তৃণমূল ছেড়ে সিপিএম যোগ দেওয়া চণ্ডী ঘোষের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে জেতার ব্যাপারে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত তিনি। —নিজস্ব চিত্র।
১৯৯৮ সাল থেকে রাজনীতি করেন তিনি। বস্তুত, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই রাজনীতিতে আসা। সম্প্রতি ‘দিদির দূত’ হিসেবে শালবনিতে গিয়ে তাঁর বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ করেন স্থানীয় বিধায়ক জুন মালিয়া। এলাকার সেই দাপুটে তৃণমূল নেতাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে যোগ দিলেন সিপিএমে। তৃণমূলের বিদায়ী গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সুকুমার ঘোষ ওরফে চণ্ডীকে এ বার পুরনো আসনেই সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন চণ্ডী। পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনি ব্লকের ১০ নম্বর কর্ণগড় অঞ্চলের ভাবরিগেড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থীর কথায়, ‘‘জুন মালিয়া আমার বাড়িতে এসে আমাকে কথা দেন। কিন্তু তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি এবং স্থানীয় নেতৃত্ব আমার সঙ্গে বেইমানি করল। তাই, সিপিএম থেকে মনোনয়ন দিলাম।’’ আড়াই দশক ধরে রাজনীতি করা চণ্ডী ভোটে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘‘জিতব তো আমি একশো শতাংশ! কারণ, আমি মানুষের পাশে ছিলাম। আর মানুষও আমার সঙ্গে আছেন।’’ যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, চণ্ডীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছে দল। তাই তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি।
চণ্ডীর দাবি, তৃণমূলের ‘উন্নয়ন’কে সঙ্গী করে গ্রামের পাকা রাস্তা, পানীয় জলের সুব্যবস্থা করে দিয়েছেন। বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো সরকারি প্রকল্পের সুবিধা যাতে যোগ্যরা পান, গত ৫ বছরে সেই ব্যবস্থাও করেছেন। কিন্তু তার পরেও কেন দল বদলাতে হল? তৃণমূল আমলে তৈরি পাকা রাস্তায় দাঁড়িয়ে চণ্ডীর মন্তব্য, ‘‘তো কী হয়েছে? রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকারে যে দলই থাকুক না কেন, তাদের তো কাজ করতেই হবে। সিপিএমের আমলেও তো মানুষ বিনা পয়সায় চাল-ডাল, রেশন পেয়েছে। ঘরবাড়ি পেয়েছে। বিভিন্ন ভাতাও পেয়েছে। অনেক রাস্তাঘাট, হাসপাতাল হয়েছে। তৃণমূলের আমলেও পাচ্ছে। আমি আগেও মানুষের পাশে ছিলাম। ভবিষ্যতেও মানুষের বিপদে-আপদে একই ভাবে পাশে থাকব।’’
এ নিয়ে জুন মালিয়ার দাবি, ‘‘যাঁদের কাজে মানুষ সন্তুষ্ট নন, যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে, তাদের এ বার প্রার্থী করেনি দল। তুলনায় নবীনদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ ছিল। তবে, দলের বার্তা বুঝতে না পেরে যাঁরা অন্য দলে গেলেন, তাঁদের জন্য তৃণমূলের দরজা চিরকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহের কথায়, ‘‘ওঁর অনেক কাজে মানুষ অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওঁর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগও ছিল।’’
শুধু চণ্ডী নন, শালবনি ব্লকের ভাদুতলা-সহ এমন আরও দু’তিনটি ঘটনা ঘটেছে। যেখানে শাসকদলের টিকিট না পেয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যেরা এবার সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন। তৃণমূলের অনেকে আবার গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি কিংবা জেলা পরিষদ আসনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা করেছেন। মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি সুজয় হাজরার মন্তব্য, ‘‘দল বড় হলে এমন ঘটনা ঘটবেই। সকলের আশা বা চাহিদা পূরণ করা সম্ভব নয়। দলের একনিষ্ঠ কর্মী হলে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিশ্বস্ত সৈনিক হলে তাঁরা অন্য দলে যেতেন না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিপক্ষে যেই থাকুক না কেন, তৃণমূলের প্রার্থীরাই বিপুল ভোটে জিতবেন। ইতিমধ্যে জেলায় বহু আসনে পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy