E-Paper

কারখানার কঙ্কাল মনে পড়িয়ে দেয় মায়ের কথা 

খাদিকুলে বেশ জাঁকিয়ে ঘরোয়া এলাকায় কারখানা বানিয়ে বাজি কারবার ফেঁদেছিলেন কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু।

Skeleton of an Illegal firecracker factory of EGRA

খাদিকুলের বিস্ফোরণস্থল। ফাইল চিত্র।

গোপাল পাত্র

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৮:৫০
Share
Save

কারখানাটি ছিল বেআইনি। কিন্তু প্রতি বছর ধুমধাম করে সেই বেআইনি বাজি ‘কারখানা’ চত্বরে শিল্পের দেবতা বিশ্বকর্মা আরাধনায় মেতে থাকতেন শ্রমিকেরা। এগরার খাদিকুলের কৃষ্ণপদ বাগের ভস্মীভূত কারখানায় এবার শ্মশানের নিঃস্তব্ধতা। এলাকাবাসী বলছেন, চাই না এমন ‘শিল্প’ বা ‘কারখানা’, যা প্রাণ কাড়ে নিরপরাধদের।

খাদিকুলে বেশ জাঁকিয়ে ঘরোয়া এলাকায় কারখানা বানিয়ে বাজি কারবার ফেঁদেছিলেন কৃষ্ণপদ ওরফে ভানু। কারখানার পরিসরে একাধিক পুকুর, সারি সারি নারকেল ও সুপারির গাছ থাকায় সাজানো গোছানো একটি পরিবেশ ছিল। গত তিন বছর ধরে এই বাজি কারখানায় শিল্পের দেবতার আরাধনা করা হত। কারখানার শ্রমিক ও কৃষ্ণপদের পরিবারের লোকেরা এই দিনেই বিশ্বকর্মা পুজোয় সামিল হতো। কাজকর্ম বন্ধ থাকতো ওই দিন।খুব জাঁকজমক না হলেও পুজো ঘিরে হৈহুল্লোড় করতেন কারখানার কর্মীরা। তাতে যোগ দিতেন স্থানীয়দের একাংশও। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পুজোর আয়োজন ও কর্মীদের খাওয়া দাওয়া সবই চলতো কারখানায়। বিকেলে প্রসাদ বিতরণ করা হতো কাখানার কর্মীদের মধ্যে। অনেকেই ছেলে মেয়েদের নিয়ে পুজোয় সামিল হতেন। পুজোয় ভানুর নিজের হাতেই তৈরি রকমারি আতসবাজি ফাটানো হতো। সন্ধ্যা আরতিতে আকাশে উঠতো রংবেরঙের হাওয়াই। পুজোর রাতে ভোগ প্রসাদ ছাড়াও আলাদা খাবারের ব্যবস্থা থাকতো কর্মীদের জন্য। পুজোর পরের দিন মালিকের তরফে কারখানায় থাকত ভোজের আয়োজন।

গত বছরও বিশ্বকর্মা পুজোয় এমনই ছবি দেখা যেন ভানুর কারথানায়। কিন্তু এবার উল্টো ছবি। গত মে মাসে ওই কারখানায় বিস্ফোরণে ভানু-সহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। কারখানা পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। এখন ধ্বংসস্তূপের চারদিকে আগাছা ঢেকেছে। কৃষ্ণপদের পরিবারের একাংশ বাড়ি ছাড়া। রাত হলেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে কারখানার ভিতর থেকে ভেসে আসে শিয়াল ও কুকুরের ডাক। এই এলাকা রাত নামলেই কার্যত আতঙ্কপুরীতে পরিণত হয়েছে। সন্ধ্যার পরেই ভয়ে এই পথে কোনও মানুষ দাঁড়ায় না।

স্বাভাবিক ভাবেই এবছর আর শিল্পের দেবতার আরাধনা হচ্ছে না খাদিকুলের ওই কারখানা চত্বরে। তাছাড়া, সেই উৎসবের আনন্দ আর ফেরতও চান না অনেকে। বিস্ফোরণে মৃত মাধবী বাগের এক ছেলে বলেন, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজোয় মায়ের সঙ্গে কারখানায় প্রসাদ খেতে যেতাম। ঘটনার পরে ভয়ে আমরা কেউ ওদিকে যাই না। কারখানার দিকে তাকালে মায়ের কথা মনে পড়ে।’’ খাদিকুলের বাসিন্দা তথা সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধানের স্বামী মনোঞ্জয় সাউ বলেন, ‘‘গত বছর পর্যন্ত বেআইনি বাজিকারখানায় বিশ্বকর্মা পুজো হয়েছে। জাঁকজমক না হলেও কারখানার কর্মী থেকে অন্যরা এই পুজোয় অংশগ্রহণ করতেন। এবার সব বন্ধ।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Egra Firecracker Factory

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।