সেই পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
পুজোর সময়ে মাওবাদীদের ভাড়া করে এনে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছে বিরোধীরা— মঙ্গলবার দুপুরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের তরফে সাংবাদিক বৈঠক করে এমনই অভিযোগ করা হয়েছে। আর এ দিন সকালেই পাশের জেলা ঝাড়গ্রামে মিলেছে মাওবাদী নামাঙ্কিত পোস্টার।
পঞ্চয়েত প্রধান, নির্মাণ সহায়ক ও তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ওই পোস্টার পড়েছে জামবনি ব্লকের কাপগাড়ি অঞ্চলে। লাল কালি দিয়ে সাদা কাগজে সেখানে লেখা, ‘কাপগাড়ি অঞ্চলে চোরেদের খতম তালিকা। ১. প্রধান (১ কোটি টাকার দুর্নীতি) ২. ইঞ্জিনিয়ার’। তলায় লেখা সিপিআই (মাওবাদী)। অনুমান, কাপগাড়ি পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ককে পোস্টারে ‘ইঞ্জিনিয়ার’ হিসেবে লেখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সকালে কুশবনির জঙ্গল রাস্তায় একটি কালভার্টে সাঁটানো কয়েকটি পোস্টার উদ্ধার করেছে পুলিশ। আরও কয়েকটি পোস্টারে তৃণমূলের কাপগাড়ি অঞ্চল সভাপতি জয়দেব মল্লিক, স্থানীয় এক এনভিএফ কর্মী, এক ঠিকাদার ও ঠিকাদার সংস্থার এক রাজমিস্ত্রিকে ‘খতমে’র হুমকি দেওয়া হয়েছে। একটি পোস্টারে আবার লেখা ‘মাওবাদী আছে, সারাজীবন থাকবে’। জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌর বলেন, ‘‘কারা পোস্টার দিয়েছে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’
তৃণমূলের ক্ষমতাসীন কাপগাড়ি পঞ্চায়েতের প্রধান মালতি মুড়ান বলেন, ‘‘কারা ওই পোস্টার দিয়েছে বুঝতে পারছি না। উন্নয়নের কাজে কোনও দুর্নীতি হয়নি।’’ ওই পঞ্চায়েতের নির্মাণ সহায়ক সুজয় দণ্ডপাটও বলছেন, ‘‘উন্নয়নের কাজ নিয়ে আগে কেউ অভিযোগ করেননি। সব কাজই ই-টেন্ডারে হচ্ছে।’’
কাপগাড়ি পঞ্চায়েতের দশ সদস্যের মধ্যে তৃণমূলের ছ’জন, বিজেপি-র তিনজন ও একজন সিপিএম সদস্য। পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, চলতি অর্থবর্ষে এলাকার রাস্তা, পানীয় জল, কমিউনিটি হল সহ নানা উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ৯০ লক্ষ টাকার ই-টেন্ডার হয়েছে। কাপগাড়ি পঞ্চায়েতের কাজকর্ম দলের তরফে নজরদারি করেন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি জয়দেব মল্লিক। তিনিও বলছেন, ‘‘কারা দিয়েছে বলতে পারব না।’’ কাপগাড়ি অঞ্চল তৃণমূলের সঙ্গে যুব তৃণমূলের কিছু বিরোধ রয়েছে। তবে এলাকার এক প্রবীণ তৃণমূল নেতার পর্যবেক্ষণ, ‘‘ওই পোস্টারে বানান ভুল ও লেখার ধরন মাওবাদীদের মতো নয়।’’ তৃণমূল কর্মীদের একাংশের দাবি, স্থানীয় গগনাশুলি গ্রামে সাংসদ কুনার হেমব্রমের আদিবাড়ি। ওখানে বিজেপি-র প্রভাব রয়েছে। ফলে, বিজেপি-র লোকেরা ওই পোস্টার দিয়ে থাকতে পারে। যদিও কুনার বলছেন, ‘‘ওখানে আমাদের মাত্র তিন জন পঞ্চায়েত সদস্য। সংগঠনও জোরালো নয়।’’ সাংসদের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘মাওবাদী ওরফে জনসাধারণের কমিটির নেতাকে তো তৃণমূলই রাজ্যের পদ দিয়ে জঙ্গলমহলে বিজেপিকে জব্দ করার জন্য মাঠে নামিয়েছে। ফলে, কৌশল করে এই পোস্টার কারা ছড়াচ্ছে সেটা তো বোঝাই যাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy