আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে খুলবে স্কুল। তার আগে বুধবার ঘাটাল বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ে হল ল্যাবরেটরি ও ক্লাসে চলছে জীবাণুনাশক স্প্রে করার কাজ। কৌশিক সাঁতরা।
ইঙ্গিত মিলতেই শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম জেলায় সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই স্কুল খোলার তোড়জোড় চলছে। চলছে অভিভাবকদের নিয়ে সভার প্রস্তুতিও। স্কুল খোলার আগে পুরো ক্যাম্পাস জীবাণুমুক্ত করার পরিকল্পনা করছে অনেক স্কুল। তবে এখনও সুনির্দিষ্ট নির্দেশিকা না আসায় অনেক স্কুল কর্তৃপক্ষই এ নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
মেদিনীপুর শহরের স্কুলগুলিতে শুরু হয়ে গিয়েছে স্কুল খোলার তৎপরতা। মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ-এর (বালক) প্রধান শিক্ষক অরূপ ভুঁইয়া বলেন, ‘‘যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনেই স্কুল শুরু হবে। এর জন্য যা পদক্ষেপ করার তা করা হচ্ছে। শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করা হচ্ছে।’’ কেশপুরের তোড়িয়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক উৎপল গুড়ে বলেন, ‘‘১২ ফেব্রুয়ারি থেকেই স্কুলে পঠন-পাঠন শুরু হবে, আগেও দু’দফায় ক্লাসরুম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। আবারও করা হচ্ছে।’’
জানা গিয়েছে— ছাত্রছাত্রীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয়েছে একটি বেঞ্চে দু’জন করে পড়ুয়া বসতে পারবে। যারা এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে, তারাও প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস করতে স্কুলে আসবে বলে জানা গিয়েছে। শালবনির ভাদুতলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিতেশ চৌধুরী বলেন, ‘‘স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।’’ স্কুল খোলার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে গড়বেতার তিনটি ব্লকের স্কুলগুলিতেও। ঝাড়বনির ব্যানার্জিডাঙা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদ্যোত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সরকারি বিধি মেনেই স্কুল শুরু হবে। অভিভাবকদের নিয়ে বসার কথাও ভাবা হচ্ছে।’’ বিধি মেনে স্কুল খোলার কথা বলছেন গোয়ালতোড়ের কিয়ামাচা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অনুপকুমার পড়িয়াও।
প্রস্তুতি শুরু হয়েছে ঘাটাল মহকুমার স্কুলগুলিতেও। ক্যাম্পাস-সহ শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার, অভিভাবক-সভা ডাকার পরিকল্পনা শুরু হয়েছে অনেক স্কুলেই। বীরসিংহ ভগবতী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শক্তিপদ বেরা বলেন, ‘‘প্রস্তুতি চলছে। অভিভাবক সভা শীঘ্রই ডাকব। ক্লাসরুম, আসবাবপত্রও সাফাই করা হবে।’’ দাসপুরের বরুণা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের নেতা সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘স্কুল খোলার আগে অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্র্যাকটিক্যালের জন্য বাড়তি সময় দেওয়া হলে, এতদিনের ঘাটতি পূরণ করা যাবে।’’ খড়্গপুর মহকুমার স্কুলগুলিতেও খোলার তোড়জোড় চলছে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, নারায়ণগড়ের বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমি স্কুলে প্রাথমিক ‘টেট’ পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। প্রধান শিক্ষক কার্তিকচন্দ্র আচার্য বলেন, ‘‘এখনও শিক্ষা দফতর থেকে কোনও নির্দেশিকা পাওয়া যায়নি। যা নিয়মে বলা হবে, আমরা তা মেনে চলব।’’
অনেক স্কুল আবার পরিচালন কমিটির সঙ্গে দ্রুত বৈঠক সেরে ফেলতে চাইছে। এতে প্রয়োজনীয় নীতি নির্ধারণ এবং তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা হবে বলেই মত দাঁতন বীণাপাণি বালিকা বিদ্যাপীঠের। শিক্ষা দফতরের নির্দেশ মেনে অভিভাবকদের কাছ থেকে অনুমতি পত্রও নিতে চাইছে স্কুলটি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মনিকা টুডু বলেন, ‘‘অভিভাবকদের কাছ থেকে অনুমতি পত্র নিয়ে এবং যাবতীয় করোনা বিধি মেনেই স্কুল খোলা হবে।’’ অন্য দিকে, ঝাড়গ্রামের বিনপুরের দহিজুড়ি মহাত্মা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক মৃণ্ময় হোতা বলেন, ‘‘স্কুল খোলার খবরে আমরা খুবই আনন্দিত। সব পড়ুয়াকে মাস্ক দেওয়া হয়ে গিয়েছে। প্রয়োজনে আরও দেওয়া হবে। স্কুলে সাবান ও স্যানিটাজ়ারের ব্যবস্থাও থাকবে।’’ ঝাড়গ্রাম কুমুদকুমারী ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন মান্না বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণাকে সাধুবাদ জানাই। যেমন নির্দেশ আসবে, সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy