নিয়ে যাওয়া হচ্ছে নূরের দেহ। নিজস্ব চিত্র
সপ্তাহ খানেক আগে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন এক যুবক। শনিবার দুপুরে শ্বশুরবাড়ির বারান্দা খুঁড়ের উদ্ধার হল তাঁর মৃতদেহ। নন্দকুমার থানার ফতেপুর গ্রামের ওই ঘটনায় শনিবার সকাল থেকে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীরা যুবকের শ্বশুর ভাঙাচুর চালায়। ওই যুবককে খুনের অভিযোগে পুলিশ তাঁর স্ত্রী এবং ‘প্রেমিক’কে গ্রেফতার করেছে।
নন্দকুমার থানার ধান্যঘরের বাসিন্দা নূর মহম্মদ (৩৪) পেশায় মেশিনভ্যান চালক। তাঁর সঙ্গে আসমা বিবির বিয়ে হয়েছিল বছর পনেরো আগে। তাঁদের ১৪ এবং ৮ বছরের দুই ছেলে রয়েছে। অভিযোগ, আসমার সঙ্গে পাশের গ্রাম শ্যামসুন্দরপুরের বাসিন্দা শেখ দুলালের বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাছে ভেড়ির ব্যবসায়ী দুলালও বিবাহিত এবং তার তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে।
ওই সম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে নূর এবং আসমার মধ্যে অশান্তি চলছিল। গত ৩ জুলাই নুর এবং আসমা একসঙ্গে ফতেপুরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়েছিলেন। তবে দুই ছেলেকে বাড়িতে রেখে গিয়েছিলেন তাঁরা। দিন কয়েক পর আসমা একা বাড়ি ফিরে যান। নূর বাড়ি না ফেরায় ছেলে-সহ পরিবারের অন্যেরা তাঁর কাছে জানতে চান। সে সময় আসমা তাঁদের জানায় যে, নূর কাজে গিয়েছে। কিন্তু এর কয়েকদিন পরেও নুর বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি করে পরিবারের লোকেরা। নন্দকুমার থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়।
গত শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দারা আসমাকে আটকে নূরের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে। অভিযোগ, সে সময় আসমা দুলালকে সঙ্গে নিয়ে নুরকে মেরে ফেলার কথা স্বীকার করে। স্থানীয়েরা দুলালকে ধরে এনেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দাবি, সে সময় দুলালও নূরকে খুনের কথা স্বীকার করে। রাতেই নন্দকুমার থানার পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ দুলাল ও আসমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে যে, নূরের দেহ শ্বশুরবাড়ির বারান্দায় পোঁতা রয়েছে। রাতেই পুলিশ জায়গাটি চিহ্নিত করে। নূরের ভাই শেখ আরফানের অভিযোগ, ‘‘বৌদির সঙ্গে দুলালের সম্পর্ক নিয়ে অশান্তি চলছিল। কয়েক মাস আগে এ নিয়ে সালিশি সভাও হয়। তারপর দুলাল দাদাকে খুনের হুমকি দিয়েছিল। কিন্তু সত্যি খুন করবে ভাবিনি। দোষীদের কঠোর শাস্তি চাইছি।’’
ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরেই এ দিন সকালে কয়েক হাজার বাসিন্দা সেখানে জড়ো হন। তাঁরা নূরের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর চালায়। বাসিন্দাদের সরে যেতে পুলিশ মাইকে প্রচার চালায়। দুপুরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে নূরের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্তেরা মাটি চাপা দিয়ে বালি-সিমেন্টের আস্তরণ বানিয়ে তার উপর জ্বালানি কাঠ দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল। যাতে কেউ সন্দেহ করতে না পারে। এর পরেই আসমা এবং দুলালকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন ‘‘বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে গলা কেটে ওই যুবককে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান। মৃতের স্ত্রী এবং তাঁর এক সঙ্গীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তদন্ত করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy