জামাইষষ্ঠীতে শ্বশুরবাড়ির পথে। বুধবার পাঁশকুড়ায়। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
লকডাউনের ছায়ায় জামাইষষ্ঠী।
দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতিতে জামাইষষ্ঠীতে জামাই বরণ কী ভাবে হবে তা নিয়ে ভেবে কুল পাচ্ছেন না শাশুড়িরা। এতদিন জামাই বরণে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পাল্টেছে আদর-আপ্যায়নের রকম। আগের মতো শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে নানা রকম ব্যঞ্জন খাওয়ার সময় এই ব্যস্ততার যুগে খুব বেশি হয়ে ওঠে না। তার উপর বেসরকারি চাকুরে জামাই হলে আরও সমস্যা। জামাইষষ্ঠী খাওয়ার ছুটি পাওয়া মুশকিল। অগত্যা ছুটির দিন দেখে আয়োজনের ব্যবস্থা। আবার বাড়িতে জামাইষষ্ঠীর বদলে এখন আবার অনেকের পছন্দ বাইরে রেস্তোরাঁয় খাওয়া। জামাইয়ের আবদার রাখতে তাতেও রাজি শাশুড়িরা। কিন্তু এতদিনকার এই সব ছবি এ বার পাল্টে দিতে চলেছে করোনা।
একে লকডাউনের জেরে যান চলাচল এখনও স্বাভাবিক হয়নি। তার উপর জমায়েতে নিষেধ রয়েছে। কারণ করোনা সংক্রমণের ভয়। আবার দূরদেশ থেকে জামাই এলে আবার তাকে চলে যেতে হবে ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে। ফলে শাশুড়ির মাথায় হাত। জামাইয়েরও বেচারা অবস্থা। এই অবস্থায় দু’তরফেই চলছে মনকে সান্ত্বনা দেওয়ার পালা, আগে তো প্রাণটা বাঁচুক। তার পর না হয় দেখা যাবে।
কাঁথি শহরের উত্তর দারুয়া এলাকার শঙ্কর ভুঁইয়া। প্রতি বছর তিন জামাইকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান এবছরও ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু আনাজ বাজার মোটামুটি খোলা থাকলেও, মাছ এবং অন্যান্য উপহার সামগ্রীর দোকান বন্ধ। তাই আপ্যায়ন কী ভাবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। শঙ্করের কথায়, ‘‘জামাইরা কাছাকাছি থাকে। তাই ডাকতে ভরসা পেয়েছি। কারণ করোনার কথা মাথায় রাখতে হচ্ছে। আবার প্রথা ভাঙতেও মন চাইছে না। তবে নিয়মমতো যতটা পারি আয়োজন করছি।’’ কাঁথি-৩ ব্লকের রানিয়া গ্রামের তপন মান্না। তিনি বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণের ভয়ে বাড়ি থেকে খুব একটা বের হচ্ছি না। তাই শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে জামাইষষ্ঠী খাওয়া সম্ভব নয় জানিয়ে দিয়েছি।’’
তবে এর মধ্যেও যাঁরা আয়োজন করছেন তাঁরাও স্বস্তিতে নেই। লকডাউনের কারণে বাজরে ইলিশ, পমফ্রেট, বাউল, চিতলের মতো সুস্বাদু মাছের। তার উপর অগ্নিমূল্য বাজারদর। দিঘা ফিশারমেন অ্যান্ড ফিশ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামসুন্দর দাস বলেন, ‘‘নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই এবছর মাছ ধরার মরসুম শেষ হয়েছে। তা ছাড়া হিমঘরে যে সব ইলিশ মজুত থাকে, তাও এবছর বের করেনি ব্যবসায়ীরা। তাই এমন পরিস্থিতি। ’’
তবে জামাইয়ের পছন্দের মাছ না পেলেও খাসি কিংবা মুরগির মাংস দিয়েই জামাই আদরে নেমে পড়েছেন শাশুড়িরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy