Advertisement
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Pradhan Mantri Awas Yojana

বেনোজল! আবাস তালিকা থেকে বাদ বিপুল নাম

পূর্ব নির্ধারিত সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে আবাসের সমীক্ষা স্থগিত ছিল নির্বাচনী বিধির গেরোয়। মেদিনীপুরে উপনির্বাচন ছিল। নির্বাচনী বিধি ওঠার পরে ওই সমীক্ষা শুরু হয়।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:২৭
Share: Save:

তালিকা ধরে যাচাই চলেছে। দেখা হয়েছে কারা সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার যোগ্য, কারা নয়। যাচাইয়ে বেশ কয়েক হাজার অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে। এরপর খসড়া উপভোক্তা তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এ বার গ্রামসভা শুরু হবে। সূত্রের খবর, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রামসভা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেকে অযোগ্য বিবেচিত হয়েছে। সেই সূত্রে কয়েকটি এলাকায় গ্রামসভা ঘিরে অশান্তির আশঙ্কা রয়েছে।

তালিকায় এত বেনোজল কী ভাবে ছিল, প্রশ্ন উঠছে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, যাচাইয়ে দেখা গিয়েছে, কারও পাকা বাড়ি রয়েছে, কারও মাসিক রোজগার ১৫ হাজার টাকার বেশি, কারও আড়াই একরের বেশি জমি রয়েছে, আবার কারও চারচাকা রয়েছে। এ সব কারণেই তাঁরা আবাসের বাড়ি পাওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে। পূর্ব নির্ধারিত সময়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে আবাসের সমীক্ষা স্থগিত ছিল নির্বাচনী বিধির গেরোয়। মেদিনীপুরে উপনির্বাচন ছিল। নির্বাচনী বিধি ওঠার পরে ওই সমীক্ষা শুরু হয়। ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট’ (পিডব্লুএল) ধরে যাচাই শুরু হয়।

ঠিক কতজনের নাম আবাসের তালিকা থেকে বাদ পড়তে চলেছে? সদুত্তর এড়িয়ে জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদেরি বলেন, ‘‘এটা এখনই বলা সম্ভব নয়। যাচাইয়ের কাজ চলছে। গ্রামসভা হচ্ছে। যোগ্য উপভোক্তারা বাড়ি পাবেন।’’

নির্দেশ ছিল, ৫ ডিসেম্বরের মধ্যে যাচাইয়ের কাজ শেষ করতে হবে। ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে খসড়া উপভোক্তা তালিকা প্রকাশ করতে হবে। নিয়মানুযায়ী, শুরুতে গ্রামসভাকেই খসড়া তালিকা অনুমোদন করতে হয়। এরপর ব্লকস্তরের কমিটি, তারপর জেলাস্তরের কমিটি ওই তালিকা অনুমোদন করে থাকে। নির্দেশ রয়েছে, ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রামসভা শেষ করে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্লকস্তরের কমিটি তালিকা অনুমোদন করবে। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলাস্তরের কমিটি তালিকা অনুমোদন করবে। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, অনুমোদিত তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে, তাঁরাই যোগ্য উপভোক্তা। যোগ্যরাই সরকারি প্রকল্পে বাড়ি তৈরির জন্য টাকা পাবেন। সব ঠিক থাকলে, প্রথম কিস্তির টাকা পাবেন ২১ থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে।

প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ২০১১ সালে আর্থ সামাজিক ও জাতিগত সমীক্ষার পরে প্রকাশিত হয়েছিল ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট’। সেই তালিকা ধরে এতদিন বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। ওই সমীক্ষায় যে সব পরিবারের পাকা বাড়ি নেই, তাদের চিহ্নিত ত করা হয়েছিল। সমীক্ষার ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল আবাস যোজনার তালিকা। পোশাকি নাম ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্ট’। ২০১৫ সালে ওই তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। ২০১৭ সালে ফের এক সমীক্ষা হয়েছিল। কারণ, সে সময়ে নালিশ ওঠে যে, অনেক ‘যোগ্য’ উপভোক্তা তালিকার বাইরে রয়েছে। তাই ফের সমীক্ষা হয়। তৈরি হয় ‘আবাস প্লাস’ তালিকা। সেই তালিকা ধরেই চলছে আবাসের যাচাইপর্ব। গত কয়েক বছরে দেড় লক্ষেরও বেশি পাকা বাড়ি হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। অবশ্য এখনও অনেকে কাঁচা বাড়িতে থাকেন।এক সময়ে জেলায় ‘পার্মানেন্ট ওয়েটিং লিস্টে’ নাম ছিল প্রায় চার লক্ষ। যাচাইয়ের পরে তা প্রায় তিন লক্ষে এসে ঠেকে। বছর দুয়েক আগেও একবার ঝাড়াই-বাছাই হয়েছিল। সে সময়ে প্রথম দফায় প্রায় এক লক্ষ উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়। জেলায় ২১১টি গ্রাম পঞ্চায়েত। অর্থাৎ, গ্রাম পঞ্চায়েতপিছু গড়ে প্রায় সাড়ে চারশোজন উপভোক্তাকে বাড়ি তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।এ বারের যাচাইয়ে দেখা গিয়েছে ‘আবাস প্লাস স্যাংশন’ তালিকাভুক্ত ৯২,৮৮৬ জন বাড়ি পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু ৬,২০৭ জন বাড়ি পাওয়ার অযোগ্য। দেখা গিয়েছে ‘আবাস প্লাস পিডব্লুএল’ তালিকাভুক্ত ১৩,৮৯২ জন বাড়ি পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু ১৭,০৯০ জন অযোগ্য। এত বেনোজল রয়ে গিয়েছিল? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ‘‘পুরনো তালিকা। তাই কিছু নাম রয়ে গিয়েছিল! হয়তো পরে পরে এঁরা পাকা বাড়ি করে নিয়েছে!’’

আর কারও নাম নতুন করে তালিকাভুক্ত হবে না। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, গ্রামসভায় খসড়া উপভোক্তা তালিকা গ্রামসভায় অনুমোদন হবে। কোনও নাম বাদ দেওয়ার কথা জানাতে পারে। কিন্তু নতুন করে কোনও নাম অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানানো যাবে না।

অন্য বিষয়গুলি:

Awas Yojana midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy