Advertisement
০৩ জানুয়ারি ২০২৫
Jalebi

জিলিপির বরাতে ফের জল্পনায় রাজনীতি

হাড়দার মেলার জিলিপি বরাবরই রাজনৈতিক। ২০১৭ সাল পর্যন্ত নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়ে বরাত পেতেন হাড়দা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সিন্টু সাহার পরিজন কিংবা অনুগামীরা।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কিংশুক গুপ্ত
শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৩৭
Share: Save:

পাগলা দাশু নাটকে জোর করে ফিরে এসে বলেছিল, ‘আবার সে এসেছে ফিরিয়া’। রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসায় মন দেওয়া প্রাক্তন তৃণমূল নেতা মেলায় জিলিপির বরাত পেয়ে বলছেন, ‘‘পারিবারিক ঐতিহ্য মেনেই দোকান দিলাম।’’ বিনপুরের হাড়দা গ্রামের লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে বসে মেলা। সেখানে একটি দোকান থেকে বিক্রি হয় জিলিপি। তাই বহুদিন পর তৃণমূলের প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি সিন্টু সাহার মেলায় জিলিপির বরাত পাওয়ায় তৃণমূলের অনেকেই পাগলা দাশুর অনুসঙ্গ খুঁজে পাচ্ছেন।

হাড়দার মেলার জিলিপি বরাবরই রাজনৈতিক। ২০১৭ সাল পর্যন্ত নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়ে বরাত পেতেন হাড়দা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সিন্টু সাহার পরিজন কিংবা অনুগামীরা। ২০১৮ সালে হাড়দা পঞ্চায়েতে পালাবদলের পর সিন্টুর সম্পর্কিত শ্যালক স্থানীয় বিজেপি নেতা রাজেশ মণ্ডল অথবা তাঁর ঘনিষ্ঠরাই বরাত পেয়েছিলেন। রাজনৈতিক ময়দান দখল নিয়ে সিন্টু ও রাজেশের মধ্যে এক সময় অহিনকুল সম্পর্ক ছিল। ফলে জেল খেটেছেন দু’জনেই। পাঁচটা বছর গেরুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন রাজেশের স্ত্রী ঝুমা। এখন পঞ্চায়েতের ক্ষমতায় তৃণমূল। ফলে সিন্টুর নিলামে সর্বোচ্চ দর হেঁকে জিলিপির দোকান দেওয়া নিয়েও জল্পনা রয়েছে। রাজেশ অবশ্য বলছেন, ‘‘নিলামে অত টাকা দিয়ে দোকান করে লাভ হয় না। তাই আমি আর জিলিপির দোকান দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী নই।’’ সিন্টু বলছেন, ‘‘লাভ-ক্ষতির বিষয় ঠিক নয়, বহু বছরের পারিবারিক ঐতিহ্য। অনেক বছর পর ফের দোকান দেব।’’

জনশ্রুতি, বহু বছর আগে হাড়দার শুঁড়ি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা গ্রামের সম্পন্ন ‘মোড়ল’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাই সাহা ও মণ্ডল পদবির ওই পরিবার গুলিকে ‘মণ্ডল-বাকুল’ বলা হতো। ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে গ্রামের অক্রুর মোড়ল স্বপ্নাদিষ্ট হয়ে মণ্ডল-বাকুলের পারিবারিক কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো শুরু করেন। পুজো কমিটির সম্পাদক তারাপদ সাহা বলছেন, ‘‘যিনি নিলামে মেলা কমিটিকে সর্বোচ্চ দর দেন তিনিই জিলিপির দোকান দিতে পারেন। এ বার সিন্টু সাহা দোকান দিচ্ছেন।’’

তারাপদ জানাচ্ছেন, এ বার পুজোর বাজেট ১২ লক্ষ টাকা। দেবীর পুজো হয় শাস্ত্রীয় মতে। কিন্তু দেবীর মূর্তিতে রয়েছে লৌকিক আদল। এক চালচিত্রে লক্ষ্মী-সরস্বতী রূপা দেবীর মাথার উপর থাকেন পীতবসন ধারী চৈতন্যস্বরূপ নারায়ণ। তাই কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে শাঁখ বাজিয়ে ও হরিনাম সংকীর্তনের মাধ্যমে শুরু হয় বিনপুরের হাড়দা গ্রামের শতাব্দী-প্রাচীন লক্ষ্মীপুজো। বিউলির ডাল ও আতপ চালের গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি হয় জিলিপি। সে জিলিপির গন্ধে ম ম করে মেলা চত্বর। জিলিপির গন্ধবিচার করে কেউ কেউ খুঁজে পান রাজনীতির গতিপ্রকৃতির আগাম পথ।

অন্য বিষয়গুলি:

Harda
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy