ফাইল চিত্র।
আমপানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ করলেও প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ বাসিন্দারা। এমন মনোভাবের কারণ হিসাবে তাঁদের দাবি, মুখ খুললে শাসক দলের দাদাগিরির কোপে পড়তে হবে। আমপানে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে যখন ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে তখন এমনই ছবি ধরা পড়েছে হলদিয়া পুরসভায়।
আমপান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিপূরণের তালিকা নিয়ে বিস্তর গরমিল রয়েছে। শাসকদলের বিরুদ্ধে বারবার স্বজনপোষণ এবং তালিকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। বিরোধীদের অভিযোগ যে অমূলয় নয়, তার প্রমাণও মিলেছে। ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন পঞ্চায়েতে। পূর্ব মেদিনীপুরেও বিভিন্ন ব্লকে আমপান দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ মিছিল চলছে। দফায় দফায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানুষ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। অথচ বিক্ষোভ-প্রতিবাদের কোনও আঁচ নেই রাজ্য তথা জেলার শিল্পশহরের পুরএলাকায়। যদিও এখানেও আমপানের ক্ষতিপূরণের তালিকায় অনেক গোলযোগ রয়েছে বসে পুরবাসীর অভিযোগ। কিন্তু তার প্রতিবাদ বা প্রশাসনের কাছে কেউ অভিযোগ জানাচ্ছেন না কেন?
পুর এলাকার বাসিন্দাদের অনেকের মতে, এখানকার বাসিন্দাদের ৯০ শতাংশই চাকুরিজীবী। বেশিরভাগই বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত। আর প্রায় সব সংস্থাতেই রয়েছে তৃণমূলের দাদাগিরি। সে জন্য মনে ক্ষোভ থাকলেও তা কেউ প্রকাশ করতে পারছেন না। তুলনায় নন্দীগ্রাম বা মহিষাদল অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ কৃষিজীবী। অনেকের নিজস্ব ব্যবসা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতাদের দাদাগিরি সরাসরি তাদের মেনে চলতে হয় না। কিন্তু শিল্পশহরের ছবিটা আলাদা। এখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুললে চাকরি থেকে নানা কারণ দখিয়ে ছাঁটাইয়ের ভয় রয়েছে। রয়েছে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়। ফলে শেষপর্যন্ত পেটের টানই কার্যত শিল্পশহরে ‘অজাতশত্রু’ করে রেখেছে শাসক দল তথা তৃণমূলকে।
এর উদাহরণ, নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে ৫ জন পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ অন্তত ২০০ তৃণমূল নেতাকে আমপানে ক্ষতিপূরণের তালিকায় গরমিলের জন্য কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হলেও হলদিয়া পুরসভায় সেরকম কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। হলদিয়ার টাউন তৃণমূল সভানেত্রী মধুরিমা মন্ডলের যুক্তি, ‘‘পুরএলাকায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় কোনও গরমিল আছে বলে জানা নেই। কেউ যদি অভিযোগ করেন সেটা খতিয়ে দেরাখা হবে।’’ যা শুনে পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এই ওয়ার্ডেও আমপানের ক্ষতিপূরের তালিকায় দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু পদ চলে যাওয়ার ভয়ে নিয়ে কাউন্সিলার মুখ খুলতে সাহস পান না।’’ খোদ পুরপ্রধানের এলাকা ২৫ নম্বর ওয়ার্ডেও উঠেছে দুর্নীতির অভিযোগ। শাসক দলের ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ নিয়ে মধুরিমার দাবি, ‘‘বিরোধীরা চক্রান্ত করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’’
পুরবাসীর অভিযোগ, মধুরিমা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকায় গরমিল আছে কি না তা জানবেন কী করে। কারণ তিনি তো পুর এলাকায় থাকেন না। ঝড়ের পরেও দেখা যায়নি পুর এলাকায়। হলদিয়ার মানুষের ক্ষোভের কথাই বা তিনি জানবেন কী ভাবে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy