প্রতীকী ছবি।
রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অধীনে ‘গ্রাহক সেবাকেন্দ্র’ চালু করে আমানতকারীদের জমা দেওয়া ৫ কোটিরও বেশি টাকা প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হল এক ব্যক্তি। মেচেদার খানজাদাপুর এলাকার বাসিন্দা অমিত সাহু নামে ওই অভিযুক্তকে গুজরাতের আমদাবাদ থেকে গ্রেফতার করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সিআইডি।
গত ৩ সেপ্টেম্বর অমিতকে গ্রেফতারের পরে আমেদাবাদের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ‘ট্রানজিট রিমান্ডে’ তমলুকে নিয়ে আসা হয়। মঙ্গলবার ধৃতকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা আদালতের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে তোলা হলে আট দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ গিয়েছেন বিচারক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের (ইউকোব্যাঙ্ক)অধীনে মেচাদা বাজার সংলগ্ন শ্রীকৃষ্ণপুর গ্রামে ও বুড়ারি বাজারের কাছে পোনান গ্রামে দু’টি গ্রাহক সেবাকেন্দ্র (কাস্টমার সার্ভিস পয়েন্ট) চালাতেন অমিত। ওই গ্রাহক সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে স্থানীয়রা ওই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা জমা ও তোলার কাজ চালাতেন। প্রায় ৮ বছর ধরে অমিত ওই ব্যাঙ্কের লেনদেন চালাচ্ছিলেন। চলতি বছরের প্রথমদিকে ভিন্ রাজ্যে থাকা পোনান গ্রামের এক বাসিন্দা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা আকাউন্টে জমা পড়েনি বলে অভিযোগ। ঘটনা জানাজানি হওয়ায় এলাকার অন্যান্য গ্রাহকেরা বাসিন্দারা ওই গ্রাহক সেবাকেন্দ্রের মাধ্যমে ব্যাঙ্কে টাকা জমা পড়েছে কিনা ব্যাঙ্কের মেচেদা শাখায় তার খোঁজ নিতে যান। তখনই গ্রাহকরা জানতে পারেন গ্রাহক সেবাকেন্দ্রের জমা দেওয়া টাকার চেয়ে অনেক কম টাকা জমা পড়েছে। প্রতারিত গ্রাহকরা ব্যাঙ্কের মেচেদা শাখায় ও গ্রাহক সেবাকেন্দ্রে টাকা ফেরতের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান।
গত মে মাসে অমিতের বিরুদ্ধে তমলুক ও কোলাঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন প্রতারিত গ্রাহকদের একাংশ। তারপরেই বেপাত্তা হয়ে যান অমিত। তমলুক থানার পুলিশ অমিত-সহ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। তদন্ত ভার নেয় সিআউডি। অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি শুরু হয়। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে জেলা সিআইডির একটি দল অমিতকে ধরতে কিছুদিন আগে আমেদাবাদ রওনা দেয়। সেখানে অধাব থানার ভবানীনগর এলাকায় হানা দিয়ে ৩ সেপ্টেম্বর অমিতকে গ্রেফতার করে তারা। ট্রানজিট রিমান্ডে সোমবার রাতে অমিতকে তমলুকে আনা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অমিত সহ কয়েক জন ভুয়ো সংস্থা খুলে ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেবাকেন্দ্র চালানো ছাড়াও বিভিন্ন আর্থিক পরিষেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা জমা নিতেন। গ্রাহকদের বিশ্বাস অর্জনের জন্য কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্যাঙ্কের ‘পাশবই’ও আপডেট করে দিতেন। যদিও গ্রাহকদের জমা দেওয়া টাকার মোটা অংশ ব্যাঙ্কে জমা পড়ত না বলে জানা গিয়েছে। এভাবে অমিতরা কয়েক হাজার মানুষকে ৫ কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে সিআইডি। প্রতারণায় জড়িত অন্যদের ধরতে তল্লাশি চলছে।
পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘মেচেদা এলাকায় একটি ব্যাঙ্কের গ্রাহক সেবাকেন্দ্র চালানোয় যুক্ত কয়েক জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সিআইডি অভিযোগের তদন্ত করছে। একজন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের ধরতে তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy