ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের অনুষ্ঠানে প্রণব মুখোপাধ্যায়।
রাশভারী ক্রাইসিস ম্যানেজার নয়। মেদিনীপুর তাঁকে দেখেছে মাটির মানুষ হিসেবে। যিনি শাকভাজা দিয়ে ভাত খেতেন। মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে দেখা হলেই যিনি আনাতেন মুড়ি।
ভারতীয় রাজনীতির চাণক্য প্রণব মুখোপাধ্যায় আর নেই। সোমবার এ খবর পেতেই সবচেয়ে বেশি মনভার ঘাটালের। স্ত্রী শুভ্রা মুখোপাধ্যায় ঘাটাল লাগোয়া বীরসিংহ বিদ্যাসাগর বালিকা বিদ্যাপীঠের শিক্ষিকা ছিলেন। স্ত্রী-র কর্মসূত্রে হোক বা নিরক্ষরতা দূরীকরণ কর্মসূচিতে জড়িয়ে পড়া। প্রণববাবু ঘাটালে ছুটে এসেছেন বারেবারে। বীরসিংহে রাধানাথ চক্রবর্তীর বাড়িতে থাকতেন শুভ্রাদেবী। সেখানে এসে কংগ্রেস নেতৃত্ব-সহ গ্রামের প্রবীণ মানুষের সঙ্গে আড্ডা মারতেন তিনি। রাধানাথবাবুর স্ত্রী রেখারানি এদিন বললেন, “শুভ্রাদি আমার বাড়িতে থাকতেন। একবার শাক তুলে বাছতে বসেছি। কখন এসেছেন টের পাইনি। উনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। শাকভাজাও খেয়েছিলেন।”
বীরসিংহ গ্রামের প্রয়াত সমাজসেবী পঙ্কজ মুখোপাধ্যায়-সহ অনেকের বাড়িতে যাতায়াত ছিল তাঁর। বীরসিংহ লাগোয়া কমরসা গ্রামের নীলরতন রায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল প্রণববাবুর। রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন ২০১৩ সালে ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলে এসেছিলেন। তাঁর হাতযশেই এক কোটি টাকা পেয়েছিল বিদ্যাসাগর হাইস্কুল। ১৯৭৮ সালে ভয়াবহ বন্যায় গনিখানের সঙ্গে বন্যা কবলিত ঘাটালও ঘুরে যান তিনি।
কংগ্রেসের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি সৌমেন খান প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কয়েক বছর আগে রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দাঁতনে এসেছিলেন প্রণববাবু। ২০১৩ সালের মে মাসে মেদিনীপুরে এসেছিলেন। মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। আগেও দু’বার ওই স্কুলে এসেছিলেন প্রণববাবু। স্কুলের উন্নয়নে অর্থ সংস্থানের বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন।
রাজ্যসভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া প্রণববাবুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কেলেঘাই-কপালেশ্বরী সংস্কার কাজের সূচনায় ২০১২ সালে সবংয়ে এসেছিলেন প্রণববাবু। মানস ভুঁইয়ার আমন্ত্রণে। মানস বলছিলেন, ‘‘দেখা করতে গেলেই বলতেন, মেদিনীপুরের লোক এসেছে। মুড়ি দে।’’
ঝাড়গ্রাম জেলার সঙ্গেও প্রণববাবুর যোগাযোগ কম নয়। ২০০২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনের হীরকজয়ন্তী উপলক্ষে ঝাড়গ্রাম, খালশিউলি ও গোপীবল্লভপুরে দু’দিন ধরে পদযাত্রা ও জনসভা করেছিলেন প্রণববাবু। ২০০২ সালের অক্টোবরে জামবনির দুবড়ায় খুন হন কংগ্রেস কর্মী মোহিনীমোহন ষড়ঙ্গী। ওই ঘটনায় দু’সপ্তাহ পরে ফের ঝাড়গ্রামে আসেন প্রণব। ঘটনাস্থল ঘুরে জামবনির গিধনিতে ধিক্কার সভা করেছিলেন। ফাইল চিত্র (তথ্য: কিংশুক গুপ্ত, অভিজিৎ চক্রবর্তী ও বরুণ দে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy