বড়মার বাইরে স্তূপাকৃতি করে রাখা আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র।
সাফাইকর্মীর অভাবে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের কাজ এখনও শুরু করতে পারেনি পাঁশকুড়া পুরসভা। এই পরিস্থিতিতে মেচগ্রামের বড়মা করোনা হাসপাতালের আবর্জনা সংগ্রহের দায়িত্বও পাঁশকুড়া পুরসভার ঘাড়ে পড়েছে। বাড়তি দায়িত্বে পুরসভার নিজস্ব সাফাই অভিযানে ব্যাঘাত আসার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন শহরবাসী।
করোনা সংক্রমণ শুরুর পরে গত এপ্রিল থেকে মেচগ্রামের বড়মা হাসপাতালে সরকারি উদ্যোগে শুরু হয় করোনা চিকিৎসা। করোনা হাসপাতালে রোগী, চিকিৎসক-সহ সমস্ত স্বাস্থ্য কর্মীর পিপিই, মাস্ক, গ্লাভস, টুপি, ওষুধের বর্জ্য হলদিয়ার একটি সংস্থা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। কিন্তু এত দিন রোগীদের খাবারের পরিত্যক্ত পাত্র (কাগজ জাতীয়), জলের বোতল সহ নানা ধরনের বর্জ্য সামগ্রী সংগ্রহ করার কোনও ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলি পলিথিনের মধ্যে ঢুকিয়ে বড়মা হাসপাতালের পিছনে মজুত করা হচ্ছিল। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় সেগুলি থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। অগত্যা হাসপাতালের এই ধরনের বর্জ্য নিয়মিত সংগ্রহ করে সেগুলি দূরে কোথাও ফেলে দেওয়ার জন্য পাঁশকুড়া পুরসভাকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলা প্রশাসন। ঠিক হয়েছে সপ্তাহে দু'দিন বড়মার বর্জ্য সাফাই করা হবে পুরসভার তরফে।
কিন্তু প্রশ্ন অন্য জায়গায়। পাঁশকুড়াবাসীর বক্তব্য, সাফাইকর্মীর অভাবে যেখানে পুর এলাকায় এখনও পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ শুরু হয়নি বা ভ্যাটও নিয়মিত পরিষ্কার করা যায় না, সেখানে হাসপাতালের এই বাড়তি দায়িত্ব কীভাবে সামলাবে পুরসভা?
পাঁশকুড়া পুরসভা সূত্রে খবর, পুর এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডের প্রত্যকেটি বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে ‘ডাম্পিং গ্রাউন্ডে’ ফেলতে হলে প্রয়োজন ১১৪ জন সাফাই কর্মীর। কিন্তু বর্তমানে পুরসভার সাফাইকর্মীর সংখ্যা মাত্র পাঁচজন। এত কম সংখ্যক সাফাইকর্মী নিয়ে নতুন দায়িত্ব সামলানো নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কল্যাণ রায় বলেন, ‘‘বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহ করার জন্য পুরসভা ডাস্টবিন দিয়েছে। কিন্তু পর্যাপ্ত সাফাইকর্মী না থাকায় আজও আবর্জনা সংগ্রহের কাজ শুরু হল না। আবার বড়মার বাড়তি দায়িত্ব পুরসভার কাঁধে। আমাদের দাবি, রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর পাঁশকুড়া পুরসভায় দ্রুত সাফাই কর্মী নিয়োগ করুক।’’
এ বিষয়ে পাঁশকুড়া পুরসভার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘খুব দ্রুত আমরা বড়মা হাসপাতালের বর্জ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করব। এই কাজের জন্য একটি জেসিবি মেশিন ভাড়া করা হয়েছে। সপ্তাহে দু'দিন ওই বর্জ্য সংগ্রহ করা হবে। এছাড়া, পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের কাছে পুরসভায় দ্রুত সাফাইকর্মী নিয়োগে আবেদন জানানো হয়েছে। আপাতত স্ব-সহায়ক দলগুলিকে বাড়ি বাড়ি আবর্জনা সংগ্রহের কাজে লাগানোর উদ্যোগে নেওয়া হয়েছে। আশা করছি বাড়তি দায়িত্ব আমরা সামলে নিতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy