Advertisement
E-Paper

লড়াই শেষ তিথির, শিক্ষা ঋণ না পেয়েই আত্মহত্যা!

১৪ অগস্ট আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তিথিকে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়।

তিথি দোলই। নিজস্ব চিত্র

তিথি দোলই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩৬
Share
Save

লড়াই শেষ। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে বৃহস্পতিবার মৃত্যু হল তিথি দোলইয়ের(২০)।

গত ১৪ অগস্ট চন্দ্রকোনা পুরশহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের ভেরবাজারের বাড়িতে কীটনাশক খেয়েছিলেন তিথি। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের আবেদন করলেও ব্যাঙ্ক থেকে শিক্ষাঋণ মঞ্জুর হয়নি। নার্সিং প্রশিক্ষণ মাঝপথেই থেমে যাবে— এই আশঙ্কা থেকেই তিথি কীটনাশক খেয়েছিলেন বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এ দিন হাসপাতালে বসে ক্রমাগত কেঁদে গিয়েছেন তিথির বাবা জয়দেব দোলুই। জয়দেব বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের দরজায় ঘুরে ঘুরে কোথাও পেলাম না (লোন)। আমার মেয়ের সঙ্গে সব বারে আমিই গিয়েছি ব্যাঙ্কের দরজায়। যেখানে পাঠিয়েছে, সেখানেই গিয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘যখন বুঝতে পারল আর হবে না লোনটা, তখনই ও এ রকম করল।’’ জয়দেব বলছিলেন, ‘‘লোনটা না পাওয়ায় আমরা বাপ- বেটি প্রায় এক মাসই মানসিকভাবে ভুগছিলাম। কিন্তু ও যে এ রকমটা করে ফেলবে, আমি ভাবতে পারিনি। আমার তো একটাই মেয়ে। কষ্ট পাচ্ছি খুব। আর কোনও বাবা যেন এই কষ্টটা না পায়, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই অনুরোধই করব।’’

১৪ অগস্ট আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তিথিকে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ওই রাতেই তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। সেই থেকেই চলছিল চিকিৎসা। কয়েকদিন তাঁকে রাখা হয়েছিল আইসিসিইউতে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ভর্তির সময় থেকেই কিডনির অবস্থা খারাপ ছিল। এ দিন রাত পর্যন্ত পরিবারের পক্ষ থেকে কোথাও কোনও অভিযোগ হয়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এ দিন তাঁর পরিজনেদের সঙ্গে দেখা করেছে জেলা বিজেপির প্রতিনিধি দল। বিজেপির জেলা সভাপতি তাপস মিশ্র বলেন, ‘‘ওই প্রকল্প আসলে পুরোটাই ভাঁওতা। এ ভাবে ভাঁওতা দেওয়ার কোনও মানে হয় না। আশা দিয়ে সেই আশাকে হত্যা করা, এর থেকে বড় পাপ আর হয় না। মানুষ কোনও দিনও ক্ষমা করবে না।’’ চন্দ্রকোনা পুরসভার স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর প্রদীপ সাঁতরা বলছিলেন, “খুব দু:খজনক ঘটনা।মেয়েটির নার্সিং পড়ার ইচ্ছে ছিল।ব্যাঙ্কের লোন নিয়ে একটা সমস্যা চলছিল শুনেছিলাম। তারজন্য এমন পরিণতি দেখে খারাপ লাগছে।”

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাধ্যমিক পাশ করার পরই তিথির নার্সিং পড়ুয়ার ইচ্ছে তৈরি হয়। ২০১৮ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর সেই ইচ্ছে আরও প্রবল হয়েছিল। কিন্তু আর্থিক কারণে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন তিথি। কেশপুর কলেজে ভর্তি হয়ে দ্বিতীয় সেমেস্টার পাশ করলেও ফাইনাল পরীক্ষায় বসেননি। ২০২১ সালে নার্সিং পড়ার জন্য বেঙ্গালুরু চলে যান তিথি। বন্ধুদের ও স্থানীয়দের কাছ থেকে টাকা পয়সা জোগাড় করে সেখানে এক নার্সিং কলেজে ভর্তিও হন। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষিত স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য নির্দিষ্ট নিয়মে আবেদন করেন। প্রশাসনিক ভাবে সেই আবেদন সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে পাঠানো হয়। কিন্তু তিথির নার্সিং কলেজ সংক্রান্ত কিছু সমস্যা থাকায় ঋণের আবেদন মঞ্জুর হয়নি। সরকারি নিয়মেই ওই ঋণ আটকে যায় বলে প্রশাসনের এক সূত্রের খবর। নির্দিষ্ট সময়ে কলেজে টাকা মেটাতে না পেরে নার্সিং কলেজ ছাড়তে বাধ্য হন তিথি। তারপর...

Student Credit Card ghatal midnapore Student Suicide

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।