Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kolkata Doctor Rape and Murder

ভাদু গানেও আর জি কর-প্রতিবাদ

চাঁদাবিলা-সহ আশেপাশের গ্রামের মহিলারা কয়েকদিন আগেই আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে সুবিচারের দাবিতে মিছিল করেছিলেন।

ভাদু গানের আসর গোয়ালতোড়ের চাঁদাবিলা গ্রামে।

ভাদু গানের আসর গোয়ালতোড়ের চাঁদাবিলা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৭
Share: Save:

ভাদ্র মাসের শেষ দিনে গ্রামাঞ্চলে বসে ভাদু গানের আসর। মঙ্গলবার রাতে গোয়ালতোড়ের চাঁদাবিলা গ্রামে তেমনই এক আসরে গানে গানে উঠে এল আর জি করের ঘটনার কথা। গ্রামের মহিলারাই সুর বেঁধে গাইলেন একাধিক গান। ছোটরা তাল দিল। রাতভর চলা ভাদু গানের আসরে কিছুক্ষণের জন্য ভেসে উঠল প্রতিবাদের সুর।

চাঁদাবিলা-সহ আশেপাশের গ্রামের মহিলারা কয়েকদিন আগেই আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে সুবিচারের দাবিতে মিছিল করেছিলেন। সেই মিছিলে অংশ নেওয়া অনেক মহিলা এ দিন ভাদু গানের আসরেও ছিলেন। চাঁদাবিলা গ্রামের এক স্থানে রঙিন শাড়ি ও বেলুন দিয়ে সাজানো হয়েছিল ভাদু গানের আসর। বসানো হয়েছিল সুসজ্জিত মাটির ভাদু পুতুল। গ্রামের ৩০-৩২ জন মহিলার সঙ্গে ছিল ছোটরাও। ছিল ভাদু পুজোর প্রসাদ বিলি ও মিষ্টিমুখের আয়োজন। প্রায় সারা রাত ধরেই চলে গানের আসর। রাত যত বাড়ে আশেপাশের পাড়ার মহিলারাও এসে যোগ দেন সেখানে। সাম্প্রতিক নানা বিষয়ের সঙ্গে চিরাচরিত ভাদু গান পরিবেশন করেন অনেকে।

আসরের শুরুতেই রীতি মেনে ভাদু বন্দনা করে গাওয়া হয় আর জি কর নিয়ে প্রতিবাদী গান। কোনওরকম বাদ্যযন্ত্র ছাড়াই মহিলারা সমস্বরে গেয়ে ওঠেন - 'ভাদু ধন আর রইব না ঘরে / চল প্রতিবাদে শামিল হই আর জি করের তরে’। এই গান শেষ হলে তাঁরা গেয়ে ওঠেন - 'মুর ভাদু ডাগর হয়েছে গো / এখন কঠিন ডর করে /শ্রাবণে ঘটল ভীষণ আর জি করে / মুদের ডাক্তার মেয়ের ইজ্জত গেল / প্রাণ গেল বেঘোরে’। এই ভাবে তাঁদের একাধিক ভাদু গানে উঠে আসে আর জি করের প্রসঙ্গ।

গ্রামের বাসিন্দা অর্চনা গোস্বামী, সুলেখা গোস্বামী, প্রতিমা মিশ্র, সুষ্মিতা পণ্ডা, অর্চনা রায়, বুলু দাস, মীরা দাস, মধুমিতা পণ্ডা-সহ স্থানীয় অনেকেই আর জি করের ঘটনার সুবিচার চেয়ে মিছিলে হেঁটেছিলেন। এ বার আর জি করের ঘটনা নিয়ে ভাদু গান বেঁধে তাঁরা বলেন, "এ রকম নৃশংস ঘটনার সুবিচার যতদিন না মিলবে, ততদিন মহিলারা প্রতিবাদ করবে। এ রকম নানা আঙ্গিকে উঠে আসবে আর জি কর।"

ভাদু পরবের গান নিয়ে চর্চা করা লোকসংস্কৃতির গবেষক শঙ্কর মহাপাত্র মনে করেন ভাদু গানে সাম্প্রতিক বিষয় আসা স্বাভাবিক। তিনি বলেন, "পশ্চিম সীমান্ত বাংলার লোকায়ত মানুষ পালন করেন ভাদু পরব। ভাদ্র মাসের পয়লা থেকে সংক্রান্তি অর্থাৎ শেষ দিন পর্যন্ত ভাদুকে তাঁরা নিজের ঘরে মা বা কন্যা রূপে পালিত করেন। শেষ দিনের রাত ভাদু জাগরণের। এই রাতে বসে ভাদু গানের আসর। পরের দিন ভোরে ভাদুকে বিসর্জন দেওয়া হয় কোনও জলাশয়ে। এই পুরো পর্বে গান একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এতে প্রাচীন কাহিনি, রাজনীতির সঙ্গে সাম্প্রতিক নানা বিষয় তুলে ধরেও গান বাঁধা হয়। এর আগে খরা, বন্যা, করোনা বা আলুর দাম নিয়েও গান বাঁধা হয়েছিল।" তিনি বলেন, "সাম্প্রতিককালে আর জি করের ঘটনা আলোড়িত করেছে গ্রামাঞ্চলের মহিলাদেরও। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে ভাদু গানে।"

অন্য বিষয়গুলি:

Goaltore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy