Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ত্রাণ অপর্যাপ্ত, দুর্ভোগ চলছেই

মিনিট কয়েকের ঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। বিপর্যস্ত এলাকায় শনিবার ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ ছড়াল কেশিয়াড়ি ও খড়্গপুর-১ ব্লক এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর ও কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৩৪
Share: Save:

মিনিট কয়েকের ঝড়ে তছনছ হয়ে গিয়েছিল বিস্তীর্ণ এলাকা। বিপর্যস্ত এলাকায় শনিবার ত্রাণ নিয়ে ক্ষোভ ছড়াল কেশিয়াড়ি ও খড়্গপুর-১ ব্লক এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে।

শুক্রবার ঝড়ে কেশিয়াড়ির নছিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ন’টি গ্রামে জনজীবন বিপর্যস্ত। প্রশাসনের হিসেব অনুযায়ী, ঝড়ে দু’শো মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্লক প্রশাসনের দাবি, ওই দিন বিকেলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোর হাতে ত্রিপল-সহ বিভিন্ন ত্রাণের সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। ভসরা, গোপীনাথ, করঞ্জিমুড়া, ডাইনিমারি, আমিলাসাই, কাঁটাবনি প্রভৃতি গ্রামের মানুষের হাতে ত্রাণ সামগ্রী দেওয়া হয় বলে দাবি। তবে অনেক পরিবারের হাতে এখনও ত্রাণ তুলে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। গোপীনাথপুরের বাসিন্দা ক্ষতিগ্রস্ত চন্দ্রকান্ত গুছাইত বলেন, “আমাদের নছিপুর স্কুলে গিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করতে বলেছিল। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে বাড়ি ছেড়ে কীভাবে যাব। এত কঠিন পরিস্থিতি সত্ত্বেও কেউ ত্রাণ পৌঁছে দেয়নি।” যদিও বিডিও সৌগত রায় দাবি করেন, ‘‘সরকারের ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে বাদ না পড়েন পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করে সকলকে পোশাক, চাল-সহ অন্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে।’’

ত্রাণের অভাব মেটাতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও কেশিয়াড়ি-১ চক্রের প্রাথমিকের শিক্ষেরা ত্রাণ শিবির করেছেন। প্রাথমিক শিক্ষক জগন্নাথ মাইতি, অরুণকুমার শীল, মধুসূদন সিংহরা বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। তবে তা পর্যাপ্ত না হওয়ায় আমরাও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।”

খড়্গপুর-১ ব্লকের কলাইকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের ধুলিয়াপোতা, কপোতিয়া, মাঝিপাড়া, সাদাতপুর পশ্চিমে প্রায় আড়াইশো বাড়ির ছাউনি উড়ে গিয়েছিল ঝড়ে। ধুলিয়াপাতায় মৃত্যু হয়েছিল কপোতিয়ার বাসিন্দা এক যুবকের। ঝড়ের জেরে দুই ব্লকেই অ্যাসবেস্টস-টিনের ছাউনি উড়ে ক্ষতি হয়েছিল ঘরবাড়ির। বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল বিদ্যুৎ সংযোগ। ঘটনার পরেই প্রশাসনিক কর্তা ও জন প্রতিনিধিরা এলাকায় নেমে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করেছেন। তবে পরিস্থিতি এ দিনও স্বাভাবিক হয়নি। পর্যাপ্ত ত্রাণ মেলেনি বলে অভিযোগ।

বৃষ্টির মধ্যে অনেকেই আশপাশের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। রাতে মাজিপাড়া সংলগ্ন কয়েকটি এলাকায় ত্রিপল বিলি হয়েছে। এ দিন সকাল থেকে পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে ত্রাণ বিলি হচ্ছে। তবে বহু ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ এখনও ত্রাণ পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি সামলাতে এ দিন থানার পক্ষ থেকে কিছু ত্রাণ ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া হয়েছে। ধুলিয়াপাতার বাসিন্দা শেখ আবুল কাশেম বলেন, “আমার বাড়ির দু’টি ঘর ও একটি বারান্দার সমগ্র অংশের অ্যাসবেস্টসের ছাউনি উড়ে গিয়েছে। রাতে ত্রাণ না পেয়ে পরিবারের সাতজন পাশের বাড়িতে কাটিয়েছি। দুপুরে একটি ত্রিপল পেলাম। তবে এই ত্রিপলে একটি ঘরও ঢাকা যাবে না।”

স্থানীয় তৃণমূল নেতা শেখ জামশেদ বলেন, “শুক্রবার মাঝিপাড়ায় ত্রাণ দেওয়া হল। কিন্তু সবচেয়ে ক্ষতি হওয়া ধুলিয়াপাতায় ত্রাণ দেওয়া হয়নি। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে জানিয়েছি।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মালা দোলুই বলেন, “রাতে কিছু পরিবারকে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। সকাল থেকে ত্রাণ বিলি চলছে।”

খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে ত্রাণ বিলি করা হচ্ছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক।”

অন্য বিষয়গুলি:

Relief Titli তিতলি
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy