প্রতীকী ছবি।
ক্ষতিপূরণের আবেদন এবার সরাসরি জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে প্রশাসনিক দফতরে। আবেদন জমার জন্য কোনও রাজনৈতিক নেতার হাত ধরতে হবে না। ক্ষতিপূরণের টাকা একেবারে নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে চলে আসবে। ইয়াসের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসনের এমন পদক্ষেপে একই সঙ্গে খুশি এবং স্বস্তিতে নন্দীগ্রামের ক্ষতিগ্রস্তরা। খুশি ও স্বস্তির কারণ, এক বছর আগে আমপানের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে শাসক দলের নেতা-কর্মীদের একাংশের দুর্নীতি। যার ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও সরকারি ক্ষতিপূরণ জোটেনি অনেকের ভাগ্যে। যা নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। যার জন্য ক্ষতিপূরণ বণ্টনে স্বচ্ছতা আনতে এ বার তিনি সরাসরি ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা নেওয়া ও তা খতিয়ে দেখার কাজে সরাসরি প্রশাসনিক কর্তাদেরই নিযুক্ত করেছেন। যাকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী দলগুলিও।
গত বছর আমফানের আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে স্বজনপোষণ ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে বিক্ষোভ চরমে ওঠে। এমনকী ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বিরোধীদের অন্য়তম হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল আমপান-দুর্নীতি। কিন্তু এবার সরকারের ভূমিকা একেবারে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের চারটি পঞ্চায়েত এবং নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের দুটি পঞ্চায়েত ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এবং ভরা কটালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুগর্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে সরকার ‘দুয়ারে ত্রাণ’ শিবির চালু করেছে। ৪ জুন থেকে নন্দীগ্রাম ১ ব্লকে শিবির শুরু হয়েছে। ভেকুটিয়া, কেন্দেমারি জলপাই, কালিচরণপুর ও সোনাচূড়া এই চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রথম পর্যায়ে শিবির হয়ে গিয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে শিবির নির্দিষ্ট দিনে করা হবে বলে জানানো হয়েছে ব্লক অফিস থেকে।
এছাড়া বিডিও অফিসে গিয়ে সরাসরি সাদা কাগজে তথ্য-প্রমাণসহ আবেদন করতে পারবেন ক্ষতিগ্রস্তরা। এর জন্য কোনও রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। সোনাচূড়ার বাসিন্দা সুনীল মাইতি বলেন, ‘‘ইয়াসে যা ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা ভাবতে গিয়ে আমপানের কথা মনে পড়ছিল। ভেবেছিলাম ফের ক্ষতিপূরণের জন্য শাসক দলের নেতা-কর্মীদের হাতে-পায়ে পড়তে হবে। কিন্তু সরকার যে পদ্ধতি চালু করেছে তাতে স্বস্তি পাচ্ছি। মনে হচ্ছে এ বার ক্ষতিপূরণ পাব।’’
সরকারের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে বিরোধী শিবিরও। বিজেপির তমলুক জেলা সাংগঠনিক সহ-সভাপতি প্রলয় পাল বলেন, ‘‘ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত সরকারের তরফে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে তা দেখে ভাল লাগছে। আমাদের দাবি ছিল, আমপানের মতো যেন দুর্নীতি না হয়। তবে কারা কারা ইয়াসের ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন সে দিকে নজর রাখেছি। বেনিয়ম দেখলেই প্রতিবাদে আন্দোলনে নামব।’’ নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্বদেশ রঞ্জন দাস বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই কাজ হচ্ছে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতেই রাজ্য সরকার এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে।’’
নন্দীগ্রাম ১ এর বিডিও সুমিতা সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘দুয়ারে ত্রাণ-এর শিবিরে ব্লক প্রশাসনের তরফে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে। নজর রাখা হচ্ছে ক্ষতিপূরণের আবেদন করতে এসে মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy