উদ্বোধন করা হচ্ছে কার্যালয় । নিজস্ব চিত্র।
পাকা ঘরের উপর টিনের ছাউনি দেওয়া দু’টি ঘর। কখনও তা হচ্ছে তৃণমূল কার্যালয়। কখনও লেডিজ কর্নার বা দোকানঘর। এক বছরে বারবার বদলে যাচ্ছে ঘরের পরিচয়। তৃণমূলের অন্দরেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে শোরগোল।
বেলপাহাড়ি মেন রাস্তার উপর রয়েছে ওই দু’টি ঘর। খাস জায়গার উপর ঘর। সেখানেই চলত আইএনটিটিইউসির ব্লক কার্যালয়। শ্রমিক সংগঠনের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অর্জুন মালাকার বসতেন সেই অফিসে। অভিযোগ, বছর খানেক আগে অর্জুন ওই দু’টি ঘর ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে কল্পনা নায়েক নামে স্থানীয় এক বাসিন্দাকে বিক্রি করে দেন। কয়েক মাস আগে বেলপাহাড়িতে নতুন করে রাস্তা সম্প্রসারণের সময় রাস্তার ধারে দোকানগুলি ভাঙা হয়েছিল। কিন্তু রাস্তার তৈরির পর তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের স্থানীয় কর্মীরা খেয়াল করেন দলীয় কার্যালয়টি ‘কল্পনা লেডিজ কর্নার’ নামে দোকান হয়ে গিয়েছে। মহিলাদের সালোয়ার, কুর্তা তৈরির পাশাপাশি নানা স্টেশনারি জিনিস রাখা হত সেই দোকানে। শ্রমিক সংগঠনের নেতারা বেলপাহাড়ি থানায় কার্যালয় দখলের অভিযোগ জানান। পুলিশ সমস্ত পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। ওই আলোচনায় ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বুবাই মাহাতো ও আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি মহাশিস মাহাতো ছিলেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, ব্লক সভাপতি কল্পনাকে ১ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার কথা জানান। বিনিময়ে কল্পনা দোকানটি ছেড়ে দিতে রাজি হয়েছিলেন। কল্পনা জানিয়েছিলেন, দোকানের পিছনে আরও কিছু বিনিয়োগ হয়েছে। তখন কল্পনাকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, বাংলা আবাস যোজনায় তাঁর নামে ঘর বরাদ্দ করে দেওয়া হবে।
কল্পনার অভিযোগ, ‘‘আলোচনার পর ১৫ দিনের মাথায় ১ লক্ষ টাকা ৯০ হাজার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এক মাস পর ১ লক্ষ টাকা দিলেও বাকি ৯০ হাজার টাকা এখনও দেয়নি।’’ গত মাসে দোকানটির দখল নেন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যেরা। গত ১০ নভেম্বর মহাশিস দলীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করেছিলেন। কল্পনার অভিযোগ, ‘‘টাকা না দিয়ে এক মাস আগে দোকানটি ভাঙচুর করে পার্টি অফিস করে নেয়। ওইদিন বাধা দিতে গেলে স্বামী ও আমাকে মারধর করে।’’ গত মাসেই বেলপাহাড়ি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিলেন কল্পনা। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হয়নি। বরং দিব্যি রমরমিয়ে চলতে থাকে আইএনটিটিইউসির কার্যালয়। এ দিন সকালে আইএনটিটিইউসির কিছু লোকজন দলীয় কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। ওই সময় তিনজন মহিলা কার্যালয়ে ঢুকে যান। শ্রমিক সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ, তিনজন মহিলা কার্যালয়ের মধ্যে একটি ঘরে তালা ভেঙে স্টেশনারি দোকান সাজিয়ে দেন। অফিসের আইএনটিটিইউসির লেখা নামটি রং করে মুছে দেন।
মহাশিস বলেন, ‘‘এটা দীর্ঘদিনের অফিস ছিল। সংগঠনের নামেই ইলেকট্রিক বিল রয়েছে। কারও দোকান বা অন্য কোনও বিষয় নেই। স্থানীয় ভাবে অফিসটি কে কী করেছিলেন তা স্থানীয় নেতৃত্ব বলতে পারবেন।’’
কল্পনা বলেন, ‘‘বাংলা আবসা যোজনায় বাড়ি তৈরি করে দেবেন বলেছিলেন ব্লক সভাপতি। কিন্তু তা আজ পর্যন্ত হয়নি বলে দোকান দখল নিয়েছি।’’ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বুবাই বলেন, ‘‘আগে অফিসটি কংগ্রেসের অফিস ছিল। অর্জুন ব্যক্তিগত ভাবে রেখেছিলেন। ওটা তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের অফিস ছিল না। আমি কোনও টাকা দেওয়ার কথা বলিনি। দিদি তো কাউকে কোনও দিন জোর করে জায়গা দখল করতে বলেনি। কার জায়গা তদন্ত করে দেখা হোক।’’ পুলিশ জানিয়েছে, দু’পক্ষের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy