গোয়ালতোড়ের হাতিয়া-অদালিয়া বহুমুখী প্রকল্পে কাজ করছেন স্থানীয়রা । নিজস্ব চিত্র।
রুগ্ণ হয়ে পড়েছিল সরকারি প্রকল্প। বেসরকারি সংস্থার ছোঁয়ায় প্রাণ ফিরে পাচ্ছে সেই প্রকল্প। স্থানীয়রা কেউ করছেন কৃষির কাজ। কেউশিখছেন সেলাই।
গড়বেতা ২ (গোয়ালতোড়) ব্লকের জিরাপাড়া ও পাথরপাড়া অঞ্চলের মধ্যে পড়া অদালিয়া ও হাতিয়া মৌজায় ২০১৫-’১৬ সালে সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছিল একটি বহুমুখী প্রকল্প। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের আর্থিক সহায়তায় গড়বেতা ২ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে গড়া এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল এলাকার আর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতিসাধন। প্রায় ৪৫০-৫০০ বিঘা সরকারি জমির উপর গড়া এই প্রকল্পে ফলের বাগান, ছাগল, মুরগি পালন করার শেড, কমিউনিটি হল প্রভৃতি নির্মাণ করা হয়েছিল। সীমানা প্রাচীর-সহ নানাবিধ পরিকাঠামো গড়া হয়েছিল সরকারি অর্থানুকূল্যে। প্রকল্পে বিভিন্ন কাজে এলাকার বেকার যুবক - যুবতীদের যুক্ত করা হয়েছিল। অনেককে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছিল। বহুমুখী এই সরকারি প্রকল্প অবশ্য বেশিদিন হাসি ফোটাতে পারেনি স্থানীয় বাসিন্দাদের। বছর তিনেকের মধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছিল এই সরকারি প্রকল্প। অভিযোগ, সরকারি স্তরে গাফিলতির জেরে কার্যত তালা পড়ে গিয়েছিল প্রকল্পের গেট। ঝোপঝাড়ে ঢাকছিল প্রকল্প এরিয়া। ক্ষোভ বাড়ছিল এলাকায়।
গড়বেতা ২ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা যায়, গতবছর কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থাকে লিজে দেওয়া হয় এই বহুমুখী প্রকল্প দেখভাল করার। তারপরই এই প্রকল্পে ফের কাজ শুরু হয়। প্রকল্প এরিয়া ঘুরে দেখা গেল, এলাকার অনেকেই কাজ করছেন। কেউ আম বাগানের পরিচর্যা করছেন, তো কেউ কাজু ও চিনাবাদাম তোলার কাজ করছেন। আশেপাশের মহিলারা শিখছেন সেলাইয়ের কাজ। স্থানীয় ধরমপুর গ্রামের শোভা মাহাতো, গোয়ালতোড়ের তাপসী কোলে, চম্পা চালক, কদমডিহা গ্রামের বর্ণালি মণ্ডলরা সেলাই থামিয়ে বললেন, "এখানে সেলাইমেশিনে প্রশিক্ষণ নিয়ে রোজগারপাতি করতে পারব। এখান থেকেও কাজ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।" প্রকল্পের কাজ দেখাশোনা করার সংস্থার কর্মী চন্দন চক্রবর্তী বললেন, "৫০ জন মহিলার একটা ব্যাচ আগেই সেলাইয়ের প্রশিক্ষণ নিয়ে বেরিয়েছে, আরও ৫০ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। পুরোটাই বিনামূল্যে।" মুরগির খামারে কর্মরত এক শ্রমিক বললেন, "আগে তো কিছুই হচ্ছিল না, এখন অনেক কাজ হচ্ছে এই প্রকল্পে, আমরাও কাজ পাচ্ছি। দুটো পয়সা আয় হচ্ছে।" স্থানীয় অদালিয়া গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল মাহাতো, অভিজিৎ মাহাতো, হাতিয়া গ্রামের মন্টু মাহাতোরা বলেন, "সরকারি বহুমুখী প্রকল্পটি অবহেলা অনাদরে বন্ধই হয়ে গিয়েছিল। বেসরকারি সংস্থাকে লিজে দেওয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে প্রকল্প। এলাকার অনেকেই এতে কাজ করছেন, মহিলাদের সেলাই প্রশিক্ষণদেওয়া হচ্ছে।"
সংস্থার সম্পাদক প্রবীর মহাপাত্র, প্রজেক্ট ইনচার্জ বিকাশ বেরা বলেন, "৩০ বছরের লিজে আমরা এই প্রকল্প নিয়েছি। কৃষিকাজ, কৃষি বীজ প্রক্রিয়াকরণ, প্রাণিপালন থেকে মহিলাদের হাতের কাজ শিখিয়ে স্বনির্ভর করাই আমাদের লক্ষ্য। এখনই ২০০-২৫০ জন এখানে কাজ করছেন। পরে আরও বাড়বে।" গড়বেতা ২ বিডিও দেবঋষি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "পঞ্চায়েত সমিতির তত্বাবধানে একটি সংস্থা বহুমুখী প্রকল্পে কাজ করছে, এতে স্থানীয় মানুষের জীবন - জীবিকার সংস্থানও হচ্ছে।" স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো বলেন, "অদালিয়া - হাতিয়া বহুমুখী প্রকল্প ফের চালু হয়েছে। অনেকে কাজ করছে। দেখভাল করছে একটি সংস্থা। আমরা নজরে রেখেছি।"
আসতে পারেন দেব
ঘাটাল: কাল, সোমবার ঘাটালে এসে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন ঘাটালের সাংসদ দেব। ওইদিন ঘাটাল, দাসপুর ছুঁয়ে চারারোপণ কর্মসূচি করতে পারেন তিনি। তারপর বীরসিংহে বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরে যেতে পারেন। সেখান থেকে এসে ঘাটাল প্রশাসনিক বৈঠক করতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy