Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
মমতার ধমকে তৎপরতা

গভীর রাতে খাদানে হানা

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ লালগড়ের কংসাবতী নদী তীরবর্তী এলাকায় জেলাশাসকের নেতৃত্বে বেআইনি বালি পরিবহণ রুখতে গঠিত স্পেশ্যাল ট্যাস্ক ফোর্সের (এসটি) সদস্যরা অভিযান চালায়।

 পরিদর্শন: বেআইনি বালি বোঝাই লরির খোঁজে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

পরিদর্শন: বেআইনি বালি বোঝাই লরির খোঁজে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম ও গড়বেতা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪৭
Share: Save:

বুধবার ডেবরার প্রশাসনিক বৈঠকে এসে ঝাড়গ্রাম জেলায় বেআইনি বালি তোলা ও পরিবহণ নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরেই শুক্রবার রাতভোর ঝাড়গ্রামের বেশ কিছু বালি খাদানে আচমকা অভিযান চালালেন জেলাশাসক আয়েষা রানি।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ লালগড়ের কংসাবতী নদী তীরবর্তী এলাকায় জেলাশাসকের নেতৃত্বে বেআইনি বালি পরিবহণ রুখতে গঠিত স্পেশ্যাল ট্যাস্ক ফোর্সের (এসটি) সদস্যরা অভিযান চালায়। তবে ঘণ্টা তিনেক অভিযান চালালেও কোনও বেআইনি বালি বালিবাহী লরি দেখা যায়নি। একটি খালি লরি পাওয়া গেলেও তাতে বালি ছিল না।

বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরায় প্রশাসনিকসভায় ঝাড়গ্রাম জেলার কয়েকজন বিএলআরওকে দাঁড় করিয়ে ধমক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিএলআরওদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, ‘‘আপনাদের বিরুদ্ধে বালি খাদান নিয়ে এত অভিযোগ কেন হচ্ছে?’’ তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘খাদানগিরি’ চলবে না। তাঁর কাছে নাম করে কয়েকজন বিএলআরও-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান, তাঁরা অস্বস্তিতে পড়বেন, তাই সবার সামনে নাম বলছেন না।

একই সঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পুলিশ কোনও অভিযানে গেলে সেই খবর আগাম বাইরে চলে যাচ্ছে। অবৈধ বালি তোলা ও পরিবহণের বিরুদ্ধে স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) তৈরি করেও কাজের কাজ কতটা হচ্ছে, সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও জেলাশাসককে নজরদারির নির্দেশ দিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী।

শনিবার ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে।’’ তিনি জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে অভিযান চা‌লিয়ে বেআইনি খাদান ও বালি পরিবহণ বাবদ ১৮ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। ২০১৮-১৯ বর্ষে ৪২ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থ বর্ষে এখনও পর্যন্ত ১৩ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।

ডেবরার সভায় আলাদা করে নাম না নিলেও লোকসভা ভোটের আগে জেলায় এসে গড়বেতার অবৈধ বালি খাদান নিয়ে প্রশাসন ও দলকে সাবধান করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা ভোটে গড়বেতা বিধানসভায় পিছিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারীও গড়বেতায় এসে অবৈধ বালি কারবারে দলের একাংশের যুক্ত থাকার বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। তাই সেখানেও অবৈধ বালি-বোল্ডার খাদান কারবার বন্ধ আরও কড়া হচ্ছে জেলা প্রশাসন।

গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অসীম সিংহ রায়ের দািব , ‘‘অবৈধ খাদান কারবার আমরা অনেকটাই কমাতে পেরেছি। আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী বলেন, ‘‘গড়বেতায় অবৈধ বালি খাদান কারবার অনেকটাই বন্ধ করা গিয়েছে। খবর পেলেই অভিযান ও ধরপাকড় হচ্ছে।’’

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, পুজোর পরে খাদানের তালিকা ধরে ধরে ফের লাগাতার অভিযান চালানো হবে। প্রয়োজনে পুজোর সময়েও অভিযান চলবে। গড়বেতার বিধায়ক আশিস চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘গড়বেতায় অবৈধ বালি খাদান কারবার প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তবুও আমরা নজরদারি করছি। প্রশাসনিক অভিযানও চলছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Mine Jhargram Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy