সভার কথা জানতেন না সায়নি। — ফাইল চিত্র।
লালগড়ের নেতাইয়ের দলীয় সভায় তাঁর যাওয়ার কথাই ছিল না! সমাজ মাধ্যমে এমনই দাবি করলেন যুব তৃণমূলের সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। যদিও গত বুধবার সভার দিন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনে করেন শুভেন্দুর পাল্টা সভায় জেলার নেতারাই যথেষ্ট। তাই সায়নী আসেননি।
সবার দিন সায়নীকে দেখার জন্য বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ নেতাইয়ে এসেছিলেন। সায়নী না আসায় হতাশ হন তাঁরা। সোমবার নিজের ফেসবুক পেজে সায়নী একটি দীর্ঘ পোস্টে দাবি করেছেন, বিষয়টি জেনে তিনি ব্যথিত ও বিস্মিত। সায়নী তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘‘সভায় উপস্থিত থাকার জন্য দলের বা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনও নির্দেশ আসেনি। জেলা নেতৃত্ব, মাননীয় বিধায়ক, মাননীয় মন্ত্রী, আয়োজক, মূল সংগঠন হোক বা যুব সংগঠনের সভাপতি কারোর সঙ্গে সভা সংক্রান্ত কোনও আলোচনাই হয়নি। এটি দ্বন্দ্বের বা বিবাদের বিষয় নয়, সম্ভবত এটি মিসকমিউনিকেশন বা ভুল বোঝাবুঝি।’’ সায়নীর দাবি, যুব নেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার দেড় বছরের মধ্যে ৯০ শতাংশ জেলাতে তিনি সভা, মিছিল, রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মসূচি করেছেন। সাংগঠনিক ভাবে জেলা সফরও করেছেন। সেদিন নেতাইয়ে যাঁরা তাঁর জন্য অপেক্ষা করে হতাশ হয়েছেন তাঁদের সবার উদ্দেশ্যে ‘ক্ষমাপ্রার্থী’ সায়নী বলছেন, ‘‘যদি শেষ মুহূর্তেও জানতে পারতাম, যেখানেই থাকতাম, আপনাদের টানে চলে আসতাম।’’ সবশেষে দলের সোশ্যাল মিডিয়া কর্মীদের উদ্দেশ্যে সায়নীর অনুরোধ, ‘‘যে কোনও অনুষ্ঠানের বিষয়ে কনফার্ম হয়ে তবেই সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করবেন।’’
৩০ জানুয়ারি নেতাই শহিদবেদি স্থলে দলীয় সভা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সভামঞ্চে ছিল বিজেপির দলীয় পতাকা। ওই দিন শুভেন্দু কটাক্ষ করে জানিয়েছিলেন, ৭ জানুয়ারি মাত্র একঝুড়ি লোক নিয়ে শহিদ দিবস পালন করেছিল তৃণমূল। আর তাঁরই উদ্যোগে তৈরি নেতাই বেদির (২০১১ সালের ৩০ জানুয়ারি বেদিটি উদ্বোধন করেছিলেন শুভেন্দু) ১২ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সে দিকে চোখ যাচ্ছে, সেদিকেই কেবলই জনজোয়ার। শুভেন্দুর সভার একদিন পর ১ ফেব্রুয়ারি বুধবার পাল্টা সভার প্রস্তুতি নেয় জেলা তৃণমূল। পাল্টা সভায় যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ ও দলের অন্যতম মুখপাত্র দেবাংশু ভট্টাচার্যের আসবেন বলে প্রচার করা হয়েছিল। সায়নীকে দেখার জন্য ভাল ভিড় হয়েছিল সভায়।
তৃণমূলের ওই সভায় ছিলেন বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা, জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্ম, বিধায়ক দেবনাথ হাঁসদা-সহ জেলার নেতা-নেত্রীরা। সায়নীর এই বক্তব্য জেনে নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটির সম্পাদক তথা লালগড় ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সরজিত রায় বলেন, ‘‘জেলার তরফে সায়নী ঘোষ ও দেবাংশু ভট্টাচার্য আসতে পারেন বলে জানানো হয়েছিল। সেই কারণে টোটোতে মাইক বেঁধে প্রচারও করা হয়েছিল।’’ আর বিরবাহা বলছেন, ‘‘রাজ্য থেকে দু’জনকে পাঠানো হতে পারে বলে জানানো হয়েছিল। তবে তাঁরা আসবেন কি-না চূড়ান্ত কিছু কনফার্ম করা হয়নি। অত্যুৎসাহী কিছু কর্মী সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার করে দিয়েছিলেন।’’
বিজেপির জেলা সহ সভাপতি দেবাশিস কুণ্ডুর কটাক্ষ, ‘‘পাল্টা সভায় লোক হবে না বুঝে লোক টানার জন্যই অভিনেত্রী আসবেন বলে প্রচার করেছিল তৃণমূল। অভিনেত্রীর ফেসবুক পোস্টেই সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।’’ জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুর দাবি, ‘‘রাজ্য নেতৃত্ব সায়নী ঘোষ, দেবাংশু ভট্টাচার্যকে পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন। আমরা তাই নিজের থেকে যোগাযোগ করিনি।’’ বিজেপির সমালোচনার জবাবে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমাদের সব কর্মসূচিতেই মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসেন। বিজেপির পায়ের তলায় মাটি নেই বলেই ওরা কেবলই মিথ্যাচার আর অপপ্রচার করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy