বাসে চেপে দাসপুর থেকে গুজরােতর পথে পরিযায়ী শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র।
অপেক্ষায় ছিলেন সকলেই। অনেকে কর্মস্থল থেকে ডাকের অপেক্ষায়, অনেকের অপেক্ষা আবার ট্রেনের জন্য।
স্বর্ণশিল্পে এখন কাজের অনিশ্চয়তা অনেকটা কেটেছ। তবে ট্রেন পরিষেবা এখনও পুরোপুরি ঠিক হয়নি। ফলে, বাসে চেপেই ভিন্ রাজ্যের কর্মস্থলে ফিরছেন ঘাটাল ও দাসপুরের স্বর্ণশিল্পীরা। কেউ যাচ্ছেন দিল্লি, মুম্বই। কেউ আবার চেন্নাই, গুজরাত বা বিজয়ওয়াড়ায়। উত্তর থেকে দক্ষিণ— দেশ জুড়েই পরিযায়ীদের নিয়ে ছুটছে বাস।
আনলক-পর্বে জনজীবন ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে শুরু করায় সোনার কাজেও কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল। তখন থেকেই ঘাটাল, দাসপুরের স্বর্ণশিল্পীদের একে একে ভিন্ রাজ্যের কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছিলেন। গোড়ার দিকে এই সংখ্যাটা ছিল নামমাত্র। লকডাউনে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা পরিযায়ী স্বর্ণশিল্পীদের একটা বড় অংশই ছিলেন বাড়িতে। অপেক্ষা করছিলেন অবস্থা স্বাভাবিক হলে কাজে ফেরার।
স্বর্ণশিল্পীরা জানাচ্ছেন, পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলেও সোনার বাজার আগের তুলনায় অনেকটাই চাঙ্গা হয়েছে। সামনেই আবার ধনতেরস, দীপাবলি। ফলে, দিল্লি, মুম্বই, গুজরাত, নেলোর, চেন্নাই— সর্বত্রই সোনার গয়নার চাহিদা বেড়েছে। দোকানগুলিতে কাজের বরাত আসছে। কারিগরদের প্রয়োজন পড়ছে। মালিকদের দিক থেকে ডাক আসছে কর্মস্থলে ফেরার। অনেকে আবার ফেরার টাকাও পাঠিয়ে দিচ্ছেন। দাসপুরের চাঁইপাটের বিজয় সাঁতরা বলছিলেন, “লকডাউনে আমরা বাসে বাড়ি ফিরেছিলাম। তখন কাজে ফেরার অনিশ্চয়তা ছিল। এখন সেই ভয় কেটেছে। একসাথেই সব ফিরছি আবার।” ঘাটালের ইড়পালার যুবক প্রভাস মণ্ডলের কথায়, “কতদিন সোনার বাজার চাঙ্গা থাকবে জানি না। করোনার মাঝেই হাতে কাজ নিয়ে যেতে পারছি, এটাই তো বড় পাওনা।”
তবে কম সংখ্যক ট্রেন চলাচল করায় দীর্ঘ অপেক্ষা করেও টিকিট মিলছে না। তাই ফের বাসে চেপেই ফিরতে শুরু করেছেন স্বর্ণশিল্পীরা। ঘাটালের যুবক পুলক মণ্ডল বলছিলেন, “ট্রেনের থেকে বাস অনেকটা নিরাপদও।” জানা যাচ্ছে, ঘাটাল, দাসপুর থেকে এখন নিয়ম করেই বাস ছাড়ছে। অনেক বাস আবার কোলাঘাট, বাগনান প্রভৃতি জায়গা থেকেও ছাড়ছে।
প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিয়েছে, লকডাউনে কাজ হারিয়ে জেলায় স্বর্ণশিল্পীদের বিকল্প কাজের জন্য নানা পদক্ষেপ করা হয়েছিল। অনেকে একশো দিনের কাজ করেছিলেন। তবে গত ক’মাসে সোনার কাজে অচলাবস্থা অনেকটা কেটেছে। ফলে, ভিন্ রাজ্যের কর্মস্থলে ফেরার ধুম পড়েছে ঘাটাল, দাসপুর থেকে। ঘাটালের মহকুমাশাসক অসীম পাল মানছেন, “সোনার কারিগদরের অনেকেই কাজে ফিরে যাচ্ছেন।” দাসপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি আশিস হুতাইতও বলেন, “ঘাটাল, দাসপুরের যত স্বর্ণশিল্পী চলে এসেছিলেন, তার প্রায় ৭০ শতাংশই ফিরে গিয়েছেন। অনেকে এখন ফিরছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy