Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Dibyendu Adhikari

নন্দীগ্রামে স্থায়ী সমিতির নির্বাচনে বিজেপির জয়, কাকে ভোট দিলেন তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু?

নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টি আসনের মধ্যে ১৫টি করে আসনে জয়ী হয় তৃণমূল ও বিজেপি। কিন্তু ভোটাভুটিতে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতিগুলি একচেটিয়া ভাবে দখল করেছে বিজেপি।

Suvendu Adhikari and Dibyendu Adhikari

শুভেন্দু অধিকারী (বাঁ দিকে)। দিব্যেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
নন্দীগ্রাম শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৩ ১৬:৪৫
Share: Save:

বিস্তর আলোচনা চলছিল নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতিগুলি গঠন নিয়ে। তবে, শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকায় মঙ্গলবার শেষ হাসি হাসল বিজেপিই। ফল নিয়ে শুভেন্দু জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে লড়তে গেলে ‘দম’ লাগে। কিন্তু শুভেন্দুর ভাই, তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী কাকে ভোট দিয়েছেন। এ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। দিব্যেন্দুর মন্তব্যে রহস্য আরও ঘনীভূত হয়েছে।

নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতিতে ৩০টি আসন। তার মধ্যে ১৫টি করে আসনে জয়ী হয় তৃণমূল ও বিজেপি। তবে গ্রাম পঞ্চায়েত, বিধায়ক ও সাংসদ মিলিয়ে বিজেপির হাতে ছিল ২৩টি ভোট। কিন্তু ভোটাভুটিতে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতিগুলি একচেটিয়া ভাবে দখল করেছে বিজেপি। এর আগে বোর্ড গঠনে লটারির মাধ্যমে সভাপতির পদটি ছিনিয়ে নিয়েছেন শুভেন্দুরা। সোমবার নন্দীগ্রামে সব ক’টি স্থায়ী সমিতিতেও বিজেপির জয় হল। এই ভোটের আগে শুভেন্দু বলেছিলেন, তিনি আশা করছেন সাংসদদের ভোট বিজেপির পক্ষেই যাবে। বস্তুত, তাঁর বাবা শিশির এবং ভাই দিব্যেন্দু খাতায়কলমে এখনও তৃণমূলের সাংসদ। তাঁরা কি বিজেপিতে ভোট দিলেন? এই নিয়ে জল্পনা চলছিল। এর মধ্যে ভোটাভুটি চলাকালীন তৃণমূলের এক সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঘাসফুল শিবির ভোট বাতিলের দাবি জানায়। কিন্তু সেই দাবি মানতে রাজি হননি বিডিও। এর পরে স্থায়ী সমিতি গঠনের ভোটাভুটি বয়কট করে বেরিয়ে যান তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। তাঁরা নন্দীগ্রাম-১ বিডিও অফিসের বাইরে রাস্তায় বসে স্লোগান দিতে থাকেন। এমনকি, শিশিরের বিরুদ্ধে ‘চোর-চোর’ স্লোগানও শোনা যায়। তাতে পঞ্চায়েত স্থায়ী সমিতি গঠনে অবশ্য প্রভাব পড়েনি।

ভোটাভুটির পর শুভেন্দু জানিয়ে দেন, তাঁরাই সব ক’টি সমিতি দখলে রেখেছেন। দাবি করেন, ‘তৃণমূলের লোকও’ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন। তা হলে দিব্যেন্দু কাকে ভোট দিয়েছেন? এই জল্পনা নিয়ে তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু জানান, ভোটদান তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার। কাকে ভোট দিয়েছেন তিনি বলবেন না। শুভেন্দুর দাবি প্রসঙ্গে দিব্যেন্দু বলেন,“আমি সংবিধানের নিয়ম মেনেই ভোট দিতে এসেছিলাম। কাকে ভোট দিয়েছি, সবাই জানেন। কারা বোর্ড দখল করল তা প্রিসাইডিং অফিসার জানাবেন। তবে আমি উন্নয়নের কাজে অংশ নিতেই নিয়ম মেনে এসেছিলাম।’’ তাঁর সংযোজন, “উন্নয়নের কাজে যাতে কোনও রাজনীতি না দেখা হয় সেটাই আশা করব।’’

নন্দীগ্রাম-১ পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠন ঘিরে মঙ্গলবার সকাল থেকেই চাপা উত্তেজনা ছিল এলাকায়। ব্লক অফিস চত্বরে জারি হয় ১৪৪ ধারা। নিয়ম অনুযায়ী, পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনে অংশ নেন সমিতির জয়ী সদস্যেরা। সেই সঙ্গে পঞ্চায়েতগুলির প্রধান, এলাকার বিধায়ক এবং সাংসদও সেখানে ভোট দেন। সকাল ১০টা নাগাদ পঞ্চায়েত সমিতিতে হাজির হন তৃণমূল প্রতিনিধিরা। এর কিছু সময় বাদে দল বেঁধে গাড়ি করে আসেন বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা। সমিতির অফিসে আসেন সাংসদ দিব্যেন্দু এবং বিধায়ক শুভেন্দু। স্থায়ী পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের ভোট শেষে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আজ প্রথমে তৃণমূল ভোটে অংশ নিয়েছিল। সেখানে আমরা ২৩ জন ছিলাম। অথচ ভোট পেলাম ২৪টি। এর পরেই তৃণমূল অসুস্থতার কথা বলে ভোট দান থেকে বেরিয়ে আসে।’’ শুভেন্দুর সংযোজন, “তৃণমূলের কেউ ভোট দিতে জানে না। আবার কেউ ভুল জায়গায় ভোট দিয়েছে। আসলে আমার সঙ্গে লড়তে গেলে দম লাগে। ওদের মালিককেও তো আমিই হারিয়েছি।’’

তবে স্থায়ী সমিতির ভোটদান প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের তমলুক জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শেখ সাহাবুদ্দিনের দাবি, “ভোট চলাকালীন আমাদের এক সদস্য অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন। সেই সময় আমরা ভোটাভুটি স্থগিত রাখতে আবেদন জানাই। কিন্তু বিডিও ওই কথায় কর্ণপাত করেননি। আমরা প্রয়োজনে আদালতের দ্বারস্থ হব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy