চাহিদা বেশি, জোগান কম— পুজোয় টান পড়তে পারে পদ্মের জোগানে। — নিজস্ব চিত্র।
দুর্গাপুজোয় পদ্মের ব্যাপক চাহিদা। সময়ে বৃষ্টি না হওয়ায় ফলনে ঘাটতি, তার উপর শেষবেলার অতিবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়েছে পদ্মচাষ। সব মিলিয়ে এ বার পুজোয় মহার্ঘ হয়ে উঠেছে পদ্ম। তার উপর, যে হারে পুজোর সংখ্যা বেড়েছে, সেই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে পদ্মফুল জোগান দেওয়া কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠছে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, বাইরে থেকে পদ্ম না এলে হয়তো সব জায়গায় পরিমাণ মতো পদ্মের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না।
দুর্গাপুজোয় ১০৮টি পদ্মফুল দেওয়াই রেওয়াজ। কথিত আছে, রাবণ বধের আগে মা দূর্গার পুজো করতে রামচন্দ্র এ ভাবেই পদ্ম দিয়ে পুজো দিয়ে দেবীকে তুষ্ট করেছিলেন। আর সেই ধারা বজায় রয়েছে এখনও। এই কারণেই দুর্গাপুজোর সময় পদ্মের চাহিদা আকাশ ছুয়ে ফেলে। রাজ্যের অন্যান্য জায়গার পাশাপাশি, পদ্মফুল চাষের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা। এখানকার পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, তমলুকের বিস্তীর্ণ এলাকার পদ্মফুল রাজ্যের বাজারে ঘাটতি মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে বছরের পর বছর। জেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি অন্যান্য জেলা এবং কলকাতাতেও মেদিনীপুরের পদ্ম যায়। প্রতি বছর চৈত্র মাস থেকে পদ্ম চাষ শুরু হয়, এবং তা চলতে থাকে আশ্বিনের শেষ বা দুর্গাপুজো পর্যন্ত। পদ্মফুল সর্বাধিক ১৫ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করে রাখা যায়।
পাঁশকুড়ার পদ্ম চাষি ব্রজবিহারী দাস বলছেন, ‘‘এ বার আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা পদ্মচাষে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে। এক দিকে সময়ে বৃষ্টি না হওয়ার জেরে ফলন কম হয়েছে, আবার অতিবৃষ্টির জেরে শেষ মুহুর্তে ব্যাপক পরিমানে ফুল নষ্টও হয়েছে। এর ফলে পদ্মের বাজারে চাহিদার তুলনায় জোগানে ব্যাপক ঘাটতি তৈরি হয়েছে।’’ আর এক ফুলচাষি সুধাংশু জানা বলছেন, ‘‘গত বছরও পদ্মের বাজার খুব চড়া ছিল। সে বার ফুল পিছু দাম উঠেছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এ বার সেই দাম প্রায় ৫০ থেকে ৫৫টাকা হওয়ার আশঙ্কা করছি।’’ পদ্ম ব্যবসায়ী জিতেন দাস বলেন, ‘‘এই মুহুর্তে যা পরিস্থিতি তাতে বাইরে থেকে পদ্মের জোগান না এলে সামাল দেওয়া মুশকিল। শেষ মুহুর্তে পদ্মের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা স্পষ্ট নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy