ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা চলছে। —নিজস্ব চিত্র।
বন্যা পরবর্তী সময়ে বেড়েছিল ডেঙ্গি সংক্রমণ। এখন সেই প্রবণতা কিছুটা কমলেও তা সন্তোষজনক নয়। পুজো আবহেও ঘাটালে ডেঙ্গি সংক্রমণ অব্যাহত। অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘাটালে ৪৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। চলতি সপ্তাহে গত পাঁচদিনে ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ জন। পুজোর মরসুমে ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছেন এমন অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। এই পরিস্থিতিতে বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের কেউ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ফিরেছেন কি না সে ব্যাপারে বিশেষ নজর দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর।
অক্টোবর মাস শেষের পথে। শীতের আমেজ শুরু হয়ে গিয়েছে। সাধারণত কড়া শীত পড়লেই ডেঙ্গির মশা নিস্ক্রিয় হয়ে যায়। শীতের পরিবেশে তারা ডিম পাড়তে পারে না। তবে এখনও তেমন শীত পড়েনি। তাই ডেঙ্গি সংক্রমণেও দাঁড়ি পড়ছে না। এবার পুজোর কিছু আগে ঘাটালে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। যেখানে জল বেশি জমেছিল সেখানে অনেকেই ডেঙ্গিতে সংক্রমিত হয়েছেন। এবার চিন্তা বাড়াচ্ছেন বাইরে থেকে আসা লোকজন। ঘাটাল মহকুমার অনেকেই বাইরে কর্মরত। তাঁরা পুজোর ছুটিতে বাড়ি ফিরেছেন। ফিরবেন কালী পুজো কাটিয়ে। ঘাটাল দাসপুর এলাকায় তাঁদের বেশ কয়েকজনের ডেঙ্গি হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌমশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, “ডেঙ্গি আক্রান্তের প্রবণতা এখন কমের দিকে। তবে পুজোর সময় বাইরে থেকে অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন। ঘাটালে তাঁদের অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন। বহিরাগতদের নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর বিশেষ ভাবে সতর্ক। আশা কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। জ্বর হলেই ডেঙ্গি পরীক্ষার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।”
জানা গিয়েছে, চলতি মরসুমে ঘাটাল মহকুমায় ৩৫০ জনের মত ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছেন। ঘাটালে বন্যা পরবর্তী সময়ে ৯ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৪৭ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। ১৬ অক্টোবর থেকে ২২ অক্টোবর মোট ২১ জন আক্রান্ত হন। চলতি সপ্তাহে এখনও দু’দিন বাকি। তার মধ্যেই শনিবার পর্যন্ত ২৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর। শনিবার ১০ জন ঘাটাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এদের মধ্যে চার জন ভিন্ রাজ্য থেকে বাড়ি ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের সুপার সুব্রত দে।
ডেঙ্গি রোধে কর্মসূচি চলছে। দুর্গাপুজোর অনেক মণ্ডপেও ডেঙ্গি সচেতনতায় নানা বার্তা দেওয়া হয়েছিল। মাইক প্রচারও হয়েছে। প্রশাসনের তরফেও ফ্লেক্স, ফেস্টুন টাঙিয়ে প্রচার করা হয়েছে। তবে পুজোর ছুটি থাকায় পুরসভা এবং পঞ্চায়েতের তরফে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এখন অনেক জায়গাতেই কার্যত শিকেয় উঠেছে। তাই অনেকে মনে করছেন, ডেঙ্গি সংক্রান্ত প্রচারে আরও গতি বাড়ানো জরুরি। ঘাটালের মহকুমাশাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, “ঘাটালে বন্যা কবলিত এলাকাগুলিতে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। পুরসভা ও পঞ্চায়েতগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy