প্রতীকী ছবি
সম্পত্তি লিখে দিতে রাজি হননি। সেই ‘অপরাধে’ এক বৃদ্ধ শ্বশুরকে অভুক্ত অবস্থায় ঘরে তালাবন্দি করে রাখার অভিযোগ উঠল পুত্রবধূর বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে বিডিও’র তৎপরতায় পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করল ওই বৃদ্ধকে। শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ভগবানপুর থানার কোটবাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের আসুটিয়া গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, আসুটিয়া গ্রামে বাসিন্দা অশীতিপর বৃদ্ধ ফণিভূষণ জানার দুই ছেলে রাধাগোবিন্দ এবং অরবিন্দ। বিয়ের পরে তাঁরা বৃদ্ধের বাড়িতেই আলাদা আলাদা থাকেন। বৃদ্ধ একাই আলাদাভাবে রান্না করেন গত কয়েক বছর ধরে। রাধাগোবিন্দ শ্রমিকের কাজ বাইরে থাকেন। অরবিন্দ সেনাকর্মী। তিনিও বাইরে থাকেন। ফণিভূষণের বেশ কয়েক বিঘা জমি রয়েছে। অভিযোগ, ওই সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য বৃদ্ধকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই বাড়িতে অশান্তি হত।
গত শুক্রবার রাতে ফের সম্পত্তি নিয়ে ছোট বৌমার সঙ্গে ফণিভূষণের ঝগড়া বাঁধে। অভিযোগ, এর পরেই রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ওই মহিলা বৃদ্ধ শ্বশুরকে ঘরে ঢুকিয়ে তালা দিয়ে দেন। সে সময় প্রতিবেশীরা এসে তাঁকে তালা খুলে দেওয়ার অনুরোধ করলেও, তিনি কথা শোনেননি। বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীরা ছেলেদের বৃদ্ধ বাবার ‘বন্দিদশার’ কথা ফোনে জানান। তাতেও সুরাহা হয়নি। অভিযোগ, সারা রাত খাবার এবং জল ছাড়াই তালা বন্দি অবস্থায় রাত কাটান ফণিভূষণ। এ ব্যাপারে এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘বৃদ্ধ শ্বশুরের উপর এমন অমানবিক আচারণ কেউ কী করতে পারেন?’’
খবর পেয়ে এ দিন সকালে এলাকায় যান স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য। তাতেও কাজ হয়নি। এর পরে শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ ভগবানপুর-১ এর বিডিও পঙ্কজ কোনার খবর পেয়ে ভগবানপুর থানার পুলিশকে পাঠায় ফণিভূষণের বাড়িতে। তারা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। ফণিভূষণ আপাতত সুস্থ রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার রাতে থেকে কিছু খেতে পাইনি। প্রশাসন যেন আমাদের মতো বৃদ্ধদের পাশে থাকে। ছেলে-বৌমারা ভুল করে হয়তো এই কাজ করেছে। আমি কোথাও অভিযোগ জানাব না।’’ শ্বশুর না হয় অভিযোগ জানাবেন না বলছেন, কিন্তু তিনি এমন কাজ করলেন কেন? এ ব্যাপার ফণিভূষণের ছোট বৌমাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।
ফণিভূষণ কোনও অভিযোগ দায়ের না করায় পুলিশ আপাতত অভিযুক্ত বৌমাকে সতর্ক করে ছেড়ে দিয়েছে। ভগবানপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধ অভিযোগ জানাতে রাজি হননি। প্রাথমিক ভাবে ওই মহিলাকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তী ক্ষেত্রেও এ বিষয়ে তাদের নজরে থাকবে।
গোটা ব্যাপারে ভগবানপুর-১ এর বিডিও পঙ্কজ কোনার বলেন, ‘‘দুপুরে বৃদ্ধের তালা বন্দি থাকার কথা জানতে পারি। পুলিশ পাঠিয়ে ওঁকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃদ্ধের কোন সমস্যা থাকলে প্রশাসনিক ভাবে সহযোগিতা
করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy