প্রতীকী ছবি।
এগারো দিন পরেই মাধ্যমিকের টেস্ট। হস্টেলের আবাসিক ছাত্রীরা স্কুলের বারান্দায় প্রতি সন্ধের মতোই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ছিল। টিউশন শেষেও নিজেদের মতো করে চলছিল পড়াশোনা। হঠাৎই সেই দল থেকে উঠে চলে যায় দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। ঘণ্টা খানেক পরেও না ফেরায় শুরু হল খোঁজ। শেষে হস্টেলের দোতলা ভবনের চিলেকোঠায় কড়িকাঠে গামছার ফাঁসে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল ওই ছাত্রীর দেহ।
বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সবংয়ের ভেমুয়া বালিকা বিদ্যালয়ে। মৃত ছাত্রী পল্লবী দত্ত (১৬)-এর বাড়ি ডেবরার বালিচকে। সে থাকত স্কুলের হস্টেলে। তবে বুধবার দিনভর, এমনকী গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ার সময়ও পল্লবীর মধ্যে কোনও অস্বাভাবিক আচরণ দেখেনি তার সহপাঠীরা। তাই এই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট নয়। স্কুল কর্তৃপক্ষ, সহপাঠী ও পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, আত্মঘাতী হয়েছে পল্লবী। যদিও হস্টেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছেন পল্লবীর মা অষ্টমী দত্ত। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পেলে মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে তা বলা যাবে না।”
স্কুল সূত্রে খবর, ২০ নভেম্বর থেকে মাধ্যমিকের টেস্ট থাকায় চাপ বাড়ছিল। পুজোর ছুটির পরে গত ২৪ অক্টোবর হস্টেলে ফিরে আসে পল্লবী। হস্টেলের তিন সুপারের মধ্যে পূজা চক্রবর্তী বলেন, “গত ২৪ অক্টোবর পল্লবী বাড়ি থেকে হস্টেলে আসতে চাইছিল না বলে ওঁর মা আমাকে ফোনে জানিয়েছিলেন। তারপর ওই দিনই বিকেলে পল্লবী হস্টেলে এলেও বেশ শান্ত হয়ে গিয়েছিল। গত সোমবার ওঁর মা-বাবা দেখা করতে এসেছিলেন। অনেক ডাকাডাকির পরে মায়ের সঙ্গে দেখা করে সে।” তবে গত দু’দিন পল্লবী স্বাবাবিকই ছিল। পল্লবীর সহপাঠী পায়েল দাস বলে, “এই ক’দিন পল্লবী স্বাভাবিক ছিল। কোত্থেকে কী হল বুঝতে পারছি না।” হস্টেল সুপার সোনালি মণ্ডল বলেন, “হস্টেল ফাঁকা ছিল। পড়ার জায়গা থেকে উঠে পল্লবী কোনও কারণে হস্টেলে গিয়েছিল। তারপরে আমরা ওঁকে দেখতে না পেয়ে খোঁজ শুরু করি। আমাদের ধারণা ও আত্মঘাতী হয়েছে।” স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি ব্রজেন প্রধানেরও বক্তব্য, “পরিকল্পনা করেই ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অনুমান।” কিন্তু কেন পল্লবী আত্মহত্যা করল তা স্পষ্ট নয়। পল্লবীর জেঠতুতো দাদা শ্যামল দত্ত বলেন, “টিউশনে বোনকে মারধর করা হয়েছিল। তাতেই মৃত্যু হয়েছে।” যদিও পল্লবীর মা থানায় যে লিখিত অভিযোগ করেছেন, তাতে এমন অভিযোগের উল্লেখ নেই। এমন ঘটনা ঘটেছে বলে জানায়নি টিউশনে হাজির পল্লবীর সহপাঠীরাও। আর স্কুলের টিচার ইন-চার্জ সবিতা মাহাতো রায় বলেন, “ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে যেটুকু জেনেছি, তাতে পুজোর ছুটিতে বাড়িতে টিভি দেখা নিয়ে পল্লবীর সঙ্গে ওঁর মায়ের কোনও গোলমাল হয়েছিল। বাড়ি থেকে হস্টেলে ফিরে ও অনেক শান্ত হয়ে গিয়েছিল। এ সব কারণে ও আত্মঘাতী হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy