চলছে প্রস্তুতি। খড়্গপুর স্টেশনে মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
আজ, বুধবার ভোর থেকেই ফের ছুটবে লোকাল ট্রেন। করোনার স্বাস্থ্য বিধি মেনে ট্রেনের ভিড় নিয়ন্ত্রণই মূল চ্যালেঞ্জ রেল প্রশাসনের। সেই মতো হাওড়া-মেদিনীপুর শাখার ছোট স্টেশনগুলিতে প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। অবশ্য লোকাল চালুর ১২ ঘন্টা আগেও ঢিলেঢালা প্রস্তুতির ছবি দেখা গেল ডিভিশনের সদর খড়্গপুর জংশন স্টেশনে। লোকাল ট্রেনে যাত্রীদের ভিড় নিয়ন্ত্রণ কী ভাবে হবে তা নিয়েও সংশয়ে খোদ রেল কর্তারাই।
আজ, বুধবার থেকে রাজ্যের অন্য ডিভিশনের সঙ্গে খড়্গপুর রেল ডিভিশনেও চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন। এই ডিভিশনে রাত ৩টেয় প্রথম খড়্গপুর স্টেশন থেকেই হাওড়ার উদ্দেশে রওনা দেবে লোকাল ট্রেন। এর পরে পাঁশকুড়া, মেদিনীপুর থেকেও ছাড়বে লোকাল। সব মিলিয়ে প্রথম দিন চালু হওয়া ৮১টি লোকালে ভিড় নিয়ন্ত্রণ মস্ত চ্যালেঞ্জ রেলের কাছে। অবশ্য মঙ্গলবার দুপুরেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংশয় কাটেনি। শুধুমাত্র অসংরক্ষিত টিকিটের কাউন্টার চালু, গণ্ডি কাটার মতো করোনা বিধি কার্যকরের আয়োজন ছাড়া আর তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। খড়্গপুরের মতো বড় স্টেশনেও সেই পরিকল্পনায় নানা ফাঁক থেকেই গিয়েছে বলে অভিযোগ। যদিও এ দিন খড়্গপুর রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী বলেন, “আমাদের প্রস্তুতি সব শেষ। আমি ছুটিতে বাইরে রয়েছি। আর কথা বলতে পারব না।”
খড়্গপুর স্টেশনে এ দিন দুপুর পর্যন্ত ঘুরে প্রস্তুতিতে নানা ফাঁকা দেখা গিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, খড়্গপুর স্টেশনের দক্ষিণ দিকে বোগদার যাত্রীদের স্টেশনে ঢুকতে সাবওয়ে ও বেরোতে ফুটব্রিজ ব্যবহার করতে হবে। আর উত্তর দিকের মালগুদামের যাত্রীদের জন্য একই ফুটব্রিজকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হবে। স্টেশনের চিফ কমার্শিয়াল ইন্সপেক্টর রমেশ রাজন বলেন, “আমাদের দক্ষিণে ২টি ও উত্তরে ১টি অসংরক্ষিত টিকিট কাউন্টার খোলা হয়েছে। যাতে শেষ মুহূর্তে কম্পিউটারে কোনও গোলযোগ না হয় তাই একদিন আগেই কাউন্টার খোলা হয়েছে।” তবে এ দিন বিকেল পর্যন্ত স্টেশনে সাবওয়ে ঢোকার মুখে যাত্রীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা ও জীবাণুমুক্ত করার কোনও প্রস্তুতি দেখা যায়নি। সাবওয়ে থেকে প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে অনেক আগেই দূরপাল্লার বিশেষ ট্রেনের জন্য চালু হওয়া একটি থার্মাল পরীক্ষার বুথ রয়েছে। তবে হাওড়াগামী ট্রেনের অধিকাংশ ৫ ও ৬ নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছাড়ার সিদ্ধান্তে সবথেকে বড় সমস্যা দেখা গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে সাবওয়ে থেকে ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে ফের যাত্রীদের ফুটব্রিজে উঠে ৫-৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছতে হবে। এতে প্রবীণ, প্রতিবন্ধী যাত্রীদের ভোগান্তির আশঙ্কা বাড়ছে। এ বিষয়ে স্টেশন ডিরেক্টর সোনালি পাড়ুয়া বলেন, “সাবওয়ে দিয়ে বেরিয়ে ফুটব্রিজ ব্যবহারে প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধদের সমস্যা হতে পারে ঠিকই। কিন্তু করোনা সতর্কতার জেরে এখনও লিফট চালু করা হবে কি না সেই সিদ্ধান্ত হয়নি।”
তবে ট্রেনে যাত্রীদের জায়গা দেওয়া নিয়েই সর্বাধিক দিশাহারা বিভিন্ন স্টেশনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিকেরা। কারণ ট্রেনে ৫০ শতাংশ যাত্রীকে জায়গা দেওয়ার স্টেশন প্রতি মাপকাঠি নিয়েই বিভ্রান্তি বেড়েছে। খড়্গপুর স্টেশনের ডিরেক্টর সোনালি পাড়ুয়া বলেন, “বেশি লোক উঠতে চাইলে পুলিশ ও আরপিএফ নিয়ন্ত্রণ করবে।” তবে এতে অশান্তির আশঙ্কা করছে নিত্যযাত্রী সংগঠনগুলি। ছোট স্টেশনগুলির ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একই। বালিচক স্টেশনের ম্যানেজার দশরথ বৈরাগী বলেন, “আমাদের করোনা বিধি নিয়ে প্রস্তুতি প্রায় শেষ। কিন্তু যাত্রীদের টিকিট দেওয়া ও একই ট্রেনে ওঠার বিষয়টি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে সেটা বুঝতে পারছি না।” এ দিন দুপুরে রেল পুলিশের পক্ষ থেকে বিভাগীয় বৈঠক হয়। রেল পুলিশের ডেপুটি সুপার শেখর রায়ের বক্তব্য, “আরপিএফ ও আমরা যৌথভাবেই যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণের কাজ করব। সেটা নিয়েই প্রস্তুতি বৈঠক হল। ট্রেন চললে বাকিটা বোঝা যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy