পূর্ব মেদিনীপুরের স্কুলে ভর্তি হল উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির পড়ুয়ারা। —নিজস্ব চিত্র।
রেশন ‘দুর্নীতি’ মামলায় তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি হয় গত ৫ জানুয়ারি। তার পর নানা ঘটনায় গত দেড়মাস ধরে উত্তেজনার পরিবেশ উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে। প্রতিদিনই নানা ঘটনা এবং রাজনৈতিক উত্তাপে এলাকার কচিকাঁচাদের পড়াশোনা উঠেছে ডকে। বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাই তাদের অন্যত্র পাঠিয়ে দিচ্ছেন বাবা-মায়েরা। যেমন, সন্দেশখালি থেকে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার দূরে পূর্ব মেদিনীপুরে পড়াশোনার জন্য চলে এসেছে একঝাঁক পড়ুয়া। মহিষাদলের নাটশালে একটি আবাসিক আশ্রমই আপাতত সন্দেশখালির ওই কচিকাঁচাদের ঠাঁই। ওই এখানকারই একটি হাই স্কুলে সন্দেশখালির বাসিন্দা কয়েক জন পড়ুয়াকে ভর্তিও করানো হয়েছে।
একাধিক সড়ক, নদী এবং রেলপথ পাড়ি দিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরে আসতে হয় উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির বাসিন্দাদের। প্রথমে ডায়মন্ড হারবার। সেখান থেকে সড়কপথে সরিষা আশ্রম হয়ে নুরপুর জেটিঘাট প্রায় ১২ কিলোমিটার। তার পর জলপথে লঞ্চে চেপে পৌঁছনো যায় মহিষাদলের গেঁওখালি। নাটশাল-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গেঁওখালিতে রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম। সন্দেশখালি থেকে এই আশ্রমে সম্প্রতি ন’জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে বলে খবর। আশ্রম সূত্রে এ-ও জানা যাচ্ছে, ওই এলাকা থেকে আরও অনেকেই মহিষাদলের ওই মিশনে থাকার আবেদন করেছেন। কিন্তু জায়গার অভাবে বাকিদের ছাড়পত্র দেওয়া যায়নি।
নাটশাল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সভাপতি শুভজিৎ মাইতি বলেন, “সন্দেশখালিতে রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের একটি শাখা রয়েছে। সেখানকার ন’জন ছাত্র এবং এক অভিভাবককে জায়গা দেওয়া হয়েছে নাটশালে। প্রায় ১৫ দিন আগে ওঁরা সন্দেশখালি থেকে এখানে এসেছেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সন্দেশখালির আরও অনেক ছাত্র ওই আশ্রমে থাকার আবেদন জানালেও জায়গার অভাবে সকলকে জায়গা দেওয়া সম্ভব হয়নি।’’ আশ্রম সূত্রে খবর, অভিভাবকদের অনেকেরই আবেদন একই— বাচ্চাদের যেন পুনরায় সন্দেশখালিতে ফিরিয়ে না দেওয়া হয়। শুভজিৎ বলেন, ‘‘ওই অভিভাবদের আশ্বস্ত করা হয়েছে। জানানো হয়েছে বাচ্চারা আশ্রমে সুরক্ষিতই থাকবে।’’
সন্দেশখালি থেকে আসা এক ছাত্রের কথায়, “এলাকায় লাগাতার অশান্তি হচ্ছে। আমাদের পড়াশোনা হচ্ছিল না। তাই বাবা-মা কথাবার্তা বলে এখানে পাঠিয়ে দিয়েছে।’’ ওই খুদে জানায় এখানে তারা ভালই আছে। মহিষাদলে এসে আশ্রমের কাছাকাছি নাটশাল হাই স্কুলেও ভর্তি হয়েছে জনা কয়েক ছাত্র। তাদের কথায়, ‘‘আমারা এ বার এখান থেকেই পড়াশোনা করব।’’ আর এক খুদে বলল, ‘‘ওখানে ওই ভাবে পড়াশোনা হয়?’’
সন্দেশখালির পড়ুয়াদের স্কুলে ভর্তি করানো প্রসঙ্গে নাটশাল হাই স্কুলের প্রধানশিক্ষক বিপ্রনারায়ণ পণ্ডা বলেন, “বর্তমান শিক্ষাবর্ষে পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৩০ জন টিসি নিয়ে এসে আমাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে সাত জন সন্দেশখালির ছাত্র।” তাঁর সংযোজন, “সরকারি নিয়ম রয়েছে টিসি নিয়ে যারা পড়াশোনার জন্য আসবে, তাদের স্কুলে ভর্তি করাতে হবে। তাই আমরা আবেদন অনুসারে ভর্তি করিয়েছি। সন্দেশখালির অনেক ছাত্র নাটশাল রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমে থেকে পড়াশোনা করছে। ওই পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের পড়াশোনায় যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা আমরা নিশ্চিত করব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy