দুয়ারে সরকার শিবির খেজুরির কলাগাছিয়া হাইস্কুলে শুক্রবার দুপুরে। ছবি শুভেন্দু কামিলা।
শুরু হয়েছে সপ্তম দফার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। শিবিরে এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তিতে জোর দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রথম দিনের তথ্য-পরিসংখ্যান বলছে, সেই লক্ষ্য কিছুটা হলেও হোঁচট খেয়েছে!
শুক্রবার জেলার ২২৩টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পুরসভা এলাকায় বসেছে দুয়ারের সরকারের শিবির। অন্যবারের মতো এবারও শিবিরে লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে আর্জি জানাতে ভিড় করছেন জেলাবাসী। কিন্তু এবার পরিযায়ী শ্রমিকদের নথিভুক্তকরণ এবং বার্ধক্য ভাতার আবেদন জমার জন্য বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রথম দিনে শিবির আসা পরিযায়ী শ্রমিক বা তাঁদের পরিবারের লোকজনের সংখ্যা আশানুরূপ হয়নি বলে খবর জেলা প্রশাসন সূত্রে। অভিযোগ, আবেদন পত্রে চাওয়া বিভিন্ন তথ্যের অভাবে অনেক শ্রমিক আবেদনপত্র জমা দিতে পারেননি।
এদিন তমলুক ব্লকের পিপুলবেড়িয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪টি জায়গায় এবং তমলুক পুরসভা অফিসের মহেন্দ্র স্মৃতি সদনে আয়োজিত দুয়ারে সরকার শিবিরের আয়োজন করা হয়। পুর এলাকায় ১ থেকে ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দাদের জন্য শিবির করা হয়েছিল। ওই দুই এলাকার শিবিরে গিয়ে দেখা গিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিক নথিভুক্তকরণ বিভাগে খুব বেশি পরিযায়ী শ্রমিকের আনাগোনা ছিল না। শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে নথিভুক্তকরনের জন্য ছ’টি আবেদন জমা পড়েছে। এ দিন শিবিরে এসেছিলেন বাড়খোদা গ্রামের জালালুদ্দিন নায়েক, মহম্মদ নায়েক। দু’জনেই বেঙ্গালুরুতে ঠিকাদাদের অধীনে টাইলসের কাজ করেন। মহম্মদ বলেন, ‘‘আট বছর ধরে বেঙ্গালুরুতে কাজ করছি। পঞ্চায়েত ভোটের সময় এসেছিলাম। ফের কাজে যাওয়ার আগে শুনলাম আমাদের মত শ্রমিকদের জন্য রাজ্য সরকার কিছু সুযোগ সুবিধা দেবে। সেই জন্য পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে হবে। তাই এ দিন আবেদন করতে এলাম‘’।
পিপুলবেড়িয়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট ১৪ টি শিবিরে এ দিন ৬২টি আবেদনপত্র জমা পড়েছে। যা এলাকার পরিযায়ী শ্রমিক সংখ্যার তুলনায় অনেকটা কম বলে মানছেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান নিশিকান্ত মেট্যা। কিন্তু এমনটা হল কেন? নিশিকান্ত বলেন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে নথিভুক্তকরণের জন্য শিবিরগুলিতে ৫০০ জনের বেশি এসেছিলেন। এদের মধ্যে যে সব শ্রমিকেরা আধার কার্ড, ভোটার পরিচয়পত্র এবং অন্য তথ্য এনে আবেদন জমা দিয়েছেন, সেগুলি নথিভুক্তকরণের জন্য জমা হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ পরিযায়ী শ্রমিক এখন ভিন্ রাজ্যে বা বিদেশে রয়েছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এসে আবেদনপত্র জমা দিতে চাইলেও নথির অভাবে তাঁরা আবেদনপত্র জমা দিতে পারেননি। ফলে পরিযায়ী শ্রমিকদের আবেদন জমার সংখ্যা আশানুরূপ হয়নি।’’
এদিকে, বছর ঘুরলে লোকসভা ভোট। তার আগে এই প্রকল্পকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে নবান্ন। তাই এবার শিবিরের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখছে নবান্ন। নবান্নের নির্দেশে জেলায় জেলায় আসছেন সিনিয়র আইএএস অফিসারেরাও। তাঁরা শিবির পরিদর্শন করবেন। কাজ ঠিকমতো চলছে কি না দেখে নবান্নে রিপোর্ট দেবেন। তার ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। প্রশাসন সূত্রে খবর, পূর্ব মেদিনীপুরে আসছেন কৃষ্ণ গুপ্ত এবং অবনীন্দ্র সিংহ। তমলুক এবং হলদিয়া মহকুমার দায়িত্বে কৃষ্ণ গুপ্ত। এগরা এবং কাঁথি মহকুমার দায়িত্বে রয়েছেন অবনীন্দ্র সিংহ। এ দিন তমলুক পুরসভা এলাকার দুয়ারে সরকার শিবির পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) দিব্যা মুরুগেশন ও তমলুকের মহকুমাশাসক বুদ্ধদেব পান। তমলুকের পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, ‘‘প্রথম দিনের শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিকদের আবেদন জমা কম হয়েছে। তবে অনেকেই খোঁজখবর নিয়েছেন। অনলাইন পদ্ধতিতে আবেদন জানাতে পারবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy