Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus in Midnapore

ক্যানসারে মৃতের সৎকারে বাধা

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ক্যানসার নয়, করোনাতেই মৃত্যু হয়েছে দাসপুর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের রতন প্রামাণিকের (৭০

গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

গ্রামবাসীদের বোঝাচ্ছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঘাটাল শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২০ ০২:৪৫
Share: Save:

সৎকার বিতর্ক তুঙ্গে কলকাতায়। এই আবহেই ক্যানসারে আক্রান্ত এক বৃদ্ধের মৃত্যু ঘিরে তোলপাড় দাসপুর। শ্মশানে চুল্লিতে তুলে সৎকারের প্রস্তুতির মাঝেই হাজির হলেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের বাধায় চু্ল্লি থেকে নামিয়েও দেওয়া হয়েছিল দেহ। পরে অবশ্য পুলিশের হস্তক্ষেপে দেহ দাহ হয়।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ক্যানসার নয়, করোনাতেই মৃত্যু হয়েছে দাসপুর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের রতন প্রামাণিকের (৭০)। রতনের এক ছেলে অসিতও থাকেন দিল্লিতে। শুক্রবারই দিল্লি থেকে ফিরে গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতেই করোনা যোগ তুলে দেহ সৎকারে বাধা দেন গ্রামবাসীদের একাংশ। অভিযোগ, সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের এক নেতাও।

এমন ঘটনা জেলাতে ঘটছে বারবার। সম্প্রতি পিংলার এক যুবক ভিন্ রাজ্যে মারা যান। সেখান থেকে দেহ আনে পরিবার। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছিল, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি ছিল, যেহেতু ভিন্ রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে তাই করোনা যোগ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সে জন্য দেহ গ্রামে দাহ করতে দেওয়া হবে না। পরে পরিবার দেহ নিয়ে মেদিনীপুরে এলে সেখানেও বাধা দেওয়া হয়। পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরের দিন পিংলার নদীর তীরে দেহ দাহ করা হয়। এ ক্ষেত্রেও গ্রামবাসীদের একাংশের বাধায় রতনের দেহ বাড়ির ছাদেই দাহ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। যদিও শেষপর্যন্ত তা আর করতে হয়নি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বৃদ্ধ বছর পনেরো ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। মৃতের এক ছেলে অসিত দিল্লিতে সোনার কাজ করতেন। শুক্রবার অসিত তাঁর স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে গোবিন্দপুরের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছন। নিয়ম মেনে তাঁরা গৃহ পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। এতদিন ছেলে বাড়িতে না থাকায় রতন দাসপুরের সামাট গ্রামে মেয়ের বাড়িতে ছিলেন। ছেলে-নাতনিদের ফেরার খবর শুনেই শনিবার দুপুরে মেয়ের বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। ওই রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রবিবার বৃদ্ধের দেহ দাহ করা নিয়ে প্রথমের দিকে কোনও সমস্যা হয়নি। কোনও উত্তেজনাও ছিল না। হঠাৎ করেই গ্রামের একাংশ বাধা দিতে এগিয়ে আসেন। থমকে যায় যাবতীয় প্রস্তুতি। স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামবাসীদের ওই অংশকে সরাসরি মদত দেন স্থানীয় তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ সামন্ত। দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পৌঁছয় পুলিশ। পুলিশের হস্তক্ষেপে ঘন্টাখানেকের মধ্যেই গ্রামের সেই শ্মশানেই অবশ্য দেহ সৎকার করা হয়। মৃতের ছেলে অসিত প্রামাণিক বলেন, “অনেক কষ্টে বাবার দেহ দাহ করতে পেরেছি। সকলে সাহায্য না পেলে পারতাম না।”

অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ সামন্তকে ফোন করা হয়েছিল।তিনি অবশ্য ফোন ধরেননি। দাসপুরের তৃণমূল ব্লক সভাপতি সুকুমার পাত্র বলেন, “অহেতুক করোনা আতঙ্কে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।দলের ওই নেতৃত্বকে সতর্ক করা দেওয়া হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Midnapore Police Cancer Cremation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE