Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Sheikh Sufiyan

বিজেপির সমর্থনে প্রধান সুফিয়ানের জামাই

এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি পাঁচটি করে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে।

শেখ সুফিয়ান।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২৩ ১০:২২
Share: Save:

বিধানসভা ভোট পরবর্তী সময়ে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল দলের অন্দরে। তার পর থেকেই সুফিয়ানকে নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। এমন আবহে পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে সুফিয়ানের জামাই শেখ হাবিবুল রহমানের ঘটনায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বৃহস্পতিবার হাবিবুল বিজেপির সমর্থনে নন্দীগ্রামের একটি পঞ্চায়ের প্রধান হয়েছেন।

এ দিন নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির অন্তর্গত মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ছিল। সেখানে ১২টি আসন পেয়ে ইতিমধ্যেই সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছিল ছ’টি আসন। স্বাভাবিক ভাবেই সেখানে তৃণমূলেরই প্রধান হওয়ার কথা। তৃণমূলের তরফে বিদায়ী বোর্ডের প্রধান হাবিবুলের বদলে এদিন দলের অন্য জয়ী সদস্য শেখ শাহানাওয়াজের নাম প্রস্তাব করা হয়। তখন দলের আরেক জয়ী সদস্য হাবিবুলের নাম প্রস্তাব করেন। ফলে ভোটাভুটি করতে হয়। ভোটের ফলাফলে দেখা যায় বিজেপি সদস্যদের সমর্থনে ১২টি ভোট পেয়েছেন হাবিবুল। এর পরে তিনিই প্রধান নির্বাচিত হন। বিজেপির জেলা (তমলুক) সম্পাদক মেঘনাদ পাল এ দিন বলেন, ‘‘বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া ছিল যে, তৃণমূলের দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়ালে তাঁকেই সমর্থন করতে হবে। আর সেটাই হয়েছে। তবে আগে থেকে কোনও বোঝাপড়া ছিল না।’’

এ দিনের এই ঘটনার পরে দলের স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষোভ দেখা গিয়েছে। পাশাপাশি, এই ঘটনায় নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির ভাগ্য নির্ধারণের ক্ষেত্রেও শঙ্কায় তৃণমূল। দলীয় সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোট পর্ব শুরুর আগেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সুফিয়ানের বোঝাপড়ার জল্পনা শোনা গিয়েছিল। দলের একাংশের ক্ষোভের ঘোষণার পরেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল জেলা পরিষদের প্রার্থী পদ থেকে। এখন সেই সুফিয়ানেরই জামাই কার্যত হাত মিলিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘এই হাবিবুল রহমান টিকিটের জন্য দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছিল। নিজের শ্বশুর সুফিয়ানের বলে বলিয়ান হয়েই ওই হামলা চালায় এবং টিকিট আদায় করেছিল সে সময়।’’ নন্দীগ্রামের নেতা তথা জেলা পরিষদের জয়ী প্রার্থী সেখ সামসুল ইসলামের কথায়, ‘‘এই বোঝাপড়া ভোটের আগেই করা হয়েছে। দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে এ দিনের ঘটনা জানানো হয়েছে।’’

এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল এবং বিজেপি পাঁচটি করে গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে। সেই সময় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, নিজেদের দখলে থাকা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির বাইরেও কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত গঠনে বিজেপির ভূমিকা থাকবে। ওই দাবি যে ভুল ছিল, তা মহম্মদপুরের ঘটনা প্রমাণ করেছে। এতে আগামী ১৪ অগস্ট নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠন তৃণমূলের কাছে সহজ হবে না বলে দাবি রাজনৈতিক মহলের। ওই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল-বিজেপির ১৫ জন করে জয়ী সদস্য রয়েছেন। ফলে কোনও দলের মাত্র একজন সদস্য অন্য পক্ষে ভোট দিলেই বিরুদ্ধ পক্ষ বোর্ড গঠন করবে। আর নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু আগেই দাবি করেছেন, ‘‘বিজেপির ১৫ জন ঐক্যবদ্ধ কিন্তু তৃণমূলের ১৫ জনকে ঐক্যবদ্ধ রাখার দায়িত্ব বিজেপির নয়, মালের দায়িত্ব আরোহীর।’’ বিরোধী দল নেতার সেই ইঙ্গিতবাহী বক্তব্যের ফলাফল, কী হবে সেটা নিয়েই চিন্তায় তৃণমূল।

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Head TMC Nandigram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy