প্রতীকী ছবি
পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তা উদ্বোধনে এলেন না বিধায়ক। উপস্থিত থাকতে দেখা গেল না ব্লক প্রশাসনের কতার্দেরও। ফলে বন্ধ রইল প্রকল্প উদ্বোধন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়ার ভয়ে রাস্তা উদ্বোধন করতে আসেননি বিধায়ক, দাবি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের।
ভগবানপুর-১ ব্লকের গোয়ালাপুকুর থেকে শিলাখালি পর্যন্ত বেহাল মোরাম রাস্তা নিয়ে এক সময় এলাকার মানুষের যন্ত্রণার শেষ ছিল না। ২০১২ সালে কেলেঘাই নদী সংস্কারের কাজ শুরু করে সেচ দফতর। সেই সময় নিজেদের ব্যবহারের সুবিধার্থে ওই রাস্তা পাকা করে। কেলেঘাই নদী সংস্কারের কাজ শেষে সেচ দফতর এলাকা ছেড়ে চলে যায়। চণ্ডীপুর বিধানসভার মধ্যে এই পাকা রাস্তা পেয়ে মানুষ ভেবেছিলেন দীর্ঘদিনের পথ যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেলেন। এলাকায় বেশ কয়েকটি ইটভাটা থাকায় প্রতিদিন ওই পথে লরি সহ একাধিক মাল বহনের গাড়ি যাতায়াত শুরু করে। তাতেই দেখা দেয় বিপত্তি। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এক সময়ের সেই পাকা রাস্তা এখন খানা খন্দে বেহাল। কিন্তু চার কিলোমিটার এই রাস্তা দিয়ে সহজেই কেলেঘাই নদী পেরিয়ে ময়না ও ট্যাংরাখালি পৌঁছে যাওয়া যায়। ফলে যাতায়াতের সুবিধা থাকায় প্রচুর মানুষ এই রাস্তাই ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এলাকার মানুষ একাধিক বার রাস্তা মেরামতির দাবিতে পথ অবরোধ করেছে। এমনকী পঞ্চায়েত সমিতির কাছে আবেদনও জানিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, বার বার শুধু আশ্বাসই মিলেছে। পঞ্চায়েত সমিতির অবশ্য দাবি, তাদের তরফেও জেলা পরিষদে ওই রাস্তা সারানোর আবেদন করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, জেলা পূর্ত দফতরের নকশায় ওই রাস্তার অস্তিত্ব নেই। এই কারণে জেলা পরিষদ রাস্তা মেরামতির দায় নিতে অস্বীকার করে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যজুড়ে রাস্তা তৈরি ও মেরামতির পথশ্রী প্রকল্পে ঠাঁই হয় এই রাস্তার।
সূচি মেনে গত ১৩ অক্টোবর পথশ্রী প্রকল্প অনুষ্ঠানে চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্য ও ব্লক প্রশাসনের উপস্থিতিতে এই রাস্তা উদ্বোধনের কথা ছিল। অভিযোগ রাস্তা উদ্বোধন করতে আসেনি বিধায়ক থেকে ব্লক প্রশাসনের কোনও আধিকারিক। পথশ্রীতে রাস্তার কাজের সূচনা না হওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে ওই রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় এলাকার মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। তাই বিক্ষোভের মুখে পড়ার ভয়ে বিধায়ক পথশ্রী প্রকল্পের উদ্বোধন এড়িয়ে গেলেন।
প্রসঙ্গত, কয়েক দিন আগে নন্দীগ্রামে রাস্তার দাবি শেতে পথশ্রী প্রকল্প উদ্বোধনের সরকারি মঞ্চ ভেঙে বিক্ষোভ দেখান বাসিন্দারা। সেখানেও ছিল দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়েও রাস্তা সংস্কার না হওয়ার কারণে ক্ষোভ।
তৃণমূল পরিচালিত ভগবানপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ দেবোপম প্রধান বলেন, ‘‘একাধিক বার জেলা পরিষদে রাস্তা সারানোর দাবি জানিয়েছি। রাস্তা নিয়ে মানুষের দুর্দশনার শেষ নেই। ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা। এলাকার মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়া এড়াতেই বিধায়ক প্রকল্প উদ্বোধন করতে আসেননি।’’ মুখ্যমন্ত্রীর তথা সরকারি প্রকল্পে বিধায়কের না থাকা নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে।
যদিও নিজের অনুপস্থিতি নিয়ে চণ্ডীপুরের বিধায়ক অমিয়কান্তি ভট্টাচার্যর জবাব, ‘‘অনুষ্ঠান বাতিল করার কারণে ওই রাস্তা উদ্বোধনে যাইনি। মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়ার ভয়ে যায়নি এমন অভিযোগ একেবারেই ভিত্তিহীন।’’ বিজেপির ভগবানপুর-১ পূর্ব মণ্ডল সভাপতি রমেশ মাইতি অবশ্য বলছেন, ‘‘বিধায়ক এই এলাকায় মানুষের জন্য কিছু কাজ করেননি। সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy