Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Bratya Basu

ব্রাত্যর মুখে ‘মা মমতা’, স্বার্থ দেখছেন বিরোধীরা  

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মেদিনীপুরে জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রীকে জঙ্গলমহলের মা বলে সম্বোধন করেছিলেন তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ।

‘সবুজ উৎসবে’র মঞ্চে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নিজস্ব চিত্র

‘সবুজ উৎসবে’র মঞ্চে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াগ্রাম শেষ আপডেট: ০৭ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:১৪
Share: Save:

জঙ্গলমহলে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘মা’ বলে সম্বোধন করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

অতীতে মমতাকে ‘জঙ্গলমহলের মা’ সম্বোধন করতে শোনা গিয়েছিল তৎকালীন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষকে। সেই ভারতী এখন বিজেপি নেত্রী। সে কথা মনে করিয়ে বিরোধীদের কেউ কেউ বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে যখন কেউ ‘মা’ বলেন তখন সেটা কোনও উদ্দেশ্য নিয়েই বলেন। এক্ষেত্রেও সেটাই কারণ। কারণ, সম্প্রতি শিক্ষা নিয়ে বার বার মুখ পুড়েছে রাজ্য সরকারের।

শুক্রবার নয়াগ্রাম ব্লকের খড়িকামাথনিতে সবুজ উৎসবে যোগ দিতে এসেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানেই তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘সারা বছর আমাদের মা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। আমাদের উচিত পঞ্চায়েতের জেলা পরিষদ থেকে লোকসভা পর্যন্ত জিতে তাঁকে ফেরত দেওয়া। সেই কাজ একযোগে করতে হবে।’’ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে মেদিনীপুরে জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসে প্রথমবার মুখ্যমন্ত্রীকে জঙ্গলমহলের মা বলে সম্বোধন করেছিলেন তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। এরপরে ২০১৬ সালে জানুয়ারিতেও জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণের মঞ্চেও মুখ্যমন্ত্রীকে মা বলেন ভারতী। যা নিয়ে নিয়ে তুঙ্গে উঠেছিল বিতর্ক। অধুনা বিজেপি নেত্রী ভারতী অবশ্য শুক্রবার ফোনে দাবি করেন, ‘‘ওটা ভুল কথা। আমি কোথাও মা বলে সম্বোধন করিনি।’’ তবে বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুখময় শতপথী অবশ্য বলছেন, ‘‘ভারতী ঘোষ বুঝতে পেরেছিলেন ভুল জায়গায় মা বলা হয়েছিল। নিজের মা ও ভারতমাতাই মা হয়। ভারতী ঘোষ সেটি বুঝতে পেরেছিলেন। তাই যাঁরা ভারতমাতার জয়গান করে তাঁদের কাছে এসেছেন তিনি।’’ একই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘একবার বলছেন বাংলা নিজের মেয়েকে চায়। তাহলে ওরা ঠিক করুক মাকে চায়, না মেয়েকে চায়। মনে রাখতে হবে, যখন কেউ মুখ্যমন্ত্রীকে মা বলেন তখন নিশ্চয় বড় কোনও স্বার্থ রয়েছে।’’

এ দিনের অনুষ্ঠান দলীয় না হলেও সেখান থেকে বিরোধীদের একহাত নিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনে বিরোধীদের পরাস্ত করাই শুধু নয়, জেলা ছাড়া করে দেখিয়ে দেব। পঞ্চায়েতে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের জয়জয়কার হবে। বিরোধীরা শুধু ফেল করে। আমরা কাজের মধ্যে আছি। খেলা ও মেলার মধ্যে আছি।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ১২ বছর যা করেছেন তা ইতিহাস। যদি কোনও ভুলচুক হয়ে থাকে, তা কোনও ব্যক্তির ভুলচুক। পার্টির ভুলচুক নয়। পার্টি সেটা দায় নিতে পারে না। পার্টিতে যোগ্য লোকেদের সামনে আনা হচ্ছে।’’ সম্প্রতি সাঁওতালি শিক্ষা পর্ষদ গঠনের দাবিতে পথ অবরোধ করেছিল আদিবাসী সংগঠন। ব্রাত্য এদিন দাবি করেন, সাঁওতালি ভাষার প্রতি মান্যতা সবথেকে বেশি দেখিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাজ আর কেউ করবে না। তিনি বলেন, ‘‘বিরবাহার (বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা ) থেকে শুনেছি কিছু কিছু বিরোধীদের প্ররোচনা রয়েছে। যে সামান্য সংখ্যক রাস্তা রয়েছেন, আপনারা আলোচনায় আসুন।’’ তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘কয়েক বছর ধরে নিয়োগ করতে পারছি না। আদালতের কাছে নিয়োগের জন্য আবেদন করেছি। মনে হয় শীঘ্রই জটিলতা কাটবে। নিয়োগ করতে পারব।’’

এ দিনের মঞ্চ থেকে বারবার নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নেওয়ার কথাও বলেছেন ব্রাত্য। তবে এদিনের মঞ্চ অবশ্য কোন্দল মুক্ত ছিল না। কারণ অনুষ্ঠানে ‘ব্রাত্য’ ছিলেন জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্ত। ২০১৩ সালে নয়াগ্রামে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদে থাকাকালীন উজ্জ্বলই এই ‘সবুজ উৎসব’ শুরু করেছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Bratya Basu Mamata Banerjee TMC nayagram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy