শনিবার কাজে সেরাজুদ্দিন। নিজস্ব চিত্র
কোটির ‘লোভে’ ক্ষতি বেশ কয়েক হাজার টাকা!
শেষমেশ নিজের ‘ভুলটা’ বুঝতে পেরে পুরনো পেশায় ফিরে গেলেন ‘মৃত সঞ্জীবনী’ গাছের মালিক সেরাজুদ্দিন মল্লিক।
পাঁশকুড়ার গোবিন্দনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার রানিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা সেরাজুদ্দিন পেশায় রাজমিস্ত্রি। সপ্তাহ কয়েক আগে তাঁর বাড়িতে থাকা একটি গাছকে ঘিরে এলাকায় গুজব ছড়ায়। রটে যায় ওই গাছের মৃত প্রাণীকে বাঁচানোর ক্ষমতা রয়েছে। গাছের শিকড়ে না কি একটি মরা মাছ বেঁচে উঠেছে।
‘সঞ্জীবনী’ গাছের খবর ছড়িয়ে পড়তেই লোক এসে ভিড় করতে থাকে সেরাজুদ্দিনের বাড়িতে। গাছ রক্ষা করতে বেড়া দিয়ে সেরাজুদ্দিন নিজের কাজ ছেড়ে পাহারা দিতে বসে যান। এর মধ্যেই এক ব্যক্তি তাঁকে কয়েক কোটি টাকা দিয়ে গাছটি কেনার প্রস্তাব দেন। তার আগে গাছের নমুনা পরীক্ষা করার দাবি করেন তিনি। কিন্তু সেরাজও সে সময় সাফ জানান, অগ্রিম টাকা দিলেই তিনি নমুনা দেবেন।
প্রায় দিন পনেরো ধরে এলাকায় চলে এমন ‘নাটক’। এর মধ্যে বন দফতর গাছ পরীক্ষা করতে এলে তাদের বাধা দেওয়া হয়। শেষে বন দফতর জানায়, ওই গাছের মৃতকে বাঁচানোর মতো বিশেষ গুণ নেই। গুজব রুখতে এলাকায় প্রচার করেন বিজ্ঞানমনস্ক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এত কিছুর পরে অবশেষে টনক নড়ে সেরাজুদ্দিনের। বুঝতে পারেন যে, গাছ ঘিরে নিছকই গুজব রটেছে। আর এত দিন কাজ বন্ধ করে বাড়িতে বসে থাকায় আদপে তাঁর আর্থিক ক্ষতিই হয়েছে। তাই গাছের চারপাশে বাঁশের বেড়া খুলে শনিবার সেরাজুদ্দিন রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দিয়েছেন। এ দিন তিনি জানন, রাজমিস্ত্রির কাজ করে দিনে প্রায় ৩৫০ টাকা উপার্জন হয় তাঁর। গত ১৫ দিন ধরের কাজে না যাওয়ায় তাঁরা প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।
সেরাজুদ্দিনের কথায়, ‘‘কোটি টাকার গল্পে আমার ক্ষতিই হল। আত্মীয়-প্রতিবেশীর সঙ্গে মনোমালিন্য হল। এখন বুঝছি গুজবে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে। ঘরে একটা টাকা নেই। এবার থেকে আর গুজবে কান দেব না।’’ গুজব যে ক্ষতিই করে, তা মানছেন সেরাজুদ্দিনের খুড়তুতো দাদা তৈমুর মল্লিক। তাঁর কথায়, ‘‘কয়েক জন কাণ্ডজ্ঞানহীন মানুষের জন্য ভাইয়ের মতো খেটে খাওয়া মানুষের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সবাইকে বলব গুজবে যেন বিশ্বাস না করেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy