থই-থই: মেদিনীপুরের অশোকনগর। ছবি: কিংশুক আইচ
ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার থেকে গত রবিবার ৬ লক্ষ কিউসেকের বেশি জল ছাড়া হয়েছিল। সেই জল ঢুকেছিল নয়াগ্রাম ও গোপীবল্লভপুর ব্লকের নানা এলাকায়। বুধবার ভোর থেকে ফের ব্যাপক বৃষ্টি শুরু হওয়ায় নতুন করে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলিতে।
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সুবর্ণরেখার জলস্তর কিছুটা বেড়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবংয়ের বিভিন্ন এলাকাও জলমগ্ন হয়েছে। সেখানকার বিভিন্ন বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। এদিন বিকেলে নয়াগ্রামে গিয়েছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ও সবংয়ের বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘ঝাড়খণ্ডের গালুডি থেকে না জানিয়ে হঠাৎ করে এত জল ছেড়েছিল।’’ নয়াগ্রামে যাওয়ায় এদিন সবংয়ে পৌঁছতে পারেননি মানস। আজ, বৃহস্পতিবার সকালে তিনি সেখানে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
বুধবার ভোর থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয় পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামের নানা এলাকায়। বিভিন্ন খাল ও নদী ভরে যাওয়ায় নিকাশির পথ রুদ্ধ হয়ে জলমগ্ন হয়ে যায় নানা এলাকা। জল জমেছে ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর শহরেও। খড়্গপুর শহরের ঝাপেটাপুর, নিমপুরা, বুলবুলচটি, কৌশল্যা, আয়মা এলাকাতেও জলমগ্ন পরিস্থিতির ছবি ধরা পড়েছে। তবে সবংয়ের পরিস্থিতি চিন্তা বাড়াচ্ছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, কেলেঘাই-কপালেশ্বরী-চণ্ডীয়া নদী সংলগ্ন এই বিধানসভায় বিষ্ণুপুর, দশগ্রাম, সার্তা, নারায়ণবাড় গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এই বৃষ্টিতে। বিষ্ণুপুরের ১৩ নম্বর সাতভেটিয়া থেকে আমরাখালি পর্যন্ত রাস্তার ধারের বাঁধে ও নারায়ণবাড় ও খেপালে কপালেশ্বরী বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। পিংলা ব্লকের মালিগ্রাম, জলচক এলাকাতেও জলমগ্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। নয়াগ্রামে মানস বলেন, “আমি বৃহস্পতিবার সকালেই সবংয়ে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখব। প্রায় ১৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এতেই সবং ও পিংলার বিভিন্ন এলাকা জলমগ্ন হওয়ার সঙ্গে বাঁধগুলিতে ধস নেমেছে। জেলাশাসক থেকে বিডিওর সঙ্গে কথা বলেছি। নয়াগ্রামের সঙ্গেই সবং ও পিংলার রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠাব।”
এদিন বিকেলে প্রথমে নয়াগ্রাম ব্লকের বালিগেড়িয়ায় বিডিও অফিসে বৈঠক করেন মানস। সেখানে জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি মাধবী বিশ্বাস, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল দত্ত ও তপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ ছিলেন। যোগ দিয়েছিলেন পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। সেখানে জেলা পরিষদের সেচ কর্মধ্যক্ষ তপন কংসাবতীর নদী পাড় ভাঙন নিয়ে সমস্যার কথা জানান। নয়াগ্রামের যাদবপুর, শুকদেবপুর ও থুরিয়া গ্রামের নদী পাড় ভাঙনের কথা জানান জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ উজ্জ্বল। মানস নদী পাড় ভাঙনের মেরামতের জন্য সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের বলেন। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রিপল দিয়ে সাহায্য করতেও বলেন তিনি।
বৈঠক শেষে মলম গ্রাম পরিদর্শন করেন মানস। গালুডির ছাড়া জলে ওই গ্রামের প্রায় ৩০টি বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছিল। মানসের সঙ্গে ছিলেন জেলা তূণমূলের চেয়ারম্যান বিরবাহা সরেন টুডু, জেলা তূণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুমন সাহু। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দারা ছোটঝরিয়া থেকে যাদবপুর পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের জন্য মন্ত্রীকে লিখিত ভাবে জানান। মানস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাকে পাঠিয়েছেন। তাই এসেছি। সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। আতঙ্কিত হবেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy