ধৃতকে নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার। নিজস্ব চিত্র।
নীল বাতি লাগানো গাড়িতে ঘুরতেন। আইপিএস অফিসার বলে পরিচয় দিতেন। ‘ভুয়ো’ পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সেই যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত সৌম্যকান্তি মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি মেদিনীপুর শহরের বটতলাচকের কাছে লাইব্রেরি রোডে। কোতোয়ালি থানার অদূরেই এই এলাকা।
বৃহস্পতিবার সকালে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে নকল ব্যাজ, স্টার, রিভলবার রাখার হোল্ডার। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, ‘‘একটা অভিযোগ আমরা পেয়েছি। তার ভিত্তিতেই ওকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সৌম্যকান্তি নিজেকে আইপিএস অফিসার বলে পরিচয় দিতেন। এই পরিচয় দিয়ে টাকাপয়সাও হাতিয়েছেন।’’ থানার অদূরেই বাড়ি। সেখানে নীল-বাতি গাড়ি এসে দাঁড়াত, বেরোত। কী ভাবে দিনের পর দিন এমন এলাকায় থেকে এই কারবার চালালেন ওই যুবক? জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘কতদিন ধরে এই কারবার করছেন, তদন্তে দেখা হচ্ছে।’’
ওই যুবকের এক আত্মীয় পুলিশে কাজ করেন। অনুমান, তাঁরও এতে ইন্ধন ছিল। জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘উনি অন্য জেলার। ওঁর সম্পর্কে খোঁজখবর করা হচ্ছে। জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুলিশকর্মী ওই আত্মীয়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হতে পারে। জানা যাচ্ছে, শুধু আইপিএস নয়, সৌম্যকান্তি কখনও নিজেকে এয়ারফোর্সের অফিসার হিসেবে, কখনও আইবি-র অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বিভিন্ন লোকের কাছে দাবি করেছেন, তাঁর সঙ্গে অনেক উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারের নিয়মিত তাঁর ওঠাবসা রয়েছে। অনেকের নামও নিতেন। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানাচ্ছেন, তিনি আগেই কোতোয়ালি থানায় গিয়েছিলেন ওই যুবকের নামে অভিযোগ জানাতে। থানার পুলিশকর্মী তাঁকে জানিয়েছিলেন, এ ক্ষেত্রে জিডি (জেনারেল ডায়েরি) হতে পারে, এফআইআর হবে না!
রাজ্য এবং জেলা পুলিশের নাম করে বিভিন্ন ‘ভুয়ো’ নির্দেশিকাও বানাতেন ওই যুবক। এক ঝলক দেখলে মনে হবে, নির্দেশিকা পুলিশ বিভাগেরই। এমন বদলির নির্দেশিকায় নিজের নাম ঢুকিয়ে নিতেন। বোঝাতেন, তাঁর পদোন্নতি হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে শোধ করতে পারছিলেন না। সৌম্যকান্তি প্রভাব খাটিয়ে লোন সেটেলমেন্ট করিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। তাপসের সন্দেহ হয়। তিনি পুলিশে যান। এরপরই পর্দা ফাঁস হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে সৌম্যকান্তি পুলিশের কেউই নন।
কয়েক মাস আগে সৌম্যকান্তি না কি নীল বাতি লাগানো গাড়ি চালিয়ে পাত্রী দেখতে গিয়েছিলেন। পাত্রীর বাড়িতেও নিজেকে আইপিএস অফিসার হিসেবেই পরিচয় দিয়েছিলেন। কতজনকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেছেন ধৃত যুবক? জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেউ যদি ওকে টাকাপয়সা দিয়ে থাকেন, পুলিশের কাছে সরাসরি আসুন। আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy