বীরসিংহের ভগবতী বিদ্যালয়ের মাঠে জল-কাদা। আজ এখানেই মুখ্যমন্ত্রীর সভা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি যখন তুঙ্গে, তখনই ঝেঁপে এল বৃষ্টি। সোমবারের ওই বৃষ্টি বীরসিংহে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের ২৪ ঘণ্টা আগে উদ্বেগে রেখেছে প্রশাসনকে। বৃষ্টি ভিজেই প্রস্তুতি চললেও দুর্যোগ দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না।
বিদ্যাসাগরের দ্বিশত জন্মবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আজ, মঙ্গলবার বীরসিংহে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকেলেই পৌঁছে গিয়েছেন কোলাঘাটে। সেখানেই রাত কাটাবেন। সোমবার নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ঘাটালেও। সঙ্গে বজ্রপাত। বৃষ্টিতে বীরসিংহের অলি-গলিতে জল জমেছে। বীরসিংহের পাশে যে উদয়গঞ্জ মাঠে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন, দফায় দফায় বৃষ্টিতে সেই মাঠের বিভিন্ন অংশে জমেছে জল। পূর্ত দফতরের তৈরি করা অস্থায়ী ৮টি ‘স্বাগত তোরণ’ও ভিজেছে। সকালের বৃষ্টিতে পথবাতি বসানোর কাজও ধাক্কা খায়। তবে হেলিপ্যাডে কোনও সমস্যা হয়নি। জলে ভিজেই কাজ করেছেন শ্রমিকরা। জেলা শাসক রশ্মি কমল বলেন, “বৃষ্টিতে কোনও সমস্যা নেই।প্রস্তুতি সারা।”
দু’দিন আগেই দৈর্ঘ্য-প্রস্থে ৪৮/৩২ ফুটের মূল মঞ্চের কাজ সেরে ফেলেছে পূর্ত দফতর। প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই মঞ্চ থেকে একাধিক সংরক্ষণ প্রকল্পের ঘোষণা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। দু’টি সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার প্রকল্পের শিলান্যাস হতে পারে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে। এক, বীরসিংহ ভগবতী বিদ্যালয়ের সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প। দুই, বীরসিংহের বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরের সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প। দু’টি প্রকল্পে খরচ হতে পারে ২ কোটি ৫০ লক্ষ ৫২ হাজার টাকা। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, এই দুই প্রকল্পের ক্ষেত্রেই দরপত্রের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রস্তাবিত প্রকল্প রূপায়ণ হলে ভগবতী বিদ্যালয় এবং স্মৃতি মন্দিরের ভোল বদলে যাবে বলেই জানাচ্ছে প্রশাসনের ওই সূত্র। আরও আকর্ষণীয় হবে বীরসিংহ। তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের উদ্যোগে প্রকল্পগুলির কাজ হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে ইতিমধ্যে বেশ কিছু সংস্কারমূলক কাজ হয়েছে। বীরসিংহে বেশ কয়েকটি ঢালাই রাস্তা তৈরি হয়েছে জেলা পরিষদের উদ্যোগে। খরচ হয়েছে ২ কোটি ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। মুখ্যমন্ত্রী ওই রাস্তাগুলির উদ্বোধন করতে পারেন। বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দির থেকে বিদ্যাসাগর লাইব্রেরি পর্যন্ত রাস্তার পাশে কিছু পথবাতিও বসেছে। পূর্ত দফতর (ইলেক্ট্রিক্যাল), মেদিনীপুর বিভাগের উদ্যোগে এই কাজে খরচ হয়েছে ৮ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা। মুখ্যমন্ত্রী এই পথবাতিগুলির উদ্বোধন করতে পারেন। অন্যদিকে, ঘাটাল ব্লকের ঘাটাল বিদ্যাসাগর উচ্চবিদ্যালয়ের ঐতিহ্যবাহী ভবনের সংরক্ষণ ও সংস্কারের কাজ হয়েছে। এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৪৫ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা। এই সংরক্ষণ ও সংস্কার প্রকল্পেরও উদ্বোধন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী।
প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, ইতিমধ্যে বিদ্যাসাগরের বাড়িটি নবনির্মিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে খরচ হয়েছে ২৬ লক্ষ টাকা। এখানে বিদ্যাসাগরের ব্যবহার করা সামগ্রী রাখা রয়েছে। পর্যটকেরা এসে এই সব সামগ্রী দেখেও যান। বীরসিংহে এসে বিদ্যাসাগরের এই নবনির্মিত বাড়িতেও আসার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর।
বিদ্যাসাগর স্মৃতি রক্ষা কমিটির তরফে এই সব কাজের দাবি ছিলই। সেই সঙ্গে মহিলা কলেজ, গেস্ট হাউস, পর্যটন মানচিত্রে বীরসিংহে নাম সংযোজন থেকে শুরু করে বিদ্যাসাগরকে নিয়ে গবেষণা ক্ষেত্র তৈরির দাবিও ছিল। কমিটির আশা ছিল, মুখ্যমন্ত্রীকে আবার বিষয়গুলি জানানো হবে। কিন্তু ইতিমধ্যেই বেশ কিছু কাজ হয়ে যাওয়ায় এবং সফরের সময় কম থাকায় সে সুযোগ পাচ্ছে না কমিটি। কমিটির সম্পাদক শক্তিপদ বেরা বলেন, “আমরা দেখা করতে পারলাম কি পারলাম না তার চেয়েও বড় হল কাজগুলো হওয়া। সেটা শুরু হয়েছে।এতেই আমরা খুশি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy