।
অখিল বলেন, ‘‘ক্যাবিনেট মিটিং চলাকালীন মুখ্যমন্ত্রীকে নয়াচরের বিষয়টি জানাই। তিনি নয়াচরের বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চান। ওই দ্বীপে ফিশিং হাব ও ইকো টুরিজম করতে চান বলে জানান। সেই মতো সমীক্ষা করতেই নয়াচরে যাবেন দফতরের প্রতিনিধিরা।’’ অখিল আরও বলছেন, ‘‘নয়াচরে সমবায় করে মাছ চাষ করা যাবে । সেই উদ্যোগ হবে।’’ নয়াচরের মাছ চাষে সরকারি নিয়ন্ত্রণ না থাকায় রাজস্ব আসছে না বলেও অভিমত মৎস্যমন্ত্রীর।
বর্তমানে নয়াচরে বাম আমলে তৈরি ১৩টি মৎস্য সমবায় রয়েছে । এক একটি সমবায়ের অধীনে ৩০-৪০টি পুকুর রয়েছে। এই সমবায়গুলি হলদিয়া, সুতাহাটা, নন্দকুমার, নন্দীগ্রামের। এই সব সমবায়ের বাইরে কমবেশি ১৮ কিমি দীর্ঘ দ্বীপে কয়েক হাজার বেআইনি ভেড়ি রয়েছে। সুতাহাটা মৎস্য সমবায়ের সম্পাদক হরি বর্মন জানালেন, কয়েক দশক আগে পুকুর পিছু বছরে ৫ হাজার টাকা দিতে হত । এখন তাও দিতে হয় না। রমরমিয়ে চলছে ভেড়ি কেন্দ্রিক মাছ ব্যবসা। নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আবু তাহের জানান, নন্দীগ্রামের বহু মানুষ এই দ্বীপে মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকেও বহু মানুষ এসে এই দ্বীপে মাছ চাষ করছেন। তাহেরের মতে, ‘‘এই দ্বীপ থেকে সরকার বছরে ৫ কোটি রাজস্ব হারাচ্ছে। দ্বীপের জমি সরকার মাছ চাষের জন্য লিজ় দিক।’’
নয়াচরের মানুষজনের আবার অভিযোগ, প্রশাসনিকভাবে তাঁদের কোনও ধরনের সাহায্য করা হয় না। স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। মাসে একদিন স্বাস্থ্যকর্মীও পাঠানো হয় না। পানীয় জলের ব্যবস্থাও করেনি প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই দ্বীপের একটি বড় অংশ দখল হয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মৎস্যজীবী বলছিলেন, ‘‘নয়াচরে লাঠির জোর যার পুকুর তার। কোটি কোটি টাকার ব্যবসা চলছে।’’ নয়াচরের জেটি সংলগ্ন অংশের বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এখানে জমি লুট হচ্ছে। জেসিবি মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ভেড়ি বানানো হচ্ছে। প্রশাসনের একটি অংশের যোগসাজশে মোটা টাকার বিনিময়ে এই অবৈধ কাজ চলে বলে অভিযোগ। ফলে, ফিশিং হাব বা পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার আগে এলাকা দখলমুক্ত করা প্রয়োজন। প্রশাসনের বক্তব্য, নয়াচরে নিয়ম মেনেই যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy