মলম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বর্ণা পানিভারিয়া। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য পঞ্চায়েত প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন। তারপরেই এলাকাবাসীর দুয়ারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন বর্ণা পানিভারিয়া। ঝাড়গ্রামের নয়াগ্রাম ব্লকের মলম গ্রাম পঞ্চায়েতের নবনির্বাচিত তৃণমূল প্রধান বর্ণার এমন সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছে তার দলও। কাল সোমবার (২৮ অগস্ট) থেকে শুরু হচ্ছে বর্ণার ‘দুয়ারেপ্রধান’ কর্মসূচি।
২০১৮ সালে প্রথমবার কলমাপুকুরিয়া পূর্ব গ্রাম সংসদ থেকে নির্বাচিত হন স্বল্প বয়সী বর্ণা। গত বার প্রধান পদে তাঁর নাম আলোচনায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত অন্য এক মহিলা প্রধান হন। তবে এবার বছর সাতাশের বর্ণাকেই প্রধান করার বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দেয় তৃণমূল। মলম গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯টি আসনের মধ্যে এবার সাতটিতে জিতেছে তৃণমূল। বাকি দু’টি আসন বিজেপি পেয়েছে। শাসকদলের নির্বাচিত সাতজনের মধ্যে বর্ণা বাদে বাকি ৬ জনই এবার নতুন মুখ। তৃণমূল সূত্রের খবর, বিগত পাঁচ বছর পঞ্চায়েত সদস্য থাকার কারণেই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বর্ণাকে এবার প্রধান করা হয়েছে।
কলমাপুকুরিয়ার বাসিন্দা বর্ণা জঙ্গলের শালপাতা এনে মরসুমে বিক্রি করেন। স্বামী, দুই মেয়ে ও শ্বশুর শাশুড়িকে নিয়ে তাঁর সংসার। স্বামী দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করেন। নিপাট অতি সাধারণ পরিবারের বধূ বর্ণার পর্যবেক্ষণ, মানুষের কাছে সরাসরি গিয়ে অভাব-অভিযোগ শুনে সেই মত উন্নয়নের কাজটা সঠিক ভাবে করা যায়। গত ১০ অগস্ট প্রধান পদে নির্বাচিত হন তিনি। গত শুক্রবার প্রধানের দায়িত্বভার নিয়েই দলকে জানিয়ে দেন, দুয়ারে প্রধান কর্মসূচি শুরু করতে চান। বর্ণা বলছেন, ‘‘সোমবার থেকে শুক্রবার প্রতিদিন সকালে এলাকার কোনও একটি গ্রামে গিয়ে বাসিন্দাদের কথা শুনব। তাঁরা কি চান, এলাকায় এখনও কী কী কাজ করা প্রয়োজন, কোনও কাজ বকেয়া আছে কি না— খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’
জানা গিয়েছে, প্রতিদিন পঞ্চায়েত অফিসে যাওয়ার আগে দুয়ারে কর্মসূচি করবেন ওই প্রধান। যে দিন যে এলাকায় যাবেন, সেখানকার বাসিন্দাদের আগাম জানিয়ে রাখা হবে। সকাল ৮ টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ওই কর্মসূচি সেরে তারপর পঞ্চায়েত কার্যালয়ে তিনি বসবেন। উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ বর্ণার বাবার বাড়ি গোপীবল্লভপুরের ভোলামহুলি গ্রামে। তিনি জানাচ্ছেন, এখনও এলাকায় বেশ কিছু রাস্তার কাজ করতে হবে। সুবর্ণরেখা নদী ভাঙনের সমস্যা রয়েছে এলাকায়। যদিও পঞ্চায়েতের সীমিত ক্ষমতায় নদীভাঙন রোধের কাজ সম্ভব নয়। তবে নদী ভাঙন রোধে কোথায় কোথায় অবিলম্বে কাজ করা প্রয়োজন সে বিষয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমে জেলা পরিষদে রিপোর্ট পাঠাতে চান বর্ণা।
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মানছেন, রাজ্যের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল সাফল্য এসেছে। বর্ণার এমন ভাবনার বাস্তবায়ন হলে এলাকার মানুষের সঙ্গে সরাসরি পঞ্চায়েত প্রধানের যোগাযোগ তৈরি হবে। ব্লক তৃণমূলের সহ সভাপতি তথা জেলা পরিষদের নবনির্বাচিত সদস্য সুমন সাহু মলম অঞ্চলের বাসিন্দা। সুমন বলছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী তাঁর সরকারকে মানুষের দুয়ারে পাঠিয়েছেন। এবার পঞ্চায়েতের প্রধানও মানুষের দুয়ারে যাবেন।’’ জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি প্রসূন ষড়ঙ্গী বলছেন, ‘‘মানুষের কাজ করার জন্য ওই প্রধান খুব ভালউদ্যোগ নিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy