Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Akhil Giri Resignation

পরিবারতন্ত্রে ইতি! রাশ কি এ বার একের

১৯৯৮ সালে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠালগ্নে অবিভক্ত মেদিনীপুরে দলের জেলার সভাপতি ছিলেন অখিলই। পরে দলে এসে তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি হন শিশির অধিকারী।

অখিল গিরি।

অখিল গিরি। —ফাইল চিত্র।

কেশব মান্না
কাঁথি শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৪
Share: Save:

নন্দীগ্রামের জেলায় তৃণমূলের অধিকার এ বার কার হাতে? মন্ত্রিপদে অখিল গিরির ইস্তফার পরে, সেটাই এখন প্রশ্ন।

শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পরে রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি ও তাঁর ছেলে সুপ্রকাশের উপর তৃণমূল অনেকটাই ভরসা করেছিল। বলা ভাল, জেলায় দলের ব্যাটন অধিকারীদের হাত থেকে নিয়ে গিরিদের হাতেই দিতে চেয়ছিল দল। অখিলকে মন্ত্রী করার পাশাপাশি সুপ্রকাশকে কাঁথির পুরপ্রধান ও যুব সংগঠনের জেলার দায়িত্ব দেওয়া হয়। কুকথার জেরে অখিল মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন। সুপ্রকাশ পদে থাকলেও জেলা রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের অনুমান, আর পরিবার নয়, এ বার দলের রাশ যাবে ব্যক্তির হাতে। সে ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে চর্চায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক। মন্ত্রিসভার আসন্ন রদবদলে উত্তমের শিকে ছিঁড়তে পারে বলেও খবর।

অধিকারী ও গিরিরা পারিবারিক সম্পর্কে আবদ্ধ। সম্পর্কে শুভেন্দুর মেসোমশাই হন অখিল। ১৯৯৮ সালে তৃণমূলের প্রতিষ্ঠালগ্নে অবিভক্ত মেদিনীপুরে দলের জেলার সভাপতি ছিলেন অখিলই। পরে দলে এসে তৃণমূলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি হন শিশির অধিকারী। তারপর নন্দীগ্রাম জমি আন্দোলনের সূত্রে জেলা তৃণমূলে অধিকারীদের উত্থান। অখিল জরুরি পদে থাকলেও অধিকারীদের ছাপিয়ে যেতে পারেননি কখনওই। শিশির আর শুভেন্দু তখন পূর্ব মেদিনীপুরের তৃণমূলের নিয়ন্ত্রক।

২০২০ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যান শুভেন্দু। শিশিরকে সরিয়ে তখন কিছুদিনের জন্য জেলা সভাপতি করা হয়েছিল তমলুকের তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রকে। তবে, একুশের বিধানসভা ভোটের সময় গিরিদের দাপট বাড়ে। প্রথমে অখিলকে মৎস্যমন্ত্রী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর ২০২২ সালে পুরভোটে সুপ্রকাশ জিতলে তাঁকে প্রথমে ভাইস চেয়ারম্যান এবং পরে পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয়।

তবে, গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে কালীঘাটের নজরে পড়েন উত্তম। তাঁকে জেলা সভাধিপতি করা হয়। লোকসভা ভোটে কাঁথিতে তৃণমূলের প্রার্থীও হন তিনি। তবে না জিতলেও উত্তমের লড়াইকে কুর্নিশ জানান খোদ মমতা। এ দিকে, জেলায় অখিল-উত্তম সংঘাত চরমে ওঠে। হারের জন্য অখিলের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ তোলেন উত্তম। এই আবহে অখিলের মন্ত্রিত্ব যাওয়া সময়ের অপেক্ষা ছিল। বেফাঁস বলে সময়টা এগিয়ে এনেছেন অখিল নিজেই।

শোনা যাচ্ছে, এ বার উত্তম মন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি তৃণমূলের কাঁথি এবং তমলুক সাংগঠনিক জেলাতেও উত্তম শিবিরের নেতারাই দায়িত্ব পেতে চলেছেন। লোকসভায় জেলায় ভরাডুবির পরে ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটে উত্তমকে সামনে রেখেই পূর্ব মেদিনীপুরে ঘুরে দাঁড়াতে চাইছে শাসকদল। আর তা হলে পরিবারতন্ত্রে দাঁড়ি পড়বে, শুরু হবে ‘ব্যক্তি-রাজ’।

অখিল জানিয়েছেন, মন্ত্রিত্ব গেলেও তিনি বিধায়ক হিসেবে কাজ করবেন। আর উত্তম বলেন, ‘‘আমরা কেউই কিছু নয়। চালক একজনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অতীতে যাঁরা এঁদের ছাপিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, তাঁরা বাংলার রাজনীতিতে মুছে গিয়েছেন।’’ বিজেপির জেলা (কাঁথি) সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলে যে বেশি কাটমানি দিতে পারবে, তার তত পদোন্নতি হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Nandigram Akhil Giri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy