এই পোস্টার পড়েছে। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য রাজনীতিতে যে নন্দীগ্রামে জমি-আন্দোলন তৃণমূলের ভিত শক্ত করেছিল, অন্দোলনের সেই আঁতুড়ঘরেই এবার কাটমানি-তিরে বিদ্ধ শাসকদল। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সাউথখালি এলাকায় শুক্রবার তৃণমূলের স্থানীয় ১১ জন নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি পোস্টার পড়েছে। যা নিয়ে সরগরম এলাকা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের অদূরে জনবহুল জায়গায় একাধিক পোস্টার সাঁটানো রয়েছে। কালোরায় প্রাথমিক স্কুলের দেওয়াল, স্থানীয় এক রেশন ডিলারের বাড়ির কাছে, মনসা মোড়, জানা পোস্তার মোড় এলাকায় এমন বহু পোস্টার লাগানো হয়েছিল বলে জানাচ্ছেন স্থানীয়েরা। ওই সব পোস্টারে ১১ জন তৃণমূল নেতাকে সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি সমস্ত কাটমানি ফেরত দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
অভিযুক্তেরা হলেন, সোনাচূড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ২৬২ নম্বর বুথের প্রশান্ত সামন্ত, ২৬৩ নম্বর বুথের ঝুনা মাজি, অমল দাস, দীপক দাস, ২৬৪ নম্বর বুথের হারাধন ঘোড়াই, শ্রীকান্ত করণ, সুরজিৎ বেরা, সন্তু মাজি এবং ২৬৫ নম্বর বুথের সুকান্ত দুয়ারী, প্রমথ মান্না ও প্রশান্ত পাল। এঁরা এলাকায় বুথস্তরের তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত। পোস্টারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই এ দিন শাসকদলের স্থানীয় কর্মীরা ওই সব পোস্টের ছিঁড়ে দেন বলে অভিযোগ।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কাটমানি ফেরতের নির্দেশ দেওয়ার পরেই জেলার একাধিক জায়গায় কাটমানি সংক্রান্ত এমন পোস্টার সামনে আসছে। তবে নন্দীগ্রামে কাটমানি পোস্টার পড়ার আগেও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে। তাঁর পেল্লায় ‘জাহাজ-বাড়ি’ কাটমানির-ফসল বলে সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল। অতীতে সভা করতে এসে এই ‘জাহাজ বাড়ি’ নিয়ে সুফিয়ানকে ‘ধমক’ দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রীও।
এবারের কাটমানি পোস্টার প্রসঙ্গে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা সুকান্ত দুয়ারী অবশ্য এটি বিরোধীদের কাজ বলেই দাবি করেছেন। নিজেকে সোনাচূড়া অঞ্চল তৃণমূলের সম্পাদক দাবি করে তিনি বলেন, ‘‘যেহেতু মুখ্যমন্ত্রী কাটমানি নিয়ে বলেছেন, তাই সব জায়গাতেই বিতর্ক তৈরি করতে চাইছে বিরোধীরা। যারা এ ধরনের কোনও ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন, তাঁদের নামেও পোস্টার ফেলে এলাকায় রাজনৈতিক ক্ষমতা বাড়াতে চাইছে বিরোধীরা।’’
এ ব্যাপারে বিজেপি’র জেলা সভাপতি (তমলুক) নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘যাঁরা পোস্টার দেওয়ার পিছনে বিরোধীদের হাত দেখছেন, তাঁদের পেল্লাই বাড়ি কোথা তেকে এল? তাঁদের বিরুদ্ধেই কাটমানি ফেরত দেওয়ার জন্য পোস্টার দেবে বলে জনগণ প্রস্তুত হচ্ছেন।’’ পোস্টার-কাণ্ডে বিরোধীদের হাত নেই বলে দাবি নন্দীগ্রামের সিপিএম নেতা মহাদেব ভুঁইয়ার। তাঁর দাবি, ‘‘এলাকায় বিরোধীরা আট বছর ধরে অত্যাচারিত। তাদের এ ধরনের পোস্টার দেওয়ার সাহস হবে না। আসলে এটা ওদের দলেরই একাংশ জনসমক্ষে আনতে চেয়েছে।’’
নন্দীগ্রামের পোস্টারের বিষয়ে ব্লক তৃণমূল নেতা প্রণব মহাপাত্র বলেন, ‘‘যাঁদের নামে পোস্টার পড়েছে, তাঁরা দলে কোনও নেতা নন। তাই এতে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy