Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Patient

কার্নিসে রোগী, হাসপাতালে হুলুস্থুল

গত জুনে অপারেশন থিয়েটর থেকে পালিয়ে গিয়ে পাঁচতলা ভবনের কাঠের রেলিং ও শৌচাগারের পাইপ ধরে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচেছিলেন ‘অ্যালকোহল উইথড্রয়্যাল সিনড্রোম’-এর এক রোগী।

শৌচাগারের কার্নিসে সেই রোগী। —নিজস্ব চিত্র

শৌচাগারের কার্নিসে সেই রোগী। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০২০ ০১:২৩
Share: Save:

কয়েকদিন আগেই জেলা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তা যে যথেষ্ট নয়, ফের তা প্রকাশ্যে এল। শনিবার সকালে সুপার স্পেশালিটির তিনতলায় শৌচাগারের জানালার কার্নিসে এক রোগীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হুলুস্থূল বেধে যায়। মেল সার্জিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন বছর চল্লিশের টিংকর মণ্ডল শৌচাগারে গিয়েছিলেন। পরে তাঁকে ওই অপরিসর কার্নিসে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কখনও ‘ঝাঁপ দেব’ কখনও আবার ‘বাড়ি যাব’ বলে চেঁচাতে থাকেন তিনি। পরে পুলিশ ও হাসপাতালের কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। পরে তড়িঘড়ি তাঁকে ‘ছুটি’ও দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, এ দিন শৌচাগারে একজস্ট ফ্যান উপড়ে ফেলেন টিংকর। তারপরে ফোকর গলে কার্নিসে চলে যান। শৌচাগারের দরজা খোলা থাকলেও কারও নজরে পড়েনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শৌচাগারের ভিতরে কে, কী করছেন সেটা তো বোঝা সম্ভব নয়। হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল সরকার এই ঘটনা নিয়ে খোলসা করে কিছু বলতে চাননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘পরিজনেরা নিজ দায়িত্বে ওই রোগীকে ডিসচার্জ করিয়ে বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন।’’

ঝাড়গ্রাম ব্লকের চুবকা অঞ্চলের খালশিউলি গ্রামের হাটপাড়ায় টিংকরের বাড়ি। পেশায় তিনি কাঠের মিস্ত্রি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, পেটে ব্যথা নিয়ে গত বুধবার ভর্তি হন টিংকর। তাঁর ‘অ্যালকোহল উইথড্রয়্যাল সিনড্রোম’ দেখা দিয়েছিল। কিন্তু তাঁর উপর উপযুক্ত নজর রাখা হয়নি বলেই অভিযোগ। মেল সার্জিক্যাল ও উল্টোদিকের মেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন বেসরকারি সংস্থার মাত্র দু’জন কর্মী। এই ঘটনার পরে অবশ্য একজন নিরাপত্তার কর্মী বাড়ানো হয়েছে। এই ঘটনায় হাসপাতাল ভবনের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কীভাবে একজস্ট ফ্যান ভেঙে ফোকর গলে টিংকর বেরিয়েছিলেন তা জানতে তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। শৌচাগারের একজস্ট ফ্যানের ফোকরের বাইরে গ্রিলের ঘেরাটোপ দেওয়া হবে বলেও খবর।

গত জুনে অপারেশন থিয়েটর থেকে পালিয়ে গিয়ে পাঁচতলা ভবনের কাঠের রেলিং ও শৌচাগারের পাইপ ধরে পালানোর চেষ্টা করতে গিয়ে অল্পের জন্য বেঁচেছিলেন ‘অ্যালকোহল উইথড্রয়্যাল সিনড্রোম’-এর এক রোগী। এ দিন টিংকরের অবশ্য দাবি, ‘‘ওয়ার্ডের দরজায় থাকা সিকিউরিটি বাড়ি যেতে দিচ্ছিল না। তাই কী যে করেছি মনে নেই।’’ টিংকরের স্ত্রী অনিতা বলেন, ‘‘সম্পর্কিত এক ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে উনি বাড়ি যাওয়ার জন্য এমন কাণ্ড করেছেন। ওঁর মাথার ঠিক নেই।’’ তবে অনিতা মানছেন, স্বামী নেশা করেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Patient Jhargram Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE