মেদিনীপুর শহর লাগোয়া আবাস এলাকায় একটি কিসান মান্ডিতে ধান বিক্রির জন্য লাইন চাষিদের। নিজস্ব চিত্র।
গত ডিসেম্বর থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হয়েছে জেলায়। তবে কাজে গতি নেই। ফলে, শুরু হয়েছে ধানের অভাবি বিক্রি। জেলার চাষিদের একটা বড় অংশই ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক। তাঁরা বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যাচ্ছে, খোলা বাজার আর সরকারের ধার্য্য ধানের দামের ফারাক খুব একটা কম নয়। প্রায় ছ’হাজার টাকা! সহায়ক মূল্যে ধান কেনায় গতি না এলে খোলাবাজারে ধানের দাম আরও পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা।
ধানের অভাবি বিক্রি তো শুরু হয়ে গিয়েছে?
সদুত্তর এড়িয়ে জেলার খাদ্য নিয়ামক সুকোমল পণ্ডিত বলেন, ‘‘সব ব্লকেই সহায়ক মূল্যে ধান কেনা চলছে।’’ এ বার ধানের সহায়ক মূল্য ১,৮৬৮ টাকা প্রতি কুইন্টাল। চাষি সরাসরি সরকারি শিবিরে এসে বিক্রি করলে কুইন্টাল প্রতি তাঁকে অতিরিক্ত ২০ টাকা উৎসাহ ভাতা দেওয়ার কথা। সেখানে খোলাবাজারে ধানের দাম ১,২০০ থেকে ১,২৫০ টাকার মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। চাষিদের ঘরে ধান জমে রয়েছে, তাই বাধ্য হয়েই অনেকে অভাবি বিক্রি করছেন। ফলে ধান ফড়েদের ঘরে চলে যাচ্ছে।
এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে দু’লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে এখনও পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৩০ শতাংশ। জেলার এক খাদ্য আধিকারিকের অবশ্য আশ্বাস, ‘‘এ বার লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
জেলায় যে পরিমাণ ধান উৎপাদন হয়, তার সবটা কখনও সহায়ক মূল্যে কেনা সম্ভব হয় না। শিবির করে সহায়ক মূল্যে ধান কেনা শুরু হলে খোলাবাজারে ধানের দাম সে ভাবে পড়ে না। ফলে, চাষিরা ফসলের ন্যায্য মূল্যটুকু পান। এ বার জেলায় ধানের ফলন খুব খারাপ হয়নি। সরকার সময়ে তৎপরতার সঙ্গে ধান না কেনায় জেলায় চালকল মালিকদের একাংশ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের অভাবের সুযোগ নিয়ে সরকারি দরের চেয়ে অনেক কম দামে ধান কিনছেন। চাষিদের একাংশও বাধ্য হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে চরম আর্থিক সমস্যায় পড়ছেন চাষিরা। চাষিদের অভাবি বিক্রি রুখতেই প্রতি বছর সহায়কমূল্যে ধান কেনে সরকার। ধান কেনায় গতি না থাকার সুযোগে পাইকার ও ফড়েরাও চাষিদের থেকে তুলনায় কম দামে ধান কিনে গুদামে মজুত করতে শুরু করেছেন। পরিস্থিতি একই থাকলে আগামী দিনে খোলাবাজারে ধানের দাম আরও পড়বে বলেই আশঙ্কা। জেলায় ২৩টি সিপিসি (সেন্ট্রাল প্রকিয়োরমেন্ট সেন্টার) বা বিক্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি ব্লক রয়েছে। নারায়ণগড় এবং গড়বেতা-৩’এ দু’টি করে সিপিসি রয়েছে। বাকি সব ব্লকেই একটি করে সিপিসি রয়েছে।
শালবনির চাষি দুলাল মাহাতো বলেন, ‘‘গত সাত-আট বছরে সারের দাম বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ। কীটনাশকের দামও লাফিয়ে বেড়েছে। দাম নেই বলেই এখনও সব ধান বিক্রি করিনি। অনেকেই খোলাবাজারে বিক্রি করে দিচ্ছেন।’’ মেদিনীপুর গ্রামীণের চাষি গোপাল বেরার কথায়, ‘‘যে পরিমাণ ধান চাষ করেছিলাম তার কিছুটা অভাবি বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। না হলে এ বার হাতে আলু চাষের টাকা আসত না।’’
চাষিদের অনেকে মহাজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেন। মহাজনেরা ৮ থেকে ১০ শতাংশ সুদে টাকা দেয়।
জেলার এক খাদ্য আধিকারিকের আশ্বাস, ‘‘এ বার যত বেশি সম্ভব চাষির কাছ থেকে ধান কেনার চেষ্টা হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে প্রায় ৩০ হাজার
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy