কলকাতার বাড়িতে ছত্রধর মাহাতো। নিজস্ব চিত্র।
এনআইএ মামলা মুক্ত হয়ে এ বার নাকি ‘সামাজিকভাবে’ কাজ করবেন ছত্রধর মাহাতো! ঘনিষ্ঠ মহলে নাকি এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। তাহলে কি রাজনীতির ছোঁয়া বাঁচিয়ে সামাজি আন্দোলনে যুক্ত হচ্ছেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক? তবে ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তি মাহাতো এখনও ঝাড়গ্রাম জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী।
বাম আমলে প্রায় ৫০টি মামলায় অভিযুক্ত হন ছত্রধর। তাঁর মধ্যে বেশ কিছু মামলায় তিনি বেকসুর হন। ইউএপিএ মামলায় হাই কোর্ট সাজা কমানোয় ২০২০-তে ছত্রধর জেলমুক্ত হয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদকের পদ পান। কিন্তু ২০২১ সালের মার্চে ফের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি ১২ বছরের পুরনো মামলায় ছত্রধরকে গ্রেফতার করে।
সেই মামলায় অব্যাহতি পেয়ে জল মেপেই পদক্ষেপ করতে চান ছত্রধর।
সূত্রের খবর, রবিবার ঝাড়গ্রামে ফিরবেন তিনি। তাঁকে স্বাগত জানানোর তোড়জোড় চলছে। ঝাড়গ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি নরেন মাহাতো বলছেন, ‘‘কী ভাবে ছত্রধরদাকে জেলায় স্বাগত জানানো হবে, সে বিষয়ে বৃহস্পতিবার আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’ সূত্রের খবর, তৃণমূলে থাকা তাঁর সাবেক অনুগামীদের ছত্রধর জানিয়ে দিয়েছেন, রবিবার তাঁকে স্বাগত জানানোর নামে যেন অযথা বাড়াবাড়ি না হয়।
বুধবার কলকাতা থেকে ছত্রধর ফোনে বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রামে ফিরে আদিবাসী-মূলবাসী মানুষের কাজ করব। এর বেশি এখনও কিছু ভাবনা চিন্তা করিনি।’’
মঙ্গলবার কলকাতায় এনআইএ-এর বিশেষ আদালত ২০০৯ সালের রাজধানী এক্সপ্রেস আটকের মামলা থেকে ছত্রধর সহ পাঁচ অভিযুক্তকে অব্যহতি দিয়েছে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০০৯ সালের ২৭ অক্টোবর ঝাড়গ্রামের সরডিহায় যখন রাজধানী এক্সপ্রেস আটক করা হয়েছিল, ওই সময় ইউএপিএ মামলায় জেলবন্দি ছিলেন ছত্রধর। ঘটনার ১২ বছর পরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ রাজধানী আটকের পুরনো মামলায় ছত্রধরকে অভিযুক্ত করে গ্রেফতার করেছিল। বছর দেড়েক আগে হাই কোর্ট থেকে ওই মামলায় শর্তাধীন জামিনে ছাড়া পান ছত্রধর। তবে হাই কোর্টের নির্দেশ ছিল, লালগড়ের আমলিয়া গ্রামের বাড়িতে ফিরতে পারবেন না ছত্রধর। এমনকি ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া এই পাঁচটি জেলাতেও ছত্রধরের যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাই কোর্ট। ফলে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর ছত্রধর সল্টলেকের একটি বাড়ির একতলার বাসিন্দা হন। এখনও সেখানেই আছেন তিনি।
সম্প্রতি অসুস্থ মাকে দেখার জন্য ছত্রধরকে পুজোর সময় ৯৬ ঘণ্টার জন্য আমলিয়া গ্রামে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত অক্টোবরে চারদিন বাড়িতে কাটিয়ে কলকাতায় ফিরে যান ছত্রধর। এবার রাজধানী আটকের মামলায় বিশেষ আদালত ছত্রধরকে অব্যাহতি দেওয়ায় স্বস্তিতে তাঁর পরিবার।
ছত্রধরের স্ত্রী নিয়তি মাহাতো বলছেন, ‘‘আমার স্বামী যাতে ঝাড়গ্রাম জেলায় রাজনীতি করতে না পারেন, সে জন্য রাজনৈতিক চক্রান্ত করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তাঁকে মামলায় জড়ানো হয়েছিল।’’ ছত্রধরের মা বেদনবালা বলছেন, ‘‘ঘরের ছেলে এ বার ঘরে ফিরবে। এটাই এই বয়সে আমার কাছে স্বস্তির বিষয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy