বিজেপি নেতা খুনের ঘটনায় সব মিলিয়ে সাত জন গ্রেফতার হলেন। নিজস্ব চিত্র।
পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়া খুনে রাজনৈতিক চাপান-উতোর অব্যাহত। সেই ঘটনায় সোমবার আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে ময়না থানার পুলিশ। তাঁদের নাম শ্যামপদ মণ্ডল, মধুসূদন সাউ, সাগর মণ্ডল। ধৃতদের সোমবার তমলুক আদালতে হাজির করানো হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের পুলিশি হেফাজতের আবেদন করা হবে। বিজেপি নেতা খুনের ঘটনায় এই নিয়ে সব মিলিয়ে সাত জন গ্রেফতার হলেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, বিজয়কৃষ্ণ খুনে শাসক তৃণমূলের ৩৪ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের নাম সেই অভিযোগপত্রে রয়েছে। এই মামলায় আগে গ্রেফতার হয়েছেন স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য মিলন ভৌমিক। এর পর শনিবার গ্রেফতার করা হয় গোড়ামহল গ্রামেরই বাসিন্দা নন্দন মণ্ডল এবং সুজয় মণ্ডল নামে দুই তৃণমূল কর্মীকে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উঠে আসে সুব্রত মণ্ডলের নাম। খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। বাকিদের মতো সুব্রতের নাম অবশ্য অভিযুক্তদের তালিকায় ছিল না।
বিজয়কৃষ্ণের পরিবারের অভিযোগ, গত সোমবার বিকেল ৫টা নাগাদ তাঁকে স্ত্রী এবং ছেলের সামনে থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় এক দল দুষ্কৃতী। আরও অভিযোগ, বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত হন বিজয়ের স্ত্রী লক্ষ্মী এবং ছেলে সুরজিৎ। পরে বিজয়ের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ির কাছে পুকুরপাড় থেকে। এই ঘটনায় বিজয়ের স্ত্রী ময়না থানায় ৩৪ জন স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা পুলিশ সূত্রে দাবি, মামলায় জড়িত বাকি অভিযুক্তদেরও শীঘ্রই গ্রেফতার করা হবে।
পুলিশের এই তৎপরতাকে অবশ্য নিছকই নজর ঘোরানোর চেষ্টা বলে দাবি করছে বিজেপি। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি আশিস মণ্ডল বলেন, “পুলিশের সদিচ্ছার অভাব আছে, এটা বোঝা যাচ্ছে। আমরা সিবিআই তদন্তের দাবি থেকে সরছি না। বাকচাকে প্রতিনিয়ত অশান্ত করার চেষ্টা চলছে। এখনও দুষ্কৃতীরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা আইনের উপর ভরসা রাখি। কিন্তু এই পুলিশের দ্বারা কিছুই হবে না। ঘটনার দিন পুলিশের ভূমিকাও সন্দেহজনক ছিল। তাই কেন্দ্রীয় এজেন্সি ছাড়া প্রকৃত দোষীরা ধড়া পড়বে না বলেই আমরা আশঙ্কা করছি।”
বিজেপির বক্তব্য অমূলক বলে দাবি করছে শাসক তৃণমূল। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “বাকচাকে অশান্ত করে রাখাটাই বিজেপির আসল উদ্দেশ্য। এই এলাকায় তৃণমূল কর্মীদের উপর বারেবারেই হামলা হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা জুড়ে আদি বনাম নব্য বিজেপির লড়াই চলছে। ময়নাও তার ব্যতিক্রম নয়। বিজয়ের মৃত্যুকে হাতিয়ার করে গোটা জেলা জুড়ে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy