Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

নির্দেশে সয়াবিন, মিড ডে মিলে পাতে পড়ল শুক্তো 

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ। তৎপর প্রশাসনও। কিন্তু সামান্য টাকায় পুষ্টি মিলবে কি! মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ। তৎপর প্রশাসনও। কিন্তু সামান্য টাকায় পুষ্টি মিলবে কি!

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৯ ০০:২৪
Share: Save:

খাতায় কলমে হেঁসেলে রান্না হওয়ার কথা ভাত, ডাল, সয়াবিন এবং আলুর তরকারি। কিন্তু খুদে পড়ুয়াদের পাতে পড়েছে ভাত, আলু ভাজা আর শুক্তো। দৃশ্যটি পটাশপুর-১ ব্লকের দক্ষিণ খাড়ান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

আবার, নন্দকুমার ব্লকের জম্বুরবসান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবার মিড ডে মিলে হয়েছে ভাত আর ডাল। ডালের মধ্যেই রয়েছে আলু, সয়াবিন, পেঁপে। আলাদা করে দেওয়া হয়নি সোয়াবিনের তরকারি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিন কয়েক আগেই জেলায় প্রশাসনিক সভা করে গিয়েছেন। মিড ডে মিলের উপরে বাড়তি নজর দেওয়ার ব্যাপারে তিনি সভা থেকে নির্দেশ দেন। এর পরেই বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের মিড-ডে মিল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক (ট্রেজারি) সমস্ত পুরপ্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, বিডিওদের কাছে চিঠি দিয়ে মিড-ডে মিলের সাপ্তাহিক খাবার তালিকা দিয়ে জানিয়েছেন, তালিকা অনুযায়ী পড়ুয়াদের খাবার দেওয়ার বিষয়টি কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। কিন্তু নির্দেশিকা যে অনেকেই মানছেন না, এ দিন তার প্রমাণ মিলেছে।

দক্ষিণ খাড়ান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৫ জন পড়ুয়ার মধ্যে এ দিন ২৭ জন উপস্থিত ছিল। সরকারি নির্দেশ মতো তাদের কেন দেওয়া হল না সয়াবিনের তরকারি? প্রধান শিক্ষক সুজয় গিরি বলেন, ‘‘শনিবারে সাধারণত সয়াবিনের তরকারি খাওয়ানো হয়ে থাকে। তাই এ দিন একটু আলাদা তরকারি করা হয়েছে।’’

জম্বুরবসান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ দিন ৪৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে হাজির ছিল ২৮ জন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দেবাশিস মাইতি বলেন, ‘‘সয়াবিনের তরকারি এবং ডাল আলাদাভাবে রান্না না করে একই সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা পড়ুয়ারা খেতে ভালবাসে।’’ সপ্তাহে দু’দিন ডিম বা মাছের তরকারি কি হয়? দেবাশিসের উত্তর, ‘‘ডিম খাওয়ানো হলেও মাছ খাওয়ানো হয় না। কারণ, মাছে কাঁটা থাকায় ওদের খাওয়ানোর ক্ষেত্রে ঝুঁকি রয়েছে।’’ যদিও স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির পড়ুয়া অঙ্কন দীক্ষিত, শান্তনু পালেদের বক্তব্য, ‘‘মাছ ভালই লাগে। কিন্তু স্কুলে মাছ হয় না।’’

মাছ না হওয়ার পিছনে অবশ্য বরাদ্দ কম অর্থও একটা কারণ বলে জানাচ্ছেন অনেক স্কুলের শিক্ষকেরা। দক্ষিণ খাড়ান স্কুলের সুজয় যেমন বলেন, ‘‘সরকারিভাবে মিড-ডে মিলের যে খাদ্য তালিকা দেওয়া হয়েছে, তার তুলনায় বরাদ্দ কম। এতে সমস্যা পড়তে হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসন গুরুত্ব দিলে ভাল হয়।’’

একাধিক স্কুলের শিক্ষকেরা আবার জানাচ্ছেন, পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলে ভাল খাবার দিতে, অনেক সময়ই তাঁদের নিজের পকেট থেকে টাকা গুনতে হয়। তেমনই অনেক স্কুলে শনিবার রান্না না করে সেই দিনের বরাদ্দ চাল পড়ুয়াদের দিয়ে দেওয়া হয় বলেও খবর। দাবি, এ ক্ষেত্রে ওই এক দিনের রান্না না করার খরচ বাঁচিয়ে অন্য দিনের তা পুষিয়ে দেওয়া হয়।

পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক অরূপ ভৌমিক বলেন, ‘‘অনেক স্কুলেই শনিবার রান্না করা হয় না। এটা ঠিক। সপ্তাহে অন্য পাঁচ দিনের খাবার খরচ সামাল দিতেই এই পন্থা নেন অনেকে। আমরা এটার সমর্থন করি না। কিন্তু সরকারেরও উচিত মিড-ডে মিলের জন্য বাস্তব সম্মত খরচ বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনা করা।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Medinipur Soya Bean Mid day meal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy