রেল কোয়ার্টারে তদন্ত। নিজস্ব চিত্র
সম্ভবত অবশ করার পর হাত-পা বেঁধে খুন করা হয়েছিল অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী জে বি সুব্রহ্মণ্যমকে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে এমনই মনে করছে পুলিশ।
বছর পঁয়ষট্টির সুব্রহ্মণ্যম শুধুমাত্র বাঁ চোখে দেখতে পেতেন। তাঁকে আঘাত করা হয়েছিল ওই চোখেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্ভবত ভারী গোলাকার কোনও জিনিস নিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। সেই আঘাতের জেরে বেহুঁশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, সোমবার নিউ সেটলমেন্টের কোয়ার্টার থেকে যখন সুব্রহ্মণ্যমের দেহ উদ্ধার হয় তার পাশে পড়েছিল একটি তালা। ছিল মহিলাদের একটি ব্যাগও। তাতে ছিল কয়েকটি ঘুমের ওষুধ। দেহের মুখে রুমাল গোঁজা ছিল। গলার কাছে ছিল নখের আঁচড়। তাই পুলিশ মনে করছে, শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা হয়েছিল।
তদন্তকারীদের দাবি, কয়েকটি সূত্র মিললেও, সেগুলিকে এখনও এক সুতোয় গাঁথা যায়নি। যেমন, মহিলাদের ব্যাগটি কার তা জানা যায়নি এখনও। সুব্রহ্মণ্যমের সঙ্গে এক মহিলার সম্পর্ক ছিল। তাঁকে ইতিমধ্যে জেরাও করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রতিদিন রাতে ওই মহিলা খাবার পৌঁছে দিলেও রবিবার রাতে তিনি দেননি। মহিলার দাবি প্রতিদিন তিনি খাবার দিতেন না। তদন্তে সাহায্য করতে মঙ্গলবার সিআইডির সদর দফতর ভবানীভবন থেকে খড়্গপুর টাউন থানায় পৌঁছয় ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞের দল। নেতৃত্বে রিখি ভট্টাচার্য। নমুনা করেন বিশেষজ্ঞেরা। সিআইডি সূত্রের খবর, মৃতদেহ যে খাটে ছিল সেখান থেকে এবং আলমারি থেকে আঙুলের ছাপ মিলেছে। যদিও ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার তালা থেকে আঙুলের ছাপ মেলেনি।
খুনের সঙ্গে সুব্রহ্মণ্যমের পরিচিত ওই মহিলার যোগ সম্পর্কে পুলিশ নিশ্চিত হতে পারেনি। মহিলা পুলিশকে জানিয়েছিলেন, সুব্রহ্মণ্যমের বন্ধুরা কোয়ার্টারে আসতেন। বন্ধুদের সঙ্গে সুব্রহ্মণ্যমের বিবাদও হত। পুলিশ জানতে পেরেছে, শহরে প্রচলিত ‘চিট খেলা’র (পরিচিতদের মধ্যে আর্থিক লেনদেন) সঙ্গে জড়িত ছিলেন সুব্রহ্মণ্যম। সেই সূত্রেই ওই মহিলা-সহ কয়েকজনের আনাগোনা ছিল কোয়ার্টারে। তাই এই আর্থিক লেনদেন সংক্রান্তকোনও গোলমালের জেরে এই খুন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “এখনও পরিষ্কার হওয়া যায়নি। আমরা কয়েকটি তথ্য পেয়েছি। আমাদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিশেষজ্ঞরা এসেছিলেন। তাঁরা কিছু নমুনা সংগ্রহ করেছেন। দেখা যাক।”
খুন ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ দিন তিনি বলেন, “পুরভোট আসায় আবার খুন শুরু হয়েছে। খড়্গপুরে গত চার বছরে খুন হয়নি। তৃণমূল জিততেই খুন হয়েছে। মানুষের ভাবা দরকার।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “দিলীপ ঘোষের কথায় মানুষ গুরুত্ব দেয় না। যিনি মানুষকে গুলি করে মারার কথা বলেন, গুন্ডামি করেন তাঁর মুখে এ সব কথা প্রহসন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy